ফুচিয়ানের আঙুর গ্রাম
2023-08-22 17:15:56

আঙুর চাষের আওতাধীন জমির আয়তনের দিক থেকে উত্তর ফুচিয়ানে শীর্ষ গ্রাম — প্রদেশের নানপিং শহরের চিয়ানইয়াং এলাকার শুইচি শহরের রেনশান গ্রাম বর্তমানে আঙুর তোলার সময়ে প্রবেশ করেছে। গত ২০ বছরে রেনশানের আঙুর কখনও বিক্রির অযোগ্য ছিল না। এখানকার আঙুরের ৩০ শতাংশই জেচিয়াং প্রদেশের লিশুই শহরে বিক্রি হয়।

সন্ধ্যার সময় লিশুই শহরের একটি তাজা ফলের সুপারমার্কেটের মালিক ছেন শিলিন তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে ২০টির বেশি ছোট ট্রাক চালিয়ে রেনশান গ্রামে আসেন। পরের দিন ভোরে তারা টলটলে আঙুরগুলো লিশুই’র বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করবেন।

রেনশান শব্দের অর্থ ভালো। এ গ্রামটি এক সময় ফুচিয়ানের প্রাদেশিক পর্যায়ের দরিদ্র গ্রাম ছিল। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর গ্রামবাসীদের আয় বাড়ানোর জন্য গ্রামটি পরীক্ষামূলকভাবে কলা, জুঁই ফুল ও প্লুরোটাস ডরিনজিআই’র (Pleurotus eryngii) মতো ফসল চাষ করেছিল। কিন্তু সেটা খুব ফলদায়ক হয় না; এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে সেটা ব্যর্থ ছিল।

বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে ২০০৩ সালে দ্বিতীয় পুরস্কার জয়ী শিয়ে ফুসিন জাপানের কিয়োহো আঙ্গুর রেনশান গ্রামে আমদানি করেন। সে বছর ২৫টি পরিবার প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে আঙুর চাষ করেছিলে। সে আঙুর বাজারে জনপ্রিয়তা পায়। এরপর কিয়োহো আঙ্গুর চাষে গ্রামবাসীদের উৎসাহ বছরে বছরে বাড়তে থাকে। বর্তমানে ইস্পাতের কাঠামো দিয়ে গড়া আঙুরের গ্রিনহাউসের আয়তন ৮০ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে।

২০০৬ সালে রেনশান গ্রামে শানসি আঙুর পেশাদার সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে গ্রামে ৮৫ শতাংশের বেশি কৃষি পরিবার আঙুর চাষ করে। গ্রামবাসীদের আয়ের ৬০ শতাংশের বেশি আসে আঙুর থেকে। প্রতি বছর আঙুর থেকে এ গ্রামের প্রকৃত লাভ দাঁড়ায় কোটির ইউয়ানের বেশি।

 ‘রেনশান আঙুর’ ব্র্যান্ডের নাম আরও শক্তিশালী হয়েছে। ২০১০ সালে জাতীয় পরিবেশ-বান্ধব খাদ্য ব্র্যান্ডের মর্যাদা অর্জন করে। ২০১৭ সালে সিয়ামেনে অনুষ্ঠিত ব্রিকস সম্মেলনে বিশেষ ফল হিসাবে এ আঙুর সরবরাহ করা হয় অতিথিদের। শূন্য থেকে শুরু করে ছোট থেকে বড় এবং দুর্বল থেকে উন্নত হয়েছে রেনশান গ্রামের আঙুর শিল্প। এক একটি আঙুর রেনশান গ্রামের মর্যাদায় ‘প্রাদেশিক পর্যায়ের উত্কৃষ্ট সুন্দর দৃষ্টান্তমূলক গ্রাম’ এবং ‘প্রাদেশিক পর্যায়ের গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের পরীক্ষামূলক গ্রাম’ ইত্যাদি সুনাম যুক্ত করেছে।

২০১২ সাল থেকে রেনশান গ্রামের সমবায় সমিতি আন্তঃগ্রাম ও যৌথ উন্নয়ন রূপ কার্যকর শুরু করে। আশপাশের ৩টি গ্রাম এবং শহরের ১৭টি প্রশাসনিক গ্রামে আঙুর চাষের আওতাধীন জমির আয়তন বর্তমানে ২১৩ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে। রেনশান গ্রাম আবার ‘আঙুর চাষের আওতাধীন জমির আয়তনের দিক থেকে উত্তর ফুচিয়ানের শীর্ষ গ্রামে’ পরিণত হয়েছে। (প্রেমা/রহমান)