আগস্ট ১৮: চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির পলিট ব্যুরো গতকাল (বৃহস্পতিবার) বন্যা প্রতিরোধ, ত্রাণ ও দুর্যোগোত্তর পুনর্বাসন-সম্পর্কিত এক কর্মসভা আয়োজন করে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এতে সভাপতিত্ব করেন এবং দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন।
কর্মসভায় বলা হয়, জুলাইয়ের শেষ দিক এবং আগস্টের প্রথম দিক বন্যা প্রতিরোধের নির্ণায়ক সময়। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের দৃঢ় নেতৃত্বে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন স্তরের কমিটি ও সরকার দায়িত্ব পালন জোরদার করেছে। জাতীয় বন্যা প্রতিরোধ দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও সংস্থা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এ সংক্রান্ত দায়িত্ব সমন্বয় করেছে। জাতীয় অগ্নি ও উদ্ধার বাহিনী সামনের সারিতে থেকে উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালিয়েছে। চীনের গণমুক্তি ফৌজ ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী জরুরিভিত্তিতে সহযোগিতা করেছে। তৃণমূলের জনসাধারণ নৌকায় করে বন্যা প্রতিরোধ ও ত্রাণ এবং গৃহ রক্ষার দৃঢ় নিরাপত্তা লাইন গড়ে তুলেছে, যার ফলে বন্যা প্রতিরোধ লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
কর্মসভায় বলা হয়, চীনে এখনও বন্যা প্রাদুর্ভাবের ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। গোটা চীনের বেশ কয়েকটি স্থানে প্রবল বৃষ্টিপাত, বন্যা ও টাইফুনসহ নানা দুর্যোগ আঘাত হেনেছে। কিছু কিছু নদীর অববাহিকা অঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। উত্তর চীন ও উত্তর-পূর্ব চীনের পাহাড়ি অঞ্চলে মাটিতে পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণে ভূমিধস ও বন্যাসহ নানা দুর্যোগের ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে, যে কারণে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বন্যা প্রতিরোধ ও ত্রাণসাহায্যের ওপর মনোযোগ দিয়ে বিভিন্ন অঞ্চল ও বিভাগকে মানুষের জানমালের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
কর্মসভায় বলা হয়, সঠিকভাবে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আবহাওয়া সতর্কতা ও দুর্যোগ পূর্বাভাস সমন্বিতভাবে প্রকাশ করতে হবে। আকস্মিক দুর্যোগ পুর্বাভাস ব্যবস্থা গঠন এবং দুর্যোগ লক্ষ্য করে পুর্বাভাস করতে হবে। প্রতিরোধের ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। নদীর অববাহিকা অঞ্চলগুলোতে প্রবল বন্যা প্রতিরোধের কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে। হ্রদ, নদনদীর অববাহিকা অঞ্চলে বন্যা প্রতিরোধ কাজের মধ্যে ভাল সমন্বয় আনতে হবে। বিপজ্জনক স্থান থেকে জরুরিভিত্তিতে মানুষজন সরিয়ে নিতে হবে।
কর্মসভায় আরও বলা হয়, যথাসাধ্য ত্রাণ ও সাহায্যকাজ চালাতে হবে। চীনের জাতীয় অগ্নি ও উদ্ধার বাহিনীকে সামনের সারিতে থেকে এবং চীনের গণমুক্তি ফৌজ ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক উদ্ধারকারী দলসহ নানা শক্তি প্রয়োগ করে কার্যকরভাবে উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালাতে হবে। এছাড়া বিজ্ঞানভিত্তিক ত্রাণকাজ চালাতে হবে, বাঁধগুলোকে সুসংবদ্ধ করতে হবে, আটকে পড়া লোকদের উদ্ধার করতে হবে এবং নিঁখোজ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে হবে, যাতে হতাহতের সংখ্যা সর্বনিম্নে পর্যায়ে রাখা যায়। দুর্যোগকবলিত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া লোকজনের জীবন-যাত্রা নিশ্চিত করতে হবে, পুনর্বাসন অঞ্চলে জীবাণুনাশ এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ও মহামারী প্রতিরোধকাজ জোরদার করতে হবে, স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীলতা রাখতে হবে, দ্রুত গতিতে দুর্গত অঞ্চলে উৎপাদন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে এবং জীবন-যাত্রার সুশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করতে হবে।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি এবং বিভিন্ন স্তরের সরকারের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে কর্মসভায় বলা হয়, সিপিসি’র সব কমিটি ও সরকারের উচিত নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করা। বিভিন্ন স্তরের ক্যাডারদেরকে, বিশেষ করে প্রধান কর্মকর্তাদেরকে সামনের সারিতে থেকে নির্দেশনা দিতে হবে। বিভিন্ন অঞ্চল, বিভাগ ও সংস্থাকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। অগ্নি ও উদ্ধার বাহিনী, গণমুক্তি ফৌজ ও সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীকে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে চলতে হবে। সিপিসি’র তৃণমূল-স্তরের কমিটি ও পার্টির সদস্যদেরকে দুর্গের ভূমিকা এবং অগ্রগামী রোল মডেল হিসেবে ভূমিকা পালন করতে হবে। তাঁদেরকে বন্যা প্রতিরোধ ও ত্রাণসাহায্যের ক্ষেত্রে সামনের সারিতে থেকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্ভব হয়।
জানা গেছে, কর্মসভায় আরও কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
(রুবি/রহমান)