‘আট আট কৌশলের’ আলোয় চ্য চিয়াং প্রদেশের সুন্দর পরিবর্তন
2023-07-28 11:26:12

২০০৩ সালের জুলাই মাসে, তত্কালীন চীনের চ্য চিয়াং প্রদেশের সিপিসি’র সম্পাদক সি চিন পিং একটি কৌশল উত্থাপন করেন। একে ‘আট আট কৌশল’ বলা হয়। এর অর্থ, আট দিকের সুবিধা কাজে লাগানো, আট ক্ষেত্রের উন্নয়ন জোরদার করা। যা চ্য চিয়াং প্রদেশের সংস্কার ও উদ্ভাবনীমূলক উন্নয়নের নতুন পথ নির্দেশ করেছে।

বিশ বছর ধরে চ্য চিয়াং প্রদেশ ‘আট আট কৌশল’ অনুসারে প্রদেশের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করেছে।

‘অর্ধেক পাহাড়, অর্ধেক নদী, বসন্তের সজ্জা, অর্ধেক চাষাবাদ, অর্ধেক লেখাপড়া, জীবনের কবিতা রচনা করে’। এটি হল চ্যচিয়াং প্রদেশের তুং হেং গ্রামের সুন্দর দৃশ্য বর্ণনা করা একটি লোকগান। তবে যদি ২০ বছর আগে ফিরে যায়, তখনকার তুং হেং গ্রামে অন্য এক ধরনের চেহারা হত। সবাই খনন কাজে ব্যস্ত, সবখানে মেশিনের শব্দ, গ্রাম ছিল নোংরা ও খারাপ।

২১ শতাব্দীর শুরুর দিকে, চ্য চিয়াং প্রদেশের অর্থনীতির উন্নয়ন দেখতে ভালো হলেও আকাশ নীল রঙের ছিল না, নদী পরিষ্কার ছিল না, পাহাড়ও সবুজ ছিল না। সম্পদের সংকটও দেখা যেত। ভারসাম্যহীন উন্নয়ন পদ্ধতিতে আর কাজ করা যায় না।

২০০৩ সালের জুলাই মাসে, চ্য চিয়াং প্রদেশের আগের উন্নয়নের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তত্কালীন চ্য চিয়াং প্রদেশের সিপিসি সম্পাদক সি চিন পিং সার্বিকভাবে প্রদেশের উন্নয়নের আটটি সুবিধা ব্যাখ্যা করেছেন, আগামীতে উন্নয়নের আটটি ব্যবস্থা তুলে ধরেছেন, এভাবে ‘আট আট কৌশলের’-এর জন্ম হয়। প্রদেশটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন শুরু করেছে।

চ্য চিয়াং আরো ভালোভাবে ভৌগলিক সুবিধা কাজে লাগিয়েছে। সক্রিয়ভাবে শাংহাই এবং ইয়াংসি নদীর ডেল্টা এলাকার সহযোগিতা ও বিনিময়ে যোগ দিয়েছে, অব্যাহতভাবে উন্মুক্তকরণের মান বাড়িয়ে দিয়েছে। চ্য চিয়াং সরকার বৈদেশিক বাণিজ্যের শক্তিশালী প্রদেশ নির্মাণ শুরু করেছে, সক্রিয়ভাবে দেশ-বিদেশের বাজার সম্প্রসারণ করেছে, বিদেশি বাণিজ্যের নতুন সুবিধা লালন করেছে, বিদেশি বাণিজ্যের কাঠামো সুসংহত করেছে এবং গুণগতমানের উন্নয়ন জোরদার করেছে।

সেই সঙ্গে চ্য চিয়াং-এর শহর ও গ্রামের সমন্বয় উন্নয়নের সুবিধা আরো বাড়ানো হয়েছে, শহর ও গ্রামের একীকরণ কাজ আরো দ্রুততর করা হয়েছে। বিশ বছরে চ্য চিয়াং প্রদেশের শহর ও গ্রামের মাথাপিছু আয় সবসময় দেশের শীর্ষে রয়েছে এবং গণসেবা আরো উন্নত হচ্ছে।

চ্য চিয়াং প্রদেশের প্রাকৃতিক সুবিধা জোরদার করা হয়েছে। প্রদেশটি ‘সবুজ চ্য চিয়াং’ নির্মাণ করায় চেষ্টা করছে। বিশ বছরে চ্য চিয়াং প্রদেশের পানির মান আগের ৪২.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭.৬ শতাংশ। দৈনন্দিন জীবনে আবর্জনার ‘শূন্য বৃদ্ধি’ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। চ্য চিয়াং প্রদেশ সবসময় ‘সবুজ পাহাড় ও পরিচ্ছন্ন নদী মানে সোনার পাহাড় ও রৌপ্যের পাহাড়ের’ চেতনা এগিয়ে নিচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্বন্ধে লোকজনের সন্তুষ্টির হার টানা ১১ বছর ধরে বাড়ছে। শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক পরিবেশ ইতোমধ্যে চ্য চিয়াং প্রদেশের উচ্চ মানের উন্নয়নের সুবিধায় পরিণত হয়েছে।

চ্য চিয়াং আরো ভালোভাবে পাহাড় ও সামুদ্রিক সম্পদের সুবিধা ব্যবহার করছে। ব্যাপকভাবে সামুদ্রিক অর্থনীতি উন্নত করেছে, অনুন্নত এলাকার উন্নয়ন জোরদার করেছে। বিশ বছরে চ্য চিয়াং প্রদেশের ৫০টি উন্নত জেলা নির্দিষ্টভাবে ২৬টি অনুন্নত জেলাকে সাহায্য করেছে এবং যৌথভাবে ১২ হাজারেরও বেশি বৈশিষ্ট্যময় শিল্প উন্নত করেছে। এসব কাজে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭.৪ কোটি ইউয়ানেরও বেশি।

সেই সঙ্গে চ্য চিয়াং প্রদেশের সাংস্কৃতিক সুবিধাও বড় ভূমিকা পালন করেছে। চ্য চিয়াং প্রদেশটি সক্রিয়ভাবে বিজ্ঞান ও শিক্ষা এবং সংস্কৃতির বড় প্রদেশ গঠন করেছে। বিশ বছরে ৮ হাজারেরও বেশি ‘১৫ মিনিটের জীবন চক্র’ চ্য চিয়াং প্রদেশে গড়ে উঠেছে। লোকজনের জীবন আরো সুন্দর ও সুবিধাজনক হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির হার ৬৬.৩ শতাংশ। যা ২০ বছর আগের চেয়ে ৪৬ শতাংশ বেশি। চ্য চিয়াং প্রদেশ অব্যাহতভাবে শিক্ষা সংস্কার জোরদার করেছে এবং এতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে।

আট আট কৌশল কার্যকর হওয়ার বিশ বছরে, অনেক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। যেমন- চ্য চিয়াং প্রদেশের চৌ মান বন্দরে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ টানা ১৪ বছর ধরে বিশ্বের শীর্ষে রয়েছে। কৌশলটি চ্য চিয়াং-এর জন্য উদ্ভাবন, সমন্বয়, সবুজ, উন্মুক্ত এবং যৌথভাবে উন্নয়নের নতুন অবস্থা তৈরি করেছে। আট আট কৌশলের আলোয় চ্য চিয়াং প্রদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

(শুয়েই/তৌহিদ/সুবর্ণা)