আকাশ ছুঁতে চাই ২৭
2023-07-20 17:40:58

নববধূর মুখে হাসি ফোটান দিলহুমার

কী রয়েছে এবারের পর্বে

১. নববধূর মুখে হাসি ফোটান ডিজাইনার দিলহুমার

২ ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীর সাফল্য

৩. বাংলাদেশের চার প্রতিবন্ধী মেয়ের স্বর্ণজয়

৪. চলে গেলেন কবি বুলবুল মহলানবীশ

নারী ও শিশু বিষয়ক অনুষ্ঠান আকাশ ছুঁতে চাই থেকে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। আমাদের অনুষ্ঠানে আমরা কথা বলি নারী ও শিশুর অগ্রযাত্রা, বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, সাফল্য, সংকট সম্ভাবনা নিয়ে। আমরা কথা বলি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষের অধিকার নিয়ে।

 

নববধূর মুখে হাসি ফোটান ডিজাইনার দিলহুমার

 

চীনের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর নারীদের বিয়ের জন্য বিশেষ ঐতিহ্যবাহী পোশাক রয়েছে। তবে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের মিশ্রণে তৈরি সাদা রঙের ওয়েডিং গাউনের ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি। চীনের নারীদের কাছে বিয়ের দিনটির আয়োজন এবং ওয়েডিং গাউন দুটোই পছন্দসই হওয়ার গুরুত্ব অনেক। এই পছন্দসই ওয়েডিং গাউন তৈরি করে বেশ নাম করেছেন নারী ফ্যাশন ডিজাইনার দিলহুমার সাওদানুফ। চলুন শোনা যাক তার গল্প।

 

চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের সুতি কাপড়ের্ খ্যাতি দেশজোড়া। এই সুতি কাপড় দিয়ে বিয়ের পোশাক বা ওয়েডিং গাউন তৈরি করে খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ফ্যাশন ডিজাইনার দিলহুমার সাওদানুফ। তিনি তার নিজস্ব ব্র্যান্ড সৃষ্টি করেছেন। কাস্টমাইজড ওয়েডিং গাউন তৈরি করে ক্রেতাদের মুখে সন্তুষ্টির হাসি এনে দিয়েছেন।

সিনচিয়াংয়ের উইগুর জাতির  মেয়ে দিলহুমার ২০১৯ সালে সুচৌ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি সুচৌতে নিজস্ব ব্রাইডাল  ব্র্যান্ড  প্রতিষ্ঠা করেন।

 

তিনি নতুন ধরনের ওয়েডিং গাউন তৈরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। ঐতিহ্যবাহী উইগুর এটলাস নকশা ও স্থানীয় সিনচিয়াং কটনের সমন্বয় সাধন করেন দিলহুমার। লেইস এবং সুতির পোশাকে নিয়ে আসেন আরামদায়ক ও দৃষ্টিনন্দন ওয়েডিং গাউন।

 

 তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তার ওয়েডিং গাউন শুধু সিনচিয়াংয়ের মেয়েরাই কিনবে। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে চীনের বিভিন্ন শহর থেকে ক্রেতারা আগ্রহ প্রকাশ করেন।

 

দিলহুমার ওয়েডিং গাউনে লেসের ব্যবহার করে ফুটিয়ে তোলেন দুর্দান্ত সব ডিজাইন। তিনি তার ক্রেতাদের বয়স, ফিগার, রুচি, সামর্থ্য অনুযায়ী গাউন তৈরি করেন।

দিলহুমার মনে করেন বিয়ের দিনটি একজন নারীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েডিং গাউনটির ছবি চিরদিন্ রয়ে যায়। ওই দিনটিতে ওয়েডিং গাউনে যেন কনেকে সবচেয়ে সুন্দর ও আকর্ষণীয় মনে হয় সেটি চেষ্টা করেন তিনি। তার তৈরি ওয়েডিং গাউন পরে যখন কনের মুখে হাসি ফুটে ওঠে সেটাইকেই নিজের কাজের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার বলে মনে করেন ফ্যাশন ডিজাইনার দিলহুমার সাওদানুফ।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: রহমান

 

ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীর সাফল্য

ক্রীড়াক্ষেত্রে চীনের নারীরা বেশ এগিয়ে আছেন। এশিয়ান অ্যাথলেটিক্সে চীনের যাত্রা শুরু হয়েছে নারীদের জয় দিয়ে।

আবার বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলও সম্প্রতি ভারতের বিরুদ্ধে টিটোয়েন্টি ম্যাচ জিতে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আশার আলো জ্বেলেছে। আবার চীনের দুই কিশোরীও  জাপানের ওয়ার্ল্ড অ্যাকোয়াটিকস চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণজয় করেছেন।

চীনা ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড দল ১২ জুলাই  ব্যাংককে এশিয়ান অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে তাদের যাত্রা শুরু করেছে নারীদের চারশ  মিটার রিলে সোনা এবং তিনটি রৌপ্য পদক দিয়ে।

নারীদের ৪০০ মিটার রিলে ফাইনালে লিয়াং সিয়াওচিং, ওয়েই ইয়ংলি, ইউয়ান ছিছি এবং ক্য মানছি ৪৩.৩৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে চীনের হয়ে শিরোপা জিতেছেন।

এশিয়ান অ্যাথলেটিক্সে নারীদের জ্যাভলিনে, টোকিও অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন লিউ শিয়িং তার প্রথম প্রচেষ্টায় ৬১.৫১ মিটার দিয়ে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। জাপানের মেরিনা সাইতো ৬১.৬৭ মিটারে সোনা জিতেছেন।

একইদিন নারীদের ট্রিপল জাম্পে চাং রুই তার শেষ ১৪.০১ মিটার লাফে চীনা তালিকায় রৌপ্য পদক যোগ করেছেন।

 

এদিকে চীনের দুই কিশোরী-তারকা ছুয়ান হংচান এবং চেন ইউসি নারীদের ১০ মিটার প্ল্যাটফর্ম সিনক্রোনাইজডে তাদের সোনা ধরে রেখেছেন। রোববার জাপানের ফুকুকায় ওয়ার্ল্ড অ্যাকোয়াটিকস চ্যাম্পিয়ানশিপে তারা ধারাবাহিক এ জয় পান।

ছুয়ান এবং চেন, শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধিপত্য বিস্তার করে, ৩৬৯.৮৪ পয়েন্ট স্কোর করে সোনা জেতেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যের আন্দ্রেয়া স্পেনডোলিনি সিরিইক্স এবং লোইস টাউলসনের চেয়ে তারা ৫৮.০৮ পয়েন্টে বেশি স্কোর করেন।

১৬ বছর বয়সী ছুয়ান তিনটি নিখুঁত-১০ ডাইভের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ইভেন্টেও সোনা জেতেন। তবে তিনি উচ্ছ্বসিত ছিলেন তাদের যৌথ পারফরমেন্স নিয়ে।

১৭ বছর বয়সী চেন ব্যক্তিগত ইভেন্টে সতীর্থের কাছে হেরে গেলেও তিনিও খুশি যৌথ পারফরমেন্সে। ২০২৪ সালের প্যারিস অলিম্পিকে দুজনে মিলে চীনকে আরও ভালো ফলাফল এনে দিতে চান।

অন্যদিকে

সম্প্রতি বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল টিটোয়েন্টি সিরিজের শেষ খেলায় ভারতকে হারিয়ে জয় তুলে নেয়। ১৩ জুলাই ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতকে ৪ উইকেটে হারায় বাংলাদেশের নারী দল।

 

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে ১০২ রান করে ভারত। জবাব দিতে নেমে ১০ বল আগেই জয় নিশ্চিত করে টাইগ্রেসরা। এর মাধ্যমে পাঁচ বছর পর ভারতের বিরুদ্ধে জয় পেল বাংলাদেশের মেয়েরা।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: রহমান

 

বিশেষ অলিম্পিকে স্বর্ণ জিতলেন বাংলাদেশী ৪ প্রতিবন্ধী শিশু

 

চারজনের কারোরই বাক ও শ্রবণশক্তি নেই। তার ওপর তাদের সবাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধীও। জন্মগতভাবেই অন্য সব স্বাভাবিক মানুষের মতো জ্ঞান-বুদ্ধি নেই তাদের। যা তাদের পরিচিতি দিয়েছে অটিস্টিক বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু হিসেবে। তবে এই চার মেয়ের স্নায়বিক শক্তি প্রচন্ড। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে এসব শিশুরা গ্রাম্য সামাজিক ব্যবস্থায় অনেকটা ‘অচ্ছুৎ’। কিন্তু তারাই এবার স্পেশাল অলিম্পিকে দেশকে এনে দিলেন স্বর্ণপদক।

 

বলা হচ্ছে- মৌলভীবাজারের মাহিমা আক্তার, তানিয়া আক্তার সুমাইয়া, রিয়া রানী দাশ ও মহিমা খাতুন মীমের কথা। জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত স্পেশাল অলিম্পিকের তিনটি ইভেন্টে নিজেদের অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন তারা। যার মাধ্যমে লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে দু’হাত ভরে সাফল্য নিয়ে এসেছেন।

মেয়েদের এফ ওয়ান ফ্রিস্টাইলে দলীয়ভাবে স্বর্ণ জেতেন মাহিমা আক্তার এবং তিন সহযোগী প্রতিযোগী। সুমাইয়া স্বর্ণ জিতেছেন ১০০ মিটার দৌড়ে। এছাড়া থ্রি-সেভেন এ সাইড ফুটবলের ফাইনালে শক্তিশালী ইসরায়েলকে হারায় বাংলাদেশ। স্বর্ণজয়ী সেই দলে ছিলেন জেলার দুই প্রতিযোগী রিয়া রানী ও মহিমা খাতুন।

গত ১৭-২৫ জুন পর্যন্ত বার্লিনে অনুষ্ঠিত এই অলিম্পিকে বাংলাদেশ থেকে ৭৯ জন খেলোয়াড় অংশ নেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মৌলভীবাজারের চার অ্যাথলেট। সম্প্রতি তাদের এমন সাফল্যের জন্য স্কুলের পক্ষ থেকে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। চারজনই স্কুলটির ভোকেশনাল শাখার শিক্ষার্থী।

প্রতিবেদন : আফরিন মিম

সম্পাদনা: শান্তা মারিয়া

 

চলে গেলেন কবি বুলবুল মহলানবীশ

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। যাবার আগে একটি শোকবার্তা।

বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি, সংগীতশিল্পী, স্বাধীন বাংলাবেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বুলবুল মহলানবীশ ১৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করেছেন। বুলবুল মহলানবীশ একাধারে কবি ও লেখক সংগীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি টেলিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান  উপস্থাপনা করতেন।

আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ পর্বে তিনি স্টুডিওতে এসে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্মৃতিচারণ করেছিলেন। এই গুণী ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে নিবেদন করছি শোক ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।

 

সুপ্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি আমরা।

অনুষ্ঠানটি কেমন লাগছে সে বিষয়ে জানাতে পারেন আমাদের কাছে। আপনাদের যে কোন পরামর্শ, মতামত সাদরে গৃহীত হবে। আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। আবার কথা হবে আগামি সপ্তাহে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়েন।

 

সার্বিক সম্পাদনা : ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: শান্তা মারিয়া, 

অডিও এডিটিং: রফিক বিপুল