আগস্ট ৩: ছেংতু ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমস এখন সুষ্ঠুভাবে চলছে। ছেংতুর পুরনো ও আধুনিক শহরও মানুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আজ আমরা এ শহরে একটু ঘুরে দেখব, কেমন?
২০১৮ সালের শেষ দিকে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের আয়োজক শহর নির্বাচিত হয় ছেংতু। তখন থেকে অবকাঠামো, অর্থনীতি, শহরের বনায়নসহ নানা দিক দিয়ে ছেংতু দ্রুত গতিতে উন্নয়ন অর্জন করছে।
লি কেং ছেংতুতে আর্থিক খাতে কাজ করেন। কাজের জন্য তাঁকে মাঝেমাঝে ছেংতুর আশেপাশের শহরগুলোতে যেতে হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছেংতু ও ছংছিং অঞ্চলে রেল খাতের নির্মাণকাজ চলছে দ্রুত গতিতে। এখন উচ্চ গতির ট্রেনে ছেংতু থেকে ছংছিং যেতে মাত্র এক ঘন্টা ২ মিনিট সময় লাগে। এখন একদিনেই এ দুটি শহরে আসা-যাওয়া করা সম্ভব।
ছেংতু শহরের রেল পরিবহনে অনেক উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সাল থেকে শহরটিতে মোট ১০টি মেট্রো ও স্ট্রিটকার লাইন চালু হয়েছে, যেগুলোর সম্মিলিত দৈর্ঘ্য ৩৭৮ কিলোমিটার। এটা যাতায়াতের ক্ষেত্রে শহরবাসীদের জন্য অনেক সুবিধা বয়ে এনেছে।
কাজের বাইরে, লি কেং ট্রায়াথলন খেলা খুব পছন্দ করেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছেংতুতে আউটডোর খেলাধুলা অনেক জনপ্রিয় হয়েছে। লি কেং যে ট্রায়াথলন ক্লাবে যোগ দিয়েছেন, সেখানে ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিবন্ধন করেছেন।
ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের আয়োজক শহর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে, ছেংতুতে পার্কের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলে দ্রুত গতিতে। পার্কের আয়তন বেড়েছে ১ হাজার ৪শ’ হেক্টর। শহরে দৌড়ানোর পথের দূরত্ব ৬ হাজার কিলোমিটারে অতিক্রম করেছে। লি কেংসহ বহিরাঙ্গন ক্রীড়াপ্রেমীদের জন্য এটা অনেক সুবিধা সৃষ্টি করেছে।
২০১৮ সালে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ছেংতু সফর করার সময় প্রথমবারের মতো ‘পার্ক সিটি’ বা ‘উদ্যান নগরী’ ধারণা উত্থাপন করেন। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের আয়োজন ছেংতুতে উদ্যান নগরী নির্মাণকেও অনেক এগিয়ে নিয়েছে। শহরে শতাধিক পার্ক নির্মিত ও সংস্কার হয়েছে। এগুলো শহরের ‘সবুজ ফুসফুসের’ মতই ভূমিকা পালন করছে।
এ ছাড়া ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের আয়োজন ছেংতুতে স্টেডিয়াম ও অন্যান্য খেলাধুলা অবকাঠামো নির্মাণকেও অনেক এগিয়ে নিয়েছে। এ গেমসের আয়োজক নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে, ছেংতুতে মোট ৪৯টি স্টেডিয়াম নির্মিত হয়েছে বা সংস্কার হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি আগের পুরনো স্টেডিয়াম থেকে উঁচু মানে উন্নীত করা।
এ ছাড়া শহরের পুরনো আবাসিক এলাকাগুলোতেও অনেক উন্নতি হয়েছে। উ ফু ইউয়ান আবাসিক এলাকা ১৯৯৬ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০২০ সালে, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের স্টেডিয়াম সংস্কার হওয়ার সুবাদে উ ফু ইউয়ান ও তার আশেপাশের এলাকায় সার্বিক উন্নতি হয়েছে। এলাকার রাস্তা ও স্থাপনাসহ সেখানকার নানা ক্ষেত্র সব দিক দিয়ে নতুন হয়ে গেছে।
স্থানীয় একজন কমকর্তা সাংবাদিককে জানান, “এখানে নতুন রাস্তা নির্মিত হয়েছে, আবাসিক এলাকার আশেপাশে গাড়ি পার্কিং ও বাজার নির্মিত হয়েছে। এটা বাসিন্দাদের জন্য অনেক সুবিধা সৃষ্টি করেছে।”
একটি আন্তর্জাতিক গেমস একটি শহরে নানা দিক থেকে পরিবর্তন বয়ে আনে। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসের আয়োজন ছেংতুর উন্নয়নে এবং এর আন্তর্জাতিক প্রভাবের ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।
(আকাশ/রহমান)