তিব্বতের ‘লুং ওয়াং থান’ বা ড্রাগন কিং লেক
2023-08-03 18:27:13

এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও তিব্বতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর তিব্বত সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা তিব্বত নিয়ে কথা বলব।

 

লুংওয়ানথান নামের উত্স

লুংওয়ানথানের আরেকটি নাম ড্রাগন কিং লেক। তিব্বতি ভাষায় একে ‘লুখাং’ বলা হয়। এই বিখ্যাত বাগানবাড়িটি পোতালা প্যালেস পর্বতের পিছনে অবস্থিত। ঐতিহাসিক নথি অনুসারে, পঞ্চম দালাই লামার সময়কালে, পোতালা প্রাসাদের হোয়াইট হাউস, লাল প্রাসাদ, এবং দিবা সাংয়ে গ্যাতসো দ্বারা নির্মিত সূত্র হাউসগুলো নির্মাণের সময়, পাহাড়ের পাদদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে মাটি নেওয়া হয়েছিল। এতে এখানে একটি বড় জলাশয় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী কালে, ষষ্ঠ দালাই লামা ‘মোচুকুংখা’ থেকে আট ড্রাগনকে আমন্ত্রণ জানান এবং পানির মধ্যে একটি তিনতলা অষ্টভুজাকৃতির চকচকে প্যাভিলিয়ন তৈরি করেন। তাই এটির নামকরণ করা হয় ড্রাগন কিং লেক।

 

লুংওয়ানথানের মেরামত

১৭৯১ সালের পর, অষ্টম দালাই লামা কিয়াংবাই গ্যাতসো ড্রাগন কিং লেকের পুঙ্খানুপুঙ্খ সংস্কার করেন। পাশাপাশি, লুংওয়ানথানের ৮০ মিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে একটি হাতিঘরও তৈরী করা হয়। আর এর নামকরণ করা হয় ‘পারফেক্ট প্যারাডাইস’। বেশকিছু মেরামতকাজের পর, বর্তমান ড্রাগন কিং লেকটি লাসার প্রথম বড় পার্কে পরিণত হয়।

 

লুংওয়ানথানের পরিচয়

লুংওয়ানথানের পুরো ভবনটি পাহাড়ের গায়ে নির্মিত। এটি পূর্ব থেকে পশ্চিমে ৬১০ মিটার দীর্ঘ, উত্তর থেকে দক্ষিণে ৩০৩ মিটার প্রশস্ত। তবে এর সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় প্রস্থ ২০.৫ মিটার। পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে দুটি গেট রয়েছে। বাগানের মাঝখানে অবস্থিত লেকটি মোটামুটি আয়তাকার। এর মধ্যে একটি ছোট বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রয়েছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপে দক্ষিণমুখী একটি তিনতলা মণ্ডপ রয়েছে। প্রথম তলায় প্যাভিলিয়নের সমতল একটি সম্পূর্ণ প্রতিসম ক্রস-আকৃতির কাঠামো আছে, যা প্রধানত প্রধান হল, ছোট হল, ও করিডোরের একটি বৃত্তের সমন্বয়ে গঠিত। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় একই স্থাপত্য কাঠামো রয়েছে, যেখানে একটি বৌদ্ধ হল ও একটি ক্লোস্টার রয়েছে। প্যাভিলিয়নের উপরের অংশটি একটি ষড়ভুজাকার লগ স্ট্রাকচার বিল্ডিং, চারটি বর্গাকার ইভের প্রতিটি কোণে একটি তামার কল, কলের নীচে একটি তামার ঘণ্টা ঝুলছে। যখন বাতাস প্রবাহিত হয়, তখন তামার ঘণ্টা ডিং ডিং ডং ডং শব্দ সৃষ্টি করে। এসময় পানির পৃষ্ঠটি পরিষ্কার তরঙ্গের সাথে ঝলমল করে, যা মানুষের মধ্যে সতেজ বোধ এনে দেয়।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn  আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (উর্মি/আলিম)