চীনা কণ্ঠশিল্পী থেংকরি
2023-08-17 10:00:22


কণ্ঠশিল্পীর সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম থেংকরি। তার গান সুন্দরভাবে মঙ্গোলিয়ান সংগীতের সৌন্দর্য বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছে। তাকে মঙ্গোলিয়ান সংগীতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও প্রতিনিধিত্বকারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তার চীনা সংগীত খাতে ‘জাতীয় ভাণ্ডারের’ খ্যাতিও আছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা একসঙ্গে তার কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন থেংকরির একটি সুন্দর মঙ্গোলিয়ান ভাষার গান ‘বন্য রাজহাঁস’।গান ১

 

থেংকরি ১৯৬০ সালে চীনের ইনার-মঙ্গোলিয়ার ওথোকে জন্মগ্রহণ করেন। তার নামের অর্থ মঙ্গোলীয় ভাষায় ‘নীল আকাশ’। চীনে মঙ্গোলীয় জাতি নাচ-গানের জাতি হিসেবে পরিচিত। তাদের প্রায় সবাই ভালো গান গাইতে ও নাচতে পারে। থেংকরির বাবা মা স্থানীয় বিখ্যাত লোকশিল্পী। তাদের প্রভাবে তিনি ছোটবেলা থেকেই গান গাইতে খুব পছন্দ করেন। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় তিনি একটি আর্ট স্কুলে ভর্তি হয়ে চীনের ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র ‘সান সিয়ান’ বাজানো শিখেন। এর মাধ্যমে থেংকরি জানতে পারেন যে, তার সংগীত প্রতিভা—সুর রচনা করার দক্ষতা আছে। সংগীত নিয়ে অধ্যয়ন করার জন্য পরে তিনি থিয়ানচিন সংগীত অ্যাকাডমিতে ভর্তি হন, সেখানে সুর রচনার পাশাপাশি তিনি গান গাওয়া শিখেন। সেসময়ই তিনি সংগীত নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেন।গান ২

 

থিয়ানচিন সংগীত অ্যাকাডমি থেকে স্নাতক হওয়ার পর থেংকরি চীনের সেন্ট্রাল এথনিক গান ও ডান্স এনসেম্বলে যোগ করেন। তবে এই কাজ তিনি পছন্দ করেন না। ১৯৮৬ সালে তিনি চীনের তরুণ গায়ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এতে তিনি নিজ রচিত গান ‘মঙ্গোলিয়ান মানুষ’ গেয়েছেন। প্রতিযোগিতায় পুরস্কার না পেলেও তার পারফরমেন্স ও গান দর্শক পছন্দ করে। যা তাকে গান রচনার উত্সাহ দেয়। পরে ভালো গান রচনার জন্য থেংকরি নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কু ইউয়ান জেলায় এক বছর থেকে স্থানীয় লোকসংগীত সংগ্রহ করেন। ১৯৮৯ সালে থেংকরি ‘জাতীয় গায়ক প্রতিযোগিতায়’ অংশ নেন এবং চ্যাম্পিয়ন হন। তার সংগীত জীবনও দ্রুত উন্নত হতে শুরু করে।গান ৩

 

১৯৯৩ সালে থেংকরি ও কিছু মঙ্গোলিয়ান বন্ধুর সঙ্গে ‘ছাং লাং’ বা ‘কালো নেকড়ে’ ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তারা মঙ্গোলিয়ান জাতির সংগীত আধুনিক উপায় পরিবেশন করেন, দর্শকদেরকে নতুন সংগীত অভিজ্ঞতা এনে দেয়। তাদের প্রভাবে চীনে আরো বেশি মানুষ মঙ্গোলিয়ান সংগীত পছন্দ করেছে। থেংকরিও গণপ্রজাতন্ত্রী মঙ্গোলিয়ার সবচেয়ে অসামান্য ব্যক্তির জন্য ‘গোল্ডেন ফিনিক্স পুরস্কার’ পেয়েছেন। বন্ধুরা, এখন শুনুন থেংকরি’র রচিত ও গাওয়া একটি সুন্দর গান ‘পিতা ও আমি’।গান ৪

 

১৯৯৭ সালে থেংকরি তার নতুন ব্যক্তিগত অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামে তার রচিত গান ‘স্বর্গ’ মুক্তির পরই খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। গানে ইনার মঙ্গোলিয়ার তৃণভূমির সুন্দর দৃশ্য তুলে ধরা হয় এবং তৃণভূমির প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশিত হয়। মঙ্গোলিয়ান সংগীতের মনোহরণ, থেকারের সংগীতের বৈশিষ্ট্য এবং জন্মস্থানের প্রতি গভীর আবেগ এগানে সুন্দরভাবে মিশে গেছে, যে গানটি শুনে মানুষ বেশ মুগ্ধ হয়। এই গান পরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংগীত পুরস্কার পেয়েছে, যা থেংকরির সবচেয়ে পরিচিত ও জনপ্রিয় গান হয়েছে। বন্ধুরা, এখন থেংকরির সুন্দর গান ‘স্বর্গ’ শুনুন।গান ৫

 

বন্ধুরা, এবার আমরা শুনবো থেংকরি গাওয়া একটি সুন্দর গান ‘পিতার তৃণভূমি ও মাতার নদী’। যাযাবর জাতি হিসেবে মঙ্গোলিয়ান মানুষের জন্য তৃণভূমিই হলো বাসস্থান; যেখানে নদী আছে, সেখানেই তাদের সমৃদ্ধ জীবন। তৃণভূমি ও নদী যেন তাদের অভিভাবক। গানের মাধ্যমে তিনি জন্মস্থানের প্রতি গভীর ভালোবাসা প্রকাশ করেন। বন্ধুরা, এখন গানটি শুনুন।গান ৬

 

২০০৩ সালে থেংকরি ও ‘ছাং লাং’ ব্যান্ড মঙ্গোলিয়ার উলানবাটারে কনসার্ট আয়োজন করেছেন। মঙ্গোলিয়ান সংস্কৃতি প্রচারের অসাধারণ অবদানের জন্য চীন ও মঙ্গোলিয়া তাকে অনেক পদক ও সম্মান দিয়েছেন। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা একসঙ্গে থেংকরির আরেকটি সুন্দর গান ‘তৃণভূমির রাত’ শুনবো। আশা করি, আপনারা তার গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭

ন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।