তিব্বতের পবিত্র রাস্তা ‘বারখোর রাস্তা’
2023-08-18 16:34:47

এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও তিব্বতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর তিব্বত সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা তিব্বত নিয়ে কথা বলব।

 

বারখোর রাস্তা নামের উত্পত্তি

বারখোর স্ট্রিট (Barkhor Street)-এর ১৩০০ বছরে বেশি ইতিহাস রয়েছে। সপ্তম শতাব্দীতে, যখন সোংটসান গাম্পো জোখাং মন্দির নির্মাণের আদেশ দেন, একই সময়ে তিনি হ্রদের ধারে চারটি প্রাসাদ নির্মাণের আদেশও দেন। জোখাং মন্দিরের নির্মাণকাজ ব্যক্তিগতভাবে তদারকি করেন তিনি। চারটি প্রাসাদ বার্খোর স্ট্রিটের প্রাচীনতম নিদর্শন। জোখাং মন্দিরের চারপাশে একটি ছোট পথ তৈরি করা হয়। এটি বারখোর স্ট্রিটের আসল অংশ, যাকে তিব্বতিরা ‘পবিত্র রাস্তা’ বলে থাকে। পরবর্তীতে, তীর্থযাত্রী ও ব্যবসায়ীদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য, এর চারপাশে পর্যায়ক্রমে ১৮টি পারিবারিক ধাঁচের ভবন নির্মাণ করা হয়। ১৫ শতাব্দীর পরে এখানে ভিক্ষুদের আস্তানা, ধর্মীয় বিদ্যালয়, ছোট মন্দির, দোকান, হোটেল, হস্তশিল্পের কর্মশালা ইত্যাদি গড়ে ওঠে।

 

বারখোর রাস্তার পরিচয়

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, সামগ্রিক প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠনের পরে, লাসা শহরে বারখোর রাস্তা সম্প্রসারিত হয়েছে। এটি জোখাং মন্দিরের চারপাশে পুরানো রাস্তাকে ঘিরেই হয়েছে। সেই সঙ্গে, বারখোর পূর্ব রাস্তা, বারখোর পশ্চিম রাস্তা, বারখোর দক্ষিণ রাস্তা এবং বারখোর উত্তর রাস্তাকে নিয়ে গঠিত হয়েছে রাস্তার রিং। এর দৈর্ঘ্য ১০০০ মিটারের বেশি। রাস্তায় মোট ৩৫টি উপরাস্তা ও গলি রয়েছে। বারখোর রাস্তার বিভিন্ন স্থাপত্যের রঙ মূলত সাদা। দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি ছোট হলুদ দোতলা ভবন বিশেষভাবে নজরকাড়া।  কথিত আছে যে, এই ছোট ভবনটি  ষষ্ঠ দালাই লামা সাংইয়াং গ্যাতসোর বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা।

 

বারখোর রাস্তায় ভ্রমণ

বারখোর রাস্তা পরিদর্শন করার সময়, ঘড়ির কাঁটার দিক অনুসরণ করা প্রয়োজন। এখানে ধার্মিক তিব্বতিদের প্রার্থনার চাকা ঘুরিয়ে চলতে বা রাস্তায় লম্বা হয়ে শুয়ে প্রণাম করতে দেখা যায়। রাস্তার দুই পাশে রয়েছে  জাতিগত হস্তশিল্প ও স্যুভেনির পশরা। কেনাকাটার সময় আপনি দরকষাকষি করতে পারেন। বারখোর রাস্তার এক কোণে একটি দুই তলার ‘ম্যাগিঅ্যামি’ বার আছে। বারের দই কেক সুস্বাদু। রাতের বারখোর রাস্তা বেশ শান্ত। রাস্তার কোণে  লম্বা ধূপ বার্নারে পাইন শাখার পোড়া গন্ধ পাওয়া যায়।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn  আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)