স্থপতি উ ছেন
2023-08-24 10:00:05

শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নগর পরিকল্পনাবিদ খুব গুরুত্বপূর্ণ। বেইজিং মহানগরের পুরাতন অঞ্চল সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে নিয়োজিত রয়েছেন এমন একজন পরিকল্পনাবিদ। তার নাম উ ছেন। বর্তমানে তিনি বেইজিংয়ের স্থাপত্য ডিজাইন একাডেমি এবং শৌ কাং গ্রুপের প্রধান স্থপতি।

উ ছেন বেইজিংয়ের একজন বাসিন্দা। তিনি জন্ম নিয়েছেন এবং বড় হয়েছেন এই মহানগরে। তাই ছোটবেলা থেকে এ শহরের প্রতি তাঁর গভীর আবেগ রয়েছে। ত্রিশ বছর আগে তিনি লন্ডনে স্থাপত্য নকশা বিষয়ে লেখাপড়া করেন। বিদেশে লেখাপড়ার সময় বেইজিংয়ের কথা সব সময় মনে ছিল তার।

বেইজিংয়ের সড়ক মোড়, ঘাস, বৃক্ষ ও সুন্দর জায়গাগুলো তিনি স্মরণ করতেন। এগুলো কালের পরিক্রমায় নষ্ট হয়ে গেছে। তাই তিনি ভাবতেন এগুলো কীভাবে উদ্ধার ও পুনরুদ্ধার করা যায়? গত ১০ বছরে তার ভাবনা বাস্তবায়িত হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি তার দল নিয়ে ছিয়ান মেন মহাসড়কের পূর্বাঞ্চলে একটি নদী খনন করেন। এ নদী অনেক পুরোনো। চীনের মিং রাজবংশের সময় এ নদীতে বন্যা হতো। এটার নাম ছিল তোং সান লি হ্য। ২০১৫ সাল থেকে তিনি এ ঐতিহাসিক নদী নিয়ে গবেষণা করেছেন। মারা যাওয়া এ নদীকে ২০১৭ সালে ১ হাজার মিটারে সম্প্রসারিত করা হয় এবং অবশেষে নদীটি বেইজিংবাসীদের সামনে হাজির আবার হয়েছে।



এখানে লিন সিন ইউয়ান নামে একজন প্রবীণ মানুষের কথা উল্লেখ করতে হয়। তিনি এ নদীর তীরে বাস করেন। গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি ক্যামেরার মাধ্যমে একটু একটু করে ছিয়ান মেন অঞ্চলে সংস্কারের বিরল স্মৃতি তৈরি করেছেন। অনেকে নিজের সহপাঠী ও আত্মীয়দের নিয়ে সান লি হ্য অঞ্চলে বেড়াতে আসেন। ছিয়ান মেন অঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের বাসস্থলের ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে খুব গর্বিত বোধ করেন।

গত দশ বছরে শি ছা হাই ঘেরা হ্রদ অঞ্চলে সব বাধা নির্মূল করেছেন উ ছেন। এর ফলে এখানে টানা ৬ কিলোমিটার লম্বা পায়ে হাঁটার পথ তৈরি হয়েছে। বেইজিং নগরীর নির্মাণকাজ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। শৌকাং প্রকল্প নতুন রূপ ধারণ করার সময় উ ছেন খুব আনন্দিত হন। তিনি মনে করেন, এ প্রকল্প পেশাদার স্থপতি হিসাবে তার উদ্ভাবনে যেমন অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে, তেমনি শহর গবেষক হিসাবে তাকে অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আগামী ১০ বছরে চীনে নগরায়নের হার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। গোটা চীনের চার ভাগের তিন ভাগ মানুষ শহরে, বিশেষ করে বড় শহর ও মহানগরে বাস করবে।

উ ছেন বলেন, “গত ৩০ বছরে চীনের অনেক শহরে আমার নকশা বাস্তবায়িত হয়েছে। শ্রেষ্ঠ বড় স্থাপত্য ডিজাইন করা আমার দ্বিতীয় কাজে পরিণত হয়েছে। এ পর্যন্ত এ কাজে ভালো অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। আমি দ্রুত গতির রেলপথের ৭টি স্টেশন ডিজাইন করেছি এবং অনেক শহরে প্রতীকী স্থাপত্য ডিজাইন করেছি। আমার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রধান কাজ হলো মানবজাতির বাসস্থান গঠন করা। সেটি আমার আজীবন লালিত আদর্শ।”