তিব্বতের কথা
2023-07-21 15:49:03

 

 এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও তিব্বতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর তিব্বত সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা তিব্বত নিয়ে কথা বলব

তিব্বত ভ্রমণের আনন্দ

আপনি যদি তিব্বতে আসেন, এই ভূমি আপনাকে স্বপ্ন দেখাবে; আপনি যদি তিব্বতে না আসেন, তবে এই ভূমি আপনাকে তার জন্য আকুল করে তুলবে; আপনি যদি তিব্বতের পথে পথে  হাঁটেন, তবে আপনি স্বর্গে হাঁটার আনন্দ পাবেন।

রহস্যময় তিব্বতে প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত অনেক কিংবদন্তি ও স্বপ্নের জন্ম দিয়েছে। এখানে রয়েছে হাজার হাজার বছরের প্রাচীন ‘থাং ফান’ রাস্তা, পৃথিবীর ছাদ হিসেবে পরিচিত ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি, আছে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্ট, আরও আছে সুন্দর স্ফটিক-স্বচ্ছ হ্রদ, এবং সর্বোপরি আছে একটি অনন্য তিব্বতি সংস্কৃতি। এখানে আছে মনোমুগ্ধকর এক পবিত্র প্রাসাদ। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পর্যটক  দূরদূরান্ত থেকে স্রেফ এর আকর্ষণেও তিব্বতে আসেন; তাঁরা আসেন শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও পূজার জন্য।

যদি এক কথায় তিব্বতের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও সমগ্র ছিংহাই-তিব্বত মালভূমিকে বর্ণনা করতে বলা হয়, তাহলে ‘বিশ্বের ছাদ’ টার্মটি সবচেয়ে উপযুক্ত হতে পারে। ৩ কোটি বছর আগে ভারত মহাসাগরের প্লেট ইউরেশিয়ান প্লেটের সাথে সংঘর্ষের সময় বিশ্বের সর্বোচ্চ মালভূমির জন্ম হয়েছিল। সে থেকে এর উচ্চতা প্রতিবছর কয়েক সেন্টিমিটার করে বাড়তে থাকে। এখানে আছে সুউচ্চ ও মহিমান্বিত পর্বতমালা, দীর্ঘ নদী, বিস্তীর্ণ তৃণভূমি, সুমিষ্ট বন, গিরিখাত, শান্ত ও গভীর হ্রদ, এবং স্ফটিক-স্বচ্ছ হিমবাহ। এখানকার পবিত্র পাহাড় ও পবিত্র পানি কি স্বর্গে যাওয়ার পথ? নাকি এটি স্বয়ং স্বর্গের কাছাকাছি অবস্থিত একটি এলাকা? এ এক প্রশ্ন বটে।

তিব্বতের সৌন্দর্য অফুরন্ত। এই সুন্দর ও মহান ভূমিটি বিশ্বের অগণিত মানুষের হৃদয়কে টানে। অনেকে একে একটি আবাসস্থল হিসাবে বিবেচনা করেন, যা আত্মাকে প্রশান্ত করে, পরিশুদ্ধ করে। তাদের দৃষ্টিতে, পৃথিবীর ছাদে অবস্থিত তিব্বত স্বর্গের সবচেয়ে কাছে অবস্থিত এবং এর পাহাড়, নদী ও পানি স্বর্গীয়। যতক্ষণ আপনি এখানে ভক্ত-হৃদয়ের অধিকারী, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি বিভ্রান্তিকর চিন্তা থেকে মুক্ত; আপনি যে-ই হোন না কেন, এই ভূমিতে হাঁটা স্বর্গে হাঁটার মতো।

 

লাসা: তুষারময় মালভূমিতে সূর্যালোকের শহর

লাসা পর্যটন এলাকাটি অনেক পর্যটকের কাছে একটি পবিত্র স্থান। এর পূর্বে লিনচি শহর, পশ্চিমে শিগাত্সে শহর, উত্তরে নাকু এলাকা, এবং দক্ষিণে শান্নান এলাকা। এটি পর্যটকদের জন্য তিব্বতের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অঞ্চল। লাসা, তিব্বতের কেন্দ্রীয় শহর; চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী। এটি শুধুমাত্র তিব্বতের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং পরিবহনকেন্দ্র নয়, এটি একটি প্রাচীন মালভূমি শহরও বটে, যার ইতিহাস ১৩০০ বছরের।

কথিত আছে, প্রিন্সেস ওয়েনচেং যখন প্রথম তিব্বতে প্রবেশ করেন, তখনও লাসার শহুরে এলাকাটি ছিল অনুর্বর। পরবর্তীতে জোখাং মন্দির এবং রামোচে মন্দির নির্মাণের সাথে সাথে একের পর এক অনেক হোটেল ও আবাসিক ভবন গড়ে ওঠে এখানে। লাসাকেন্দ্রিক পর্যটন এলাকাটি তার সুন্দর দৃশ্য ও মৃদু জলবায়ুর কারণে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ হয়ে উঠছে।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn  আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (উর্মি/আলিম)