বেবেরির মাধ্যমে অনেক উপকৃত হচ্ছে শান সি উপজেলার অধিবাসীরা
2023-07-14 10:08:36


“আজকের আবহাওয়া অনেক ভালো। বেবেরির অনেক গুণ। তুলনামূলকভাবে ভালো। তারপর সড়ক যোগাযোগ সুবিধাজনক। আমরা আজ যে ফল তুলছি, সেগুলো আজই পাঠাতে পারবো। পরের দিন সেগুলো ক্রেতার কাছে পৌছে যাবে।” কথাগুলো বলছিলেন, ওয়েন ছেং জেলার শান সি উপজেলার বেবেরি চাষী লিউ চি ওয়েন।

রাস্তা ভালো হলে উপার্জনও বাড়ে। ওয়েন রুই এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়েন ছেং উপজেলা কৃষি পণ্যের মাধ্যমে অভিন্ন সমৃদ্ধি অর্জনের পথ আরও প্রশস্ত ও বিস্তৃতি করেছে। এটা স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রেখেছে। 

এ সময় আপনি যদি এ অঞ্চলে আসেন, তাহলে পাহাড়ে সবুজ বৃক্ষের মধ্যে টুকরো টুকরো লাল রঙ দেখতে পাবেন। সেটাই বেবেরি ফল। ওয়েন ছেং জেলায় বেবেরি চাষের ইতিহাস দীর্ঘ। এ জেলাকে বেবেরির জন্মস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানে বেবেরির বার্ষিক উত্পাদন ৬ হাজার টন ছাড়িয়ে যায়। বেবেরি পাকলে মাত্র সপ্তাহখানেক বিক্রি করা যায়। ফলটি সময়মতো না তুললে এবং বিক্রি না হলে কৃষক ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই চেচিয়াং কমিউনিকেশনস গ্রুপের ওয়েন ছেং টুন্যাল প্রশাসন কার্যালয় একটি সেবাদল গঠন করেছে। সেবাদলটি হুয়াং থান উপজেলার বেবেরি চাষের কেন্দ্র - লিয়ান থৌ গ্রামে সাহায্য করতে যায়। তারা চাষীদের ফল তোলা ও বিক্রির পাশাপাশি বিখ্যাত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও অন্যান্য সুবিধা কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের সামনে সেগুলো তুলে ধরেন। তাছাড়া তারা বিভিন্ন সড়কে ও এক্সপ্রেসওয়ের সেবাঅঞ্চলে বেবেরির প্রচারমূলক স্লোগান টাঙান এবং সেখান দিয়ে যাতায়াতকারী গাড়ির চালক ও যাত্রীদের মধ্য কুপন বিতরণ করে তাদের ক্রয়ে সাহায্য করেন। এর ফলে বেবেরি বিক্রির সমস্যা সমাধান হয় এবং চাষীদের উপার্জন বাড়ে।

গত ১৮ জুন সকাল নয়টার দিকে লিয়াং থৌ গ্রামের বেবেরি চাষকেন্দ্রে চাং মেই ইং এবং ডেলিভারিম্যান উ চি শেং বেবেরি নিচ্ছিলেন গাড়িতে করে। বেলা ১১টার দিকে বেবেরির ৩০টি বাক্স ঠিকঠাক গ্রাহকের হাতে পৌছে যায়।

ডেলিভারিম্যান উ চি শেং বলেন, “এক ঘন্টার মধ্যে ওয়েন চৌ পৌঁছে যায় বেবেরি। আগে এটা কল্পনাও করতে পারতাম না। আগে আমরা স্থানীয়ভাবে বিক্রি করতাম এ ফল। তখন অনেক কষ্ট হতো, আবার উপার্জন হতো কম।”

জানা গেছে, আগে বাগান থেকে বেবেরি তোলার পর ওয়েন চৌ শহরে নিতে তিন ঘন্টা সময় লাগতো। তাই গ্রাহকের হাতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ফলের চেহারা ও স্বাদ নষ্ট হয়ে যেত। ওয়েন রুই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার পর সে অবস্থার অবসান হয়েছে। আজ সকালে যে ফল পাড়া হচ্ছে, পরদিনই শাংহাই ও হাং চৌসহ নানা শহরের সুপারমার্কেটে সেগুলো পৌঁছে যাচ্ছে। বর্তমানে বেবেরি কানাডা ও ইতালিসহ নানা দেশে বিক্রি হচ্ছে।

ওয়েন রুই এক্সপ্রেসওয়ের প্রসঙ্গ এলে উ ইয়াং গ্রামের প্রধান লি ওয়ান লি আনন্দের সঙ্গে বলেন, “ওয়েন রুই এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার পর গত কয়েক বছরে আমাদের গ্রামে অতিথির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। গ্রামবাসীদের উপার্জনও অনেক বেড়েছে।”

উ ইয়াং গ্রাম বিশ্বের ৭২টি ধন্য স্থানের মধ্যে ষষ্ঠ স্থান পেয়েছে। ২০২৩ সাল নাগাদ গ্রামটিতে পর্যটকের সংখ্যা ৩ লাখ ১০ হাজার পার্সন টাইমস ছাড়িয়ে যায়। ওই সময় পর্যন্ত খাবার-দাবার, হোটেল ও কৃষিপণ্য থেকে পর্যটন আয় ছিল ৩৫ লাখ ইউয়ানের বেশি। বর্তমানে উ ইয়াং গ্রাম হোমস্টে হোটেল-কেন্দ্রিক পর্যটন গ্রামে পরিণত হয়েছে।

ওয়েন রুই এক্সেপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার কারণে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ভীষণ উপকৃত হয়েছে। সুবিধাজনক এক্সপ্রেসওয়ে অনেক পর্যটক আকর্ষণ করছে, যার কারণে এখানে লি বো ওয়েনের হোমটাউন দর্শনীয় স্থান সড়ক যোগাযোগের দিক দিয়ে জাতীয় ৫এ পর্যায়ের দর্শনীয় স্থান হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

পাহাড়ি অঞ্চল থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে চলে যাচ্ছে বেবেরি। বেবেরির মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ অনেক উপকৃত হচ্ছে। ওয়েন ছেং বেবেরি কেবল অঞ্চলটির কৃষি-অর্থনীতি উন্নয়নের প্রতীক নয়, বরং এখানকার কৃষিপণ্যের নেমকার্ডে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় সরকার নানা সুবিধা কাজে লাগিয়ে গ্রামটিকে পুনরুজীবনের পথে দ্রুত এগিয়ে নিচ্ছে, যাতে যত দ্রুত সম্ভব অভিন্ন সমৃদ্ধি অর্জন করা যায়।

রুবি/রহমান