রঙিন মাছের দুনিয়া | শেকড়ের গল্প | পর্ব ৩২
2023-08-23 18:50:01

                 

                             

এবারের পর্বে রয়েছে

১. রঙিন মাছের চাহিদা বাড়ছে চীনে

২. দুযোর্গেও থেমে নেই ফসল উৎপাদন

বিশ্ববাসীকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে একটু একটু করে ভূমিকা রাখছে চীনের অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। পেছনে পড়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলো মুক্তি পাচ্ছে দারিদ্রের শেকল থেকে। দিনশেষে স্বল্প পরিসরের উদ্যোগগুলো দেখছে সফলতার মুখ, হয়ে উঠছে সামগ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুসঙ্গ।

কিন্তু কম সময়ে এত বড় সফলতার গল্প কীভাবে সম্ভব করলো চীন দেশের কৃষকরা? সে গল্পই আপনারা জানতে পারবেন “শেকড়ের গল্প” অনুষ্ঠানে।

 

১. রঙিন মাছের চাহিদা বাড়ছে চীনে

বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয় রঙিন মাছ। কাঁচের ভেতরে এই মাছগুলো এক অন্যরকম ভালোলাগা তৈরী করে। বিশেষ করে শিশুরা বেশ পছন্দ করে এই মাছগুলো। চীনে ‘কই’ নামে এক ধরনের রঙিন মাছ উৎপাদন করা হয়, যার বিপুল চাহিদা রয়েছে । আর এ ধরনের মাছ চাষ করে ভালো লাভবান হচ্ছেন খামারীরা। 

এমন রংয়ের মাছ যে কারো নজর কেড়ে নেয়। লাল সাদার মিশ্রণ মাছগুলোকে এমন দারুণ রূপ দিয়েছে, ইচ্ছে হবে দীর্ঘ সময় তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি।

অরনামেন্টাল ফিশ বা আলংকারিক মাছ হিসেবে এগুলো যে কোন ভবন কিংবা পার্কের সৌন্দর্য বর্ধন করে। স্বচ্ছ পানিতে অনন্য পরিবেশ তৈরি করে মাছগুলো।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো চীনেও এই আলংকারিক মাছের চাষ করা হয়। ছোট বড় বিভিন্ন আকৃতির এই মাছগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বিশ্বজুড়ে। এই মাছগুলো কার্প পরিবারভুক্ত এবং চীনে এগুলো  ‘কই’ হিসেবে পরিচিত। প্রিয়জনদের উপহার হিসেবেও পাঠানো হয় এই মাছ, যা সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধির প্রতীক হিসেবে বিশ্বাস করেন চীনারা।

দক্ষিণ চীনের কুয়াংতোং প্রদেশ এই মাছ উৎপাদনের অন্যতম বড় জায়গা। এখানকার খামারীরা এখন বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন দেশ-বিদেশের গ্রাহকদের পছন্দের মাছ প্রস্তুত করতে।

 ‘কই’ মাছের একজন খামারী উ চিমিং বলেন, এ বছর ব্যয়বহুল মাছগুলোও বেস্ট সেলার তালিকায় রয়েছে।

                              ছবি: উ চিমিং, মাছের খামারী

 “ভালো মানের মাছগুলোর দাম ওঠানামা করে ৫০ থেকে ১০০ ইউয়ান পর্যন্ত। আর হ্যাচলিন নামের এক ধরনের মাছ রয়েছে যেগুলোর দাম ১০০ ইউয়ানের বেশি। এরপরও এর বেশ চাহিদা রয়েছে।“ 

হুয়াং চেংফেং নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, গেল বছরের চেয়ে এ বছর মাছের দাম বেশি এরপরও প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে এই মাছের।

 

মাছের একজন ক্রেতা সং চিংতং মনে করেন, এই মাছগুলোর দিকে তাকালেই একরকম প্রশান্তি লাগে। আর এ কারণে প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে। এগুলো কেনাবেঁচা করে ভালো লাভবান হওয়া যায়।

 ‘আমার তিন থেকে চারজন বন্ধু রয়েছে, তাদের জন্য রঙিন মাছ কিনব। নিজের জন্যও কিনবো। প্রথমে আমাদের ইচ্ছে ছিল সস্তায় মাছ কিনব। তবে দামী মাছগুলোই আমাদের পছন্দ হচ্ছে। সেগুলো অনেক সুন্দর। তাই এত কিছু চিন্তা না করে শখ পূরণ করার জন্য দামী মাছগুলোই কিনেছি। এগুলো যখন পানিতে ঘুরে বেড়াবে তখন এক অন্যরকম ভালোলাগা অনুভব করতে পারবেন।'

প্রতিবেদন: এইচআরএস অভি

সম্পাদনা:  মাহমুদ হাশিম

২. দুযোর্গেও থেমে নেই ফসল উৎপাদন

সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যহত হয় ফসলের উৎপাদন। বিশেষ করে বন্যা ও খরায় ফলন কয়েকগুণ কমে যায়। সম্প্রতি টাইফুন ডকসুরির প্রভাবে উত্তর এবং উত্তর পূর্ব চীনের অনেক জায়গায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা ও ভূমিধ্বস দেখা দিয়েছে। কিন্তু এরফলে শরৎকালীন ফসলের যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে চীন সরকার।

কৃষিক্ষেত থেকে চলছে বন্যার পানি সরানোর কাজ। কাদা সরানো হচ্ছে। সম্প্রতি টাইফুন ডকসুরির প্রভাবে সৃষ্ট ভারী বৃষ্টিতে উত্তর ও উত্তর পূর্ব চীনের বিভিন্ন স্থানে বন্যা, ভূমিধ্বস দেখা দিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রচুর। অতিবৃষ্টিতে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে ক্ষেতে। কিন্তু এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে শরতকালীন ফসলের যেন ক্ষতি না হয় সেজন্য চীনের কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকার সমন্বিত পরিকল্পনায় জরুরিভিত্তিতে কাজ করছে। আগামিতেও যেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসলের ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। হ্যনান প্রদেশের সিনসিয়াং সিটিতে চলছে পানি সরানোর কাজ।

তবে ভয়াবহ বন্যা হলেও দেশের বেশিরভাগ এলাকায় শরতকালীন শস্যের ফলনের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।

চিয়াংসি প্রদেশের চিয়ান সিটির  ইয়ংফেং কাউন্টিতে ধানক্ষেতে কাজ করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। ১৫০টি প্ল্যান্ট প্রটেকশন ড্রোন নিযুক্ত করা হয়েছে। ১৬টি টাস্কফোর্স সংগঠিত করা হয়েছে। ২৬ হাজার ৮০০ হেকটর জমির ধানের ফসলের রোগ ও কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে। ড্রোনগুলো কীটনাশক ছিটানোর কাজ করছে।

হুবেই প্রদেশের চাওইয়াং সিটির কৃষিক্ষেত্রগুলোতে ভুট্টার চাষ চলছে। ড্রোনগুলো এখানে কাজ করছে। কৃষিবিদরা ভুট্টার ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছেন।চাওইয়াং হলো হুবেই প্রদেশের ৪৭টি শস্য উৎপাদনকারী অঞ্চলের অন্যতম।


পূর্ব চীনের শানতোং প্রদেশের এক লাখ ৩৪ হাজার হেকটর জমিতে সয়াবিন ও ভুট্টা চাষ হচ্ছে যা গত বছরের চেয়ে ৩৩ হাজার ৫০০ হেকটর বেশি।

চিনিং সিটির চিনসিয়াং কাউন্টির কৃষকরা আগে ভুট্টা পরে সয়াবিন বোনার কারণে প্রতি হেক্টরে ৮০০০ ইউয়ান বেশি আয় করতে পারবেন।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে শরতকালীন ফসলের বাম্পার ফলন নিশ্চিত করে চীনের কৃষিবিশেষজ্ঞ এবং কৃষকরা একসঙ্গে কাজ করছেন।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

এটি মূলত চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি বাংলার বাংলাদেশ ব্যুরোর কৃষি বিষয়ক সাপ্তাহিক রেডিও অনুষ্ঠান। যা সঞ্চালনা করছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট এইচ আর এস অভি।

এ অনুষ্ঠানটি আপনারা শুনতে পাবেন বাংলাদেশের রেডিও স্টেশন রেডিও টুডেতে।

শুনতে থাকুন শেকড়ের গল্পের নিত্য নতুন পর্ব । যেখানে খুঁজে পাবেন সফলতা আর সম্ভাবনার নানা দিক। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হোক আপনার দিন বদলের গল্প।

 

পরিকল্পনা ও প্রযোজনা: এইচআরএস অভি

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল 

সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী