গুরুত্বপূর্ণ ‘হোম কূটনীতি’ শুরু হয়েছে ছেংতু সামার ইউনিভার্সিয়েডকে কেন্দ্র করে
2023-07-28 16:42:03

জুলাই ২৮: একত্রিশতম বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গ্রীষ্মকালীন গেমস বা সামার ইউনিভার্সিয়েডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ (শুক্রবার) রাতে সিছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেংতু শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং এবারের গেমসের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। তিনি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এবং সফর করতে চীনে আসা বিদেশি নেতাদের সম্মানে এক ভোজসভা ও দ্বিপাক্ষিক কার্যক্রম আয়োজন করবেন।

২০০১ সালে বেইজিং ও ২০১১ সালে শেনচেনের পর চীনের মুলভূখণ্ডে তৃতীয় বারের মতো বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গ্রীষ্মকালীন গেমস আয়োজন হলো ছেংতু সামার ইউনিভার্সিয়েড।

ছেংতু সামার ইউনিভার্সিয়েড নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর পর চীনে উন্মুক্তভাবে আয়োজিত প্রথম বৃহৎ আকারের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। পাশাপাশি এটি দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে প্রথম বৃহৎ পরিসরের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজন।

সামার ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্পোর্টস ফেডারেশনের উদ্যোগে আয়োজিত হয়। ১৯৫৯ সালে এ গেমসের আয়োজন শুরু হয় এবং প্রতি দু’বছর একবার করে অনুষ্ঠিত হয়। ছেংতু ইউনিভার্সিয়েড ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এটি স্থগিত রাখা হয়।

ইউনিভার্সিয়েডের সকল বাধ্যতামূলক প্রতিযোগিতা হল অলিম্পিক ইভেন্ট এবং প্রতিযোগিতাগুলো অলিম্পিকের মান অনুযায়ী পরিচালিত হয়, যা ‘লিটল অলিম্পিক’ নামে পরিচিত। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বা ২ বছরের কম সময় আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হয়েছেন কেবল তারাই ইউনিভার্সিয়েডে অংশগ্রহণ করতে পারেন। ইউনিভার্সিয়েডের মতো আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মহাসম্মিলনীর রয়েছে বহুমাত্রিক মূল্য ও তত্পর্য।

ক্রীড়া শক্তিশালী হলে চীনও শক্তিশালী হবে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিসি’র ২০তম জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চীনে ব্যাপকভাবে জাতীয় ফিটনেস কার্যক্রম চালানো, যুবকদের ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজ জোরদার করা, গণ-ক্রীড়া ও প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলার সর্বাত্মক বিকাশ বেগবান করা এবং চীনকে শক্তিশালী ক্রীড়া-দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা দ্রুততর করা প্রয়োজন।

অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা প্রায়ই ‘হোম কূটনীতি’র একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগও বটে।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২০১৪ সালে নানচিংয়ে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় গ্রীষ্মকালীন যুব অলিম্পিক গেমস থেকে শুরু করে ২০২২ সালের বেইজিং ২৪তম শীতকালীন অলিম্পিক গেমস পর্যন্ত, সেসব ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন, সেখানে অংশগ্রহণকারী বিদেশি নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক কূটনৈতিক কার্যক্রমের আয়োজন করেছেন।

ইন্দোনেশিয়া, মৌরিতানিয়া, বুরুন্ডি, গায়ানা, জর্জিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা ছেংতু সামার ইউনিভার্সিয়েডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন এবং চীন সফর করছেন।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেলে প্রেসিডেন্ট সি ওইদিন ছেংতুতে পৌঁছানো ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডোর সঙ্গে বৈঠক করেন। এটি ছিলো গত এক বছরে এই দুই নেতার তৃতীয় মুখোমুখি বৈঠক। গত বছরের ২৬ জুলাই জোকো বেইজিং সফর করেছিলেন এবং একই বছরের ১১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালে স্বাগতিক দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকোর সঙ্গে আবার বৈঠক করেছিলেন প্রেসিডেন্ট সি।

চীন ও ইন্দোনেশিয়ার অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলা হলো দু’দেশের জনগণের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা। গত বছর দু’বার বৈঠককালে উভয় পক্ষ যৌথভাবে চীন-ইন্দোনেশিয়ার অভিন্ন কল্যাণের সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল দিক নির্ধারণ করে এবং এ বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছায়। এর মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে।

লিলি/রহমান/রুবি