‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ৩২
2023-08-23 18:24:28

                                  

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী।  দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।       

১. দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ছোংছিংয়ে নতুন ক্যাম্পিং পদ্ধতি তরুণদের মুগ্ধ করছে 

 

একটি নতুন ক্যাম্পিং শৈলী, যেখানে ক্যাম্পারদের জন্য আগাম প্রস্তুত করা হয় সমস্ত সরঞ্জাম। এই গ্রীষ্মে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এমন রেডি ক্যাম্পিং।     

সানছুয়ান টাউনে অবস্থিত, ক্যাম্পিং সাইটটি জুন মাসে চালুর পর থেকে তরুণদের ভিড় বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান,এই ক্যাম্পের একটি আবাসন এলাকা এবং একটি ক্যাম্পিং এলাকা আছে। আবার পর্যটকরা যাতে ক্যাম্প সাইটে প্রস্তুত ক্যাম্পিং তাঁবু চেক-ইন করতে পারে বা তাদের নিজস্ব তাবু স্থাপন করতে পারে এমন ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। পর্যটকদের বিভিন্ন অবসর চাহিদা মেটাতে ক্যাম্পিং সাইটে আউটডোর বারবিকিউ এবং কফি শপ রয়েছে। 


অনেকের কাছে ক্যাম্পিং সরঞ্জাম স্থাপনের প্রক্রিয়াটি কঠিন মনে হয়। তাই বিনোদনপ্রেমীরা অন্বেষণ করার পরিবর্তে রেডি ক্যাম্পিংয়ের অভিজ্ঞতা নিতে চান বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।  

 

নতুন ক্যাম্পিং স্টাইলে সমস্ত সরঞ্জাম এবং প্রয়োজনীয় আইটেম আগে থেকে সেট করা থাকে। তাই তরুণদের মধ্যে আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এটি।

   

 

এই নতুন ক্যাম্পিং শৈলী চালুর পর থেকে গত ২ থেকে ৩ মাসে তরুণ পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া মিলেছে বলে জানান ছোংছিংয়ের একটি ক্যাম্পিং সাইটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উ খেচিয়ে। 

 

"সাপ্তাহিক ছুটির দিনে, আমাদের ক্যাম্পিং সাইটটি সর্বদা পূর্ণ থাকে। আমরা প্রতিদিন গড়ে ১২০ জনেরও বেশি পর্যটক পাই।‘’

 

যারা কোলাহল মুক্ত জায়গায় ঘুরতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা খুব উপযুক্ত বলে জানান ক্যাম্পে আসা এক তরুণ পর্যটক। 


"আমাদের কিছু প্রস্তুত করতে হয় না। সমস্ত খাবার ক্যাম্পিং সাইটের কর্মীরা প্রস্তুত করে। আমি এখানে এলে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমি মনে করি,  আমার মতো যারা যারা অলস-স্টাইল ক্যাম্পিং পছন্দ করেন এটি তাদের জন্য উপযুক্ত।‘’ 

 

স্থানীয় কর্তৃপক্ষসূত্রে জানা যায়, এই বছরের শুরু থেকে, ছোংছিং প্রায় ২৪ লাখ ক্যাম্পার পেয়েছে, পর্যটন রাজস্ব ১ দশমিক ৩৯৮ বিলিয়ন ইউয়ান বা প্রায় ১৯৩ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ইউএস ডলারে পৌঁছেছে, যেখানে উভয় রেকর্ডই সর্বোচ্চ।

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদকঃ মাহমুদ হাশিম 

২. চীনের সিনচিয়াং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টার্ন ডাক্তার বাংলাদেশি রেজাউল হোসেন চৌধুরী

 

চীনের সিনচিয়াং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে মানুষের সেবা করতে চান রেজাউল হোসেন চৌধুরী। তিনি চীনের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেন।

 

সিনচিয়াং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে চীন আসেন রেজাউল হোসেন চৌধুরী।

 

বর্তমানে তিনি একজন ইন্টার্ন ডাক্তার হিসেবে কাজ করছেন। ভবিষ্যতে তিনি একজন ভালো হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হতে চান।

 

‘গত ৫ বছর আমি শুধু জ্ঞান অর্জন করেছি। আর এখন আমি সেই জ্ঞান অনুশিলন করে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। আমি প্রতিদিন হাসপাতালে যাই। রোগীদের সঙ্গে কথা বলি। আমি আমার শিক্ষককে অনুসরণ করি। প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখি।  

আমি যখন ২০১৮ তে সিনচিয়াংয়ে আসি তখন এতো উন্নত ছিলো না এখনকার মতো। উরুমুছির কথা যদি বলি বর্তমানে চীনের উন্নত শহরে পরিণত হয়েছে এটি।’

 

 

 

শিক্ষা, অবকাঠামো এবং অর্থনীতির জন্য চীন বিশ্বের অন্যতম একটি দেশ বলে মনে করেন তিনি।

 

‘চীনের বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি সিনচিয়াং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। উন্নত প্রযুক্তি ও মেডিকেল সরঞ্জামে পরিপূর্ণ এই হাসপাতাল। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। পড়াশোনার মানও খুব ভালো। আমি চীনে আমার স্বপ্ন পূরণ করতে এসছি। পড়াশোনা শেষ করে আমি বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই। এখানকার অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।’

 

সেখানে চীনাসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে রেজাউলের। শুধু পড়াশোনাই নয়, চীনের প্রতি তৈরি হয়েছে তার গভীর ভালোবাসা।

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

৩. চারটি অনলাইন মেলা থেকে চাকরি পেল ৬০ লাখের বেশি চাকরিপ্রার্থী 

 

চীনে চারটি অনলাইন মেলার মধ্য দিয়ে ৬০ লাখের বেশি চাকরি পেলো স্নাতক পাশ শিক্ষার্থী। দেশের ১০০ দিনের নিয়োগ অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি চারটি বিশেষ অনলাইন মেলার আয়োজন করা হয়।

 

চীনের মানবসম্পদ ও সামাজিক নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশটিতে চলছে এক শ’ দিনের বিশেষ নিয়োগ অভিযান। 

 

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ করা প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ করে দিতে গেল ৬ জুন থেকে আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত এক শ’ দিনের অভিযানের অংশ হিসেবে এই অনলাইন মেলার আয়োজন করা হয়। 

 

এক কোটিরও বেশি মানুষকে চাকরি দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত এই অভিযানের আওতায় আয়োজিত এ চারটি অনলাইন চাকরি মেলা থেকে এরইমধ্যে ৬০ লাখেরও বেশি প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন।

 

মেলাগুলোকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় ফার্মাসিউটিক্যালস, তথ্যপ্রযুক্তি, উন্নত উৎপাদন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মতো মূল শিল্পগুলোর প্রতি।

মানবিক বিভাগের স্নাতকদের জন্য ছিলো বিশেষ ব্যবস্থা। বিশেষ সেশনের মাধ্যমে ২৬৪টি নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন খাতে প্রায় আড়াই হাজার চাকরির সুযোগ করে দেয় মানবিক বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের।

 

এর আগে এক পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়, চীন এই বছর রেকর্ড ১১ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন নতুন কলেজ স্নাতক বের হওয়ার কথা রয়েছে।

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদকঃ শিহাবুর রহমান

 

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই। পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভকামনা সবার জন্য।

 

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

অডিও সম্পাদনা:  রফিক বিপুল

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী