একদিন পর অর্থাত্ ২২ অগাস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হবে ব্রিক্সের শীর্ষ সম্মেলন। তখন ব্রিক্স সদস্য দেশের নেতারা অনলাইন ও অফলাইনে এ সম্মেলনে যোগ দেবেন। মহামারির পর এটি ব্রিক্সের প্রথম সরাসরি সম্মেলন। গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী এ সম্মেলন অবশ্যই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
ব্রিক্সকে সবসময় সহনশীল একটি সংস্থা হিসেবে মনে করা হয়। ব্রিক্স আন্তর্জাতিক সমাজের সঙ্গে ব্যাপকভাবে সংলাপ করতে চায়। তাই এবার সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় হবে- নতুন সদস্যের যোগদান।
চীন, রাশিয়া, ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে গঠিত হয় ব্রিক্স জোট। এর লোকসংখ্যা বিশ্বের ৪১.৯৩ শতাংশ এবং বিশ্বের জিডিপির ২৫.২৪ শতাংশ এবং বাণিজ্যে ১৭.৯ শতাংশ অবদান রাখে এ সংস্থাটি। ২০০৬ সালে ব্রিক্স দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় আর তখন থেকে শুরু হয় ব্রিক্স দেশের সহযোগিতা।
নবোদিত বাজার দেশও উন্নয়নশীল দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্রিক্স দেশ বহুপক্ষবাদ রক্ষা করে ও বৈশ্বিক প্রশাসন ব্যবস্থার সংস্কার এগিয়ে নিয়ে যায়। আন্তর্জাতিক বিষয়ে ব্রিক্স একটি ইতিবাচক, স্থিতিশীল ও গঠনমূলক শক্তিতে পরিণত হয়। ব্রিক্স সহযোগিতা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক সমাজে ব্যাপকভাবে স্বীকৃতি পায় এবং আরও বেশি দেশ এতে যোগ দিতে চায়।
দক্ষিণ আফ্রিকা ব্রিক্স বিষয়ক সমন্বয়কারী সম্প্রতি জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত ৪০টিরও বেশ দিশ ব্রিক্সে যোগ দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ, মিশর, ইরান, সৌদি আরব ও নাইজেরিয়াসহ এশিয়া ও আফ্রিকা সহ ২২ দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জমা দিয়েছে। যা ব্রিক্স জোটের আন্তর্জাতিক প্রভাবের একটি প্রতিফলন।
তাহলে কেন সবাই এ সংস্থায় যোগ দিতে চায়? বর্তমানে বিশ্বের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শৃঙ্খলায় বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বাণিজ্য যুদ্ধ, মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বেশ প্রভাব ফেলেছে। জ্বালানি, খাদ্য ও জলবায়ুসহ নানা বৈশ্বিক প্রশাসন সমস্যা ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। এ অবস্থায় আরও বেশি নবোদিত বাজার দেশ ও উন্নয়নশীল দেশ ব্রিক্স সহযোগিতা সংস্থায় যোগ দিতে চায়। ব্রিক্সের মনোভাব হচ্ছে উন্মুক্ত ও সহনশীল, সহযোগিতা ও উভয়ের কল্যাণ। এমন মনোভাব আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে। যেমন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ব্রিক্স ব্যবস্থা নবোদিত বাজার দেশও উন্নয়নশীল দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সহযোগিতার প্ল্যাটফর্ম, যা যুগের উন্নয়ন প্রবণতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, অধিকাংশ দেশের ইচ্ছার প্রতিফলন এবং সঠিক দিকে এগিয়ে যাবার পথের প্রতিনিধিত্ব করে।
নতুন সদস্যের যোগদান ব্রিক্স সহযোগিতায় নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে এবং ব্রিক্সের প্রভাব আরও বৃদ্ধি করবে। আরও বেশি নবোদিত বাজার দেশ ও উন্নয়নশীল দেশ ব্রিক্সের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত হবার সঙ্গে সঙ্গে সহযোগিতা আরও ফলপ্রসূ হবে এবং বিশ্ব প্রশাসন ব্যবস্থার সংস্কার এগিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
(শিশির/তৌহিদ)