সুন্দরভাবে চীনা ভাষায় কথা বলেন। মুখে সব সময় মুগ্ধতা ছড়ানো হাসি লেগে থাকে। তিনি হচ্ছেন জিম্বাবুয়ের তরণ তুনগামিরাই এরিক মুপানা (Tungamirai Eric Mupona)। তার চীনা নাম মি লাই। মুপানা চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর হাংচৌ’তে বাস করছেন ৬ বছর ধরে। এ সুন্দর শহরের সঙ্গে তার অনেক মজার গল্প রয়েছে।
ছোটবেলায় মুপানা সব সময় চীনের কুংফু চলচ্চিত্র এবং চীনের পাহাড় ও পানির প্রামাণ্যচিত্র দেখতেন। তার জন্মস্থান থেকে একেবারে ভিন্ন চীনা সংস্কৃতি ও সুন্দর দৃশ্য তাকে ব্যাপকভাবে আকর্ষণ করতো। ২০১৭ সালে সিনিয়র স্কুল থেকে পাস করার পর তিনি স্বপ্ন পূরণে হাংচৌ শহরে চ্যচিয়াং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি একাডেমিতে লেখাপড়া করতে আসেন। হাংচৌ আসার প্রথম দিকে অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেতেন মুপানা। তখন তার মধ্যে বেশ সংশয় ছিল। সংশয় দূর করা এবং দ্রুত সমাজে একাত্ম হওয়ার লক্ষ্যে মুপানা অনেক স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে অংশ নেন। হাংচৌ শহরের ওয়েস্ট লেকে পর্যটকদের জন্য শৃঙ্খলা রক্ষা করা, হাংচৌ রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের টিকিট ক্রয়ে সাহায্য করা এবং কমিউনিটিতে প্রবীণদের ইংরেজি শিখানোসহ নানা কাজ করেন তিনি। একটি লাল ভেস্টই মুপানার সারা বছরের পরিধেয় হয়ে উঠেছে।
আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর ১৯তম এশিয়ান গেমস হাংচৌ শহরে উদ্বোধন হবে। এ গেমসের একজন সেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার স্বপ্ন দেখছেন মুপানা। তিনি বলেন, “জাতীয়তা নির্বিশেষে খেলাধুলা উপভোগ করেন মানুষ। আফ্রিকানরাও এশিয়ান গেমস দেখেন। একজন সেচ্ছাসেবক হিসেবে সকলকে সেবা দেওয়া ও ভালোবাসার প্রেরণা পরিবর্তিত হয় না।”
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আদান-প্রদান কাজ করতে করতে এই ধারণা আরও গভীর হয়েছে। তিনি চীন-আফ্রিকা সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের জন্য সেতুবন্ধনের কাজ করতে চান। চ্যচিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে মাস্টার কোর্সে পড়তে আবেদন করেন এবং হাংচৌ শহরে তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পেরেছেন।
মুপানা বলেন, “হাংচৌ শহরের দৃশ্য খুব সুন্দর। ওয়েস্ট লেক ও বেইজিং-হাংচৌ গ্র্যান্ড ক্যানেল আমার সবচেয়ে প্রিয় দর্শনীয় স্থান।” হাংচৌ শহরে বসবাসের কয়েক বছরে মুপানা অনেক সুন্দর দৃশ্য দেখেছেন এবং শহরটির গভীর ইতিহাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। তিনি মনে করেন, হাংচৌ শহর দ্রুত গতিতে উন্নয়ন অর্জন করেছে। শহরটি খুব উন্মুক্ত ও সহনশীল, যা বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।
ভবিষ্যতমুখী মুপানা চীনে থেকে যাওয়ার কথা ব্যক্ত করেছেন। তিনি চীন-আফ্রিকা সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান জোরদার এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বেগবান করতে চান। পাশাপাশি নিজের প্রচেষ্টার মাধ্যমে আফ্রিকান শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টিতে করতে চান তিনি।
(রুবি/রহমান)