জুলাই ২৬: চীনা জাতি এবং মানবজাতির শান্তি, উন্নয়ন ও অগ্রগতির ইতিহাসে মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধের মহান বিজয়ের অধ্যায় খোদাই হয়ে আছে। ইতিহাসে ১৯৫৩ সালের ২৭ জুলাই ছিল অবিস্মরণীয় দিন।
দুই বছর নয় মাসের কঠিন ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর চীনা এবং উত্তর কোরিয়ার সেনারা তাদের প্রতিপক্ষকে পরাজিত করেছিলো এবং শক্তিশালী আগ্রাসীদের অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিলো। মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধে মহান বিজয় অর্জিত হয়েছিল।
২০২০ সালের ২৩ অক্টোবর মার্কিন আগ্রাসন প্রতিরোধে উত্তর কোরিয়াকে সাহায্য দানকারী সেচ্ছাসেবী সেনা পাঠানোর ৭০তম বার্ষিকীর এক স্মরণসভায় সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং সার্বিকভাবে মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধে মহান বিজয় ও বিশাল অবদানের অতীত পর্যালোচনা করেন এবং এর সারসংকলণ করেন। মহান এই বিজয় মনে রাখা এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে চীনা বৈশিষ্ট্যময় সমাজতান্ত্রিক মহান শিল্প এগিয়ে নেওয়া উচিত্ বলে তিনি জোর দেন।
২০২১ সালের ১১ নভেম্বর চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিসি’র ঊনবিংশ জাতীয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং বলেন, সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটি এবং কমরেড মাও চ্য তোং ‘শত শত লড়াই এড়াতে একবার লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার’ কৌশলগত দূরদর্শিতা দিয়ে মার্কিন হামলা প্রতিরোধ করেন ও কোরিয়াকে সাহায্য দেন। এভাবে তিনি দেশ রক্ষার ঐতিহাসিক নীতি গ্রহণ করেন।
যুদ্ধ শুধু বস্তুগত প্রতিযোগিতাই নয়, বরং আধ্যাত্মিক প্রতিযোগিতাও বটে।
যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষের মুখে একটি কঠোর এবং নিষ্ঠুর যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশে স্বেচ্ছাসেবক সেনারা ক্ষুধা ও ঠাণ্ডা সহ্য করতেন এবং কোনোভাবেই পিছু হটতেন না। তাদের মধ্যে ইয়াং কেন সি, হুয়াং চি কুয়াং ও ছিউ শাও ইয়ুনসহ তিন লাখেরও বেশি বীর এবং প্রায় ছয় হাজার লড়াকু গ্রুপ ছিল।
দেশ, জনগণ এবং শান্তির জন্য এক লাখ ৯৭ হাজার বীর মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধে প্রাণ উত্সর্গ করেছেন।
সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিংয়ের আন্তরিকতায় ২০১৪ সাল থেকে ৯ দফায় উত্তর কোরিয়ায় ৯১৩জন স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সেনাদের দেহাবশেষ চীনে পাঠানো হয়।
মার্কিন আগ্রাসন প্রতিরোধে উত্তর কোরিয়াকে সাহায্য দানকারী সেচ্ছাসেবী সেনা পাঠানোর ৭০তম বার্ষিকীতে এক স্মরণসভায় সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং বেঁচে থাকা স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সেনা, মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধে সহায়তা করা চীনের বিভিন্ন জাতির মানুষ, নিহত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সেনাদের আত্মীয়স্বজনদের আন্তরিকতাপূর্ণ সমবেদনা জানান।
মার্কিন হামলা প্রতিরোধ ও কোরিয়াকে সাহায্য দানের যুদ্ধের রণাঙ্গনে অপরিচিত যুদ্ধক্ষেত্র এবং শত্রুদের সামনে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর সেনারা নমনীয় কৌশল সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতেন। নানা ঝুঁকি, চ্যালেঞ্জ, চাপ ও বাধার সামনে চীনা জনগণ বিজয়ের পথ খুঁজতেন।
নতুন যুগে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে। নতুন যুগে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কর্তব্য হলো চীনের বিভিন্ন জাতির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তোলা, দ্বিতীয় শত বছরের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা এবং চীনা বৈশিষ্ট্যময় আধুনিকায়নের মাধ্যমে চীনা জাতির মহান পুনরুত্থান এগিয়ে নেওয়া। এটি অভূতপূর্ব সৃজনশীল খাত এবং এই যাত্রায় নিঃসন্দেহে অসংখ্য বাধা-বিপত্তিসহ নানা বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেই দেশকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা এবং জাতির পুনরুত্থানের মহান স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
(লিলি/তৌহিদ/রুবি)