জুলাই ২৭: ২৬ জুলাই, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিঙ্কেন টোঙ্গাতে নতুন মার্কিন দূতাবাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্টার ৫১ বছর পর এই প্রথম টোঙ্গাতে মার্কিন দূতাবাস স্থাপিত হলো। একই দিনে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন পাপুয়া নিউগিনি সফর করেন। এসব হচ্ছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে প্রভাব বিস্তারের মার্কিন প্রচেষ্টা। দু’বছর ধরে, তথাকথিত ‘ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল’ অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে তার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, একটা সময়, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা ও পারমাণবিক বর্জ্য ফেলার স্থান হিসেবে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে ব্যবহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন এ কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের ক্ষতি করেছে, স্থানীয় পরিবেশের ক্ষতি করেছে। স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর, যুক্তরাষ্ট্র মনে করলো, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আর কৌশলগত মূল্য নেই। আর তখন থেকেই এতদঞ্চলে অর্থনৈতিক সহায়তা কমানোসহ একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেশটি।
এদিকে, বিগত এক দশক ধরে, পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে, চীন প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশগুলোর সাথে সহযোগিতা চালিয়ে আসছে। এ সহযোগিতা এসব দেশের সরকার ও জগনণের ব্যাপক সমর্থনও লাভ করেছে।
চীন ও দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশগুলোর সহযোগিতা স্থানীয় জনগণের জন্য বাস্তব কল্যাণ বয়ে এনেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়। আর তার প্রতিক্রিয়ায়, দেশটির আগের মনোভাবে পরিবর্তন আসে এবং মার্কিন কর্মকর্তারা ঘন ঘন এতদঞ্চলের আসতে শুরু করেন। তাঁরা এতদঞ্চলের দ্বীপদেশগুলোকে বড় ধরনের সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিতে থাকেন।
আসলে, যুক্তরাষ্ট্রের আসল উদ্দেশ্য সবাই স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যা করছে, তার মূল লক্ষ্য সেখানে চীনের প্রভাব কমানো। কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হচ্ছে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের স্বার্থ নষ্ট করা এবং চীনের সাথে এতদঞ্চলের দ্বীপদেশগুলোর সহযোগিতার পথে বাধা সৃষ্টি করা।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপদেশগুলোর জন্য কল্যাণকর যে-কোনো উদ্যোগকে চীন স্বাগত জানায়। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ভালো না। আর তাই মার্কিন অপচেষ্টা সফল হবে না। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন: কোনো শক্তি চীনের সাথে পারস্পারিক বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। (আকাশ/আলিম/ঊর্মি)