প্রসঙ্গ: চীনা অর্থনীতির বলিষ্ঠতা ও প্রাণশক্তি
2023-07-31 10:10:10


সম্প্রতি চীনা অর্থনীতির চলতি বছরের অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিগত আধা বছরে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৫ শতাংশ, যা ২০২২ সালের ৩ শতাংশের চেয়ে অনেক বেশি এবং চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকের ৪.৫ শতাংশের চেয়েও বেশি। দেশি-বিদেশি কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেও চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বিশ্বের প্রধান উন্নত অর্থনীতির চেয়ে বেশি। এ সাফল্য কিভাবে অর্জিত হয়েছে? আজকের অনুষ্ঠানে আমরা এ সম্পর্কে আলোচনা করবো।

৫.৫ শতাংশ! এ প্রবৃদ্ধির হার সহজে অর্জিত হয়নি। এর জন্য  বিভিন্ন নীতি ও ব্যবস্থা দায়ী। তা ছাড়া, গত আধা বছরে দেশে ভোগ ও পরিসেবা খাতে প্রবৃদ্ধির হার ছিল আশানুরূপ।

চীনের ড্রাগন নৌকা উত্সবের কথা এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে টানা যায়। এ উত্সবের ছুটির সময়ে চীনের পর্যটনবাজার ছিল চাঙ্গা। শাংহাইয়ের এক সি পার্কে ড্রাগন নৌকা উত্সবের ছুটিতে দৈনিক পর্যটকের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০০ শতাংশ বেশি ছিল। উত্সবের বিশেষ খাবার চুং জি তৈরি করা, কপালে ছবি আঁকা এবং পাখায় ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন  রীতিনীতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন পর্যটকরা।

হেইলুংচিয়াং প্রদেশের মোহ্য শহরে অরোরা উপভোগ করা এবং চ্য চিয়াং প্রদেশের তাই চৌ অঞ্চলে দশ মাইল দীর্ঘ রাস্তায় একটি ভোজ উপভোগ করার মতো অভিজ্ঞতাও অর্জন করেন পর্যটকরা। তাঁরা ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ড্রাগন নৌকা উত্সবের ছুটিতে গোটা চীনে পর্যটকের সংখ্যা ১০ কোটি ৬০ লাখ পার্সন টাইমস ছাড়িয়ে যায়, যা ২০১৯ সালের একই সময়ের ১১২.৮ শতাংশ।

কেবল পর্যটনবাজার নয়, গত আধা বছরে রেস্তোরাঁ-শিল্পও দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়েছে। এ সময় প্যাকেজ ডেলিভারির সংখ্যা ৬ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে, যা ২০১৯ সালের পাঁচ মাসের সমান।  ডেলিভারি-পণ্যের মধ্যে ছিল তাজা লিচু, বড় চেরি, আইসক্রিম থেকে শুরু করে প্রায় সবকিছুই। নতুন প্রযুক্তি ও নতুন সরঞ্জামসমৃদ্ধ এক্সপ্রেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেগুলো দ্রুত গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে গেছে। এতে ভোগ বেড়েছে।

চলতি বছরও বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধার পরিস্থিতি ছিল দুর্বল। চাহিদাও পর্যাপ্ত নয়। বাইরের কঠিন পরিস্থিতির মুখে, চীন ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যা বৈদেশিক বাণিজ্যিক আকার স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি, কাঠামো সুবিন্যস্ত করেছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে চীনের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ২০ ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়েছে, যা ইতিহাসের নতুন রেকর্ড। চীন বিদেশি ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের হটল্যান্ডে পরিণত হয়েছে।

চলতি বছর টেসলা, প্রক্টর অ্যান্ড গ্যাম্বল, এবং সিমেন্সের মতো বহু আন্তর্জাতিক কোম্পানির নির্বাহী প্রধানরা চীন সফরে আসেন। তাঁরা বাজার পরিদর্শন ও মূলধন বৃদ্ধি করেন। তাদের আচরণে যে বার্তা পাওয়া গেছে, তা হচ্ছে: চীনা অর্থনীতি বলিষ্ঠ; এখানকার ব্যবসার পরিবেশ ভালো; এখানে বিনিয়োগ বাড়ানো নিরাপদ।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্দার পটভূমিতে, চীনের অর্থনীতি আশার চেয়ে ভালো করছে। চীনের অর্থনীতির বলিষ্ঠতা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। আর এ কারণেই অধিকাংশ বিদেশী বিনিয়োগকারী এদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন। আর বিদেশী বিনিয়োগ যত বাড়বে, চীনের অর্থনীতি তত শক্তিশালী হবে। (রুবি/আলিম)