সবুজ নগরীর প্রেমে মাতোয়ারা পর্যটকরা | শেকড়ের গল্প | পর্ব ২৬
2023-07-12 20:25:17

এবারের পর্বে রয়েছে

১. চীনের সবুজ চেহারায় মুগ্ধ পর্যটকরা

২. তুলা চাষে ব্যবহার হচ্ছে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি 

৩. চীনের বাজার মাতাচ্ছে স্পেনের অ্যালমন্ড বাদাম

বিশ্ববাসীকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে একটু একটু করে ভূমিকা রাখছে চীনের অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। পেছনে পড়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলো মুক্তি পাচ্ছে দারিদ্রের শেকল থেকে। দিনশেষে স্বল্প পরিসরের উদ্যোগগুলো দেখছে সফলতার মুখ, হয়ে উঠছে সামগ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুসঙ্গ।

কিন্তু কম সময়ে এত বড় সফলতার গল্প কীভাবে সম্ভব করলো চীন দেশের কৃষকরা? সে গল্পই আপনারা জানতে পারবেন “শেকড়ের গল্প” অনুষ্ঠানে।

 

১. চীনের সবুজ চেহারায় মুগ্ধ পর্যটকরা

পুরো দেশকে সবুজে ঢেকে দিতে দারুণ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে চীন সরকার। পাহাড়, পর্বত, ও জলাভূমি সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হচ্ছে লেক। এগুলো শুধু প্রকৃতিকে অনন্যই করছে না বরং অবসর কাটানোর জন্য মানুষের পছন্দের জায়গা হয়ে উঠছে।                                                

সিসি ন্যাশনাল ওয়েটল্যান্ড পার্ক। চেচিয়াং প্রদেশের হাংচৌয়ের পশ্চিম অংশের এই পার্কটি এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি করেছে, যা শুধু বাইরের পর্যটক নয় স্থানীয় মানুষজনের কাছেও পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে।  

১০০০ হেক্টরের বেশি জায়গা জুড়ে পার্কটি গঠিত ছয়টি জলাধার নিয়ে। এখানে রয়েছে পুকুর, হ্রদ এবং বেশ কয়েকটি জলাভূমি। এখানে চাইলেই পর্যটকরা প্যাডেল বোট চালাতে পারেন এবং জলাভূমির নির্মল পরিবেশে গ্লাইড করতে পারেন।

পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের নানচিং শহরে রয়েছে বিশাল পরিসরের বৃহত্তম পন্ড সাইপ্রেস বন। গরমের দিনগুলোতে এখানে ফোটে বাহারী রঙের পদ্ম ফুল। 

 সব মিলিয়ে এরকম পরিবেশ প্রকৃতি-প্রেমীদের জন্য দারুণ কিছু অনুভূতি তৈরি করে। 

পুরো চীনজুড়েই এমন অসংখ্য জলাভূমি রয়েছে যা প্রকৃতিকে যেমন অনন্য করেছে তেমনি সাধারণ মানুষের ঘুরে বেড়ানোকে আনন্দময় করেছে। উত্তর-পূর্ব চীনের হেইলংচিয়াং প্রদেশের চেনপাও দ্বীপের ওয়েটল্যান্ডটিও এমনই এক মনোমুগ্ধকর জায়গা। প্রকৃতিতে ভালো ভূমিকা রাখায় গেল এক যুগ আগেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে এই জলাভূমি। 

কাংসু ও ছিংহাই প্রদেশের একদম সীমান্তে রয়েছে ছিলিয়ান পর্বত যা চীনের পশ্চিম অংশের জন্য পরিবেশগত নিরাপত্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ ঢাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রীষ্মের সময়ে এই পর্বতটি তার স্বর্গীয় রূপ দেখায়, টেনে আনে পর্যটকদের। 

শুধু পাহাড় পর্বত আর জলাভূমি নয়, চীনে রয়েছে ফরেস্ট পার্কও। পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশের হেফেই ন্যাশনাল পার্ক, যা তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিমভাবে। এটার পরিসর এতই বড়, যা পরিণত হয়েছে পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সাধু পানির লেকে।

প্রকৃতিকে সুরক্ষিত রাখতে এরকম নানা উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। পড়ে থাকা নানান জায়গা এখন পরিণত হয়েছে সবুজ নগরীতে। চীনের দেখানো এই পথে এখন হাঁটতে শুরু করেছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ।

প্রতিবেদন: এইচআরএস অভি

সম্পাদনা: মাহমুদ হাশিম

 

 ২. তুলা চাষে ব্যবহার হচ্ছে স্যাটেলাইট প্রযুক্তি  

বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদক দেশ চীন। আর চীনের প্রধান তুলা উৎপাদনকারী এলাকা উত্তর-পশ্চিম চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াং। এখানকার তুলাই দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হয় বিশ্বজুড়ে।

 

বিস্তৃর্ণ মাঠ। আর সেই মাঠে চলছে প্ল্যান্টার দিয়ে তুলার বীজ বপনের কাজ। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তুলার বীজ বপন করছেন  উত্তর-পশ্চিম চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের ইউলি কাউন্টির কৃষকরা।   

 

সূর্যালোক পরিস্থিতি এবং বিশেষ তাপমাত্রার কারণে  সিনচিয়াং চীনের বৃহত্তম তুলা উৎপাদনকারী এবং বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। কয়েক বছর ধরে সিনচিয়াং তার নিবিড় বড় আকারের তুলা রোপনের উন্নতি করেছে।

দিন যত যাচ্ছে এই অঞ্চলের তুলা চাষ  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। যান্ত্রিক তুলা উৎপাদন থেকে স্মার্ট তুলা উৎপাদনের দিকে যাচ্ছে এই অঞ্চল। 

সিনচিয়াংয়ের মানস কাউন্টিতে, যেখানে ৪৩ হাজার হেক্টর জায়গা জুড়ে তুলার বীজ বপনের কাজ চলছে বেইদৌ নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেমের মাধ্যমে।  কৃষি সরঞ্জামের উন্নতির পাশাপাশি, কৃষকরা একটি নতুন রোপণ পদ্ধতিও গ্রহণ করছে । 

 

প্রতিবেদন: আফরিন মিম

সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

৩. চীনের বাজার মাতাচ্ছে স্পেনের অ্যালমন্ড বাদাম

চীনের বাজারে এখন স্পেনের অ্যালমন্ড বাদামের রমরমা ব্যবসা চলছে। স্পেন থেকে প্রচুর পরিমাণে অ্যালমন্ড রপ্তানি হচ্ছে চীনে। বিশ্বে অ্যালমন্ড উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই স্পেনের অবস্থান। দেশটির অ্যালমন্ড বাগানগুলোতে এখন ফলছে প্রচুর পরিমাণে বাদাম। 

সারি সারি বাদাম গাছের বাগান। এটি  স্পেনের তারাগোনা অঞ্চলের একটি অ্যালমন্ড বাদামের বাগান। স্পেনের অ্যালমন্ড বাদামের দারুণ চাহিদা এখন চীনের বাজারে। 

চীন ও স্পেনের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর স্পেনের এই কৃষিপণ্য স্থান করে নিয়েছে চীনের বাজারে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ হাজার টন এবং ২০৩২ সালের মধ্যে এক লাখ টন  বাদাম চীনের বাজারে রপ্তানি হবে। নতুন এই চুক্তির ফলে স্পেনের অ্যালমন্ড উৎপাদকরা শুধু চীন থেকেই বছরে আয় করবেন ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ।

বিশ্বে অ্যালমন্ড উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রের পরেই স্পেনের অবস্থান। স্পেনের ক্যাটালোনিয়াতে ২৪ হাজারের বেশি উৎপাদক আছে।

বিশ্ববাজারে এই বাদামের চাহিদা দিনে দিনে বাড়ছে। কিন্তু ইউরোপের ভয়াবহ খরা ও শুষ্কতার কারণে ফলন অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে কম পানিতে উৎপাদন কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে।

সম্প্রতি স্পেন, পর্তুগাল যৌথভাবে তিন বছরের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে। এই ক্যাম্পেইন চলবে জার্মানি, ফ্রান্স, পর্তুগাল ও স্পেনে। আইবেরিন উপদ্বীপে অ্যালমন্ড বাদামের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে এই প্রচার অভিযান চলছে।

প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

 

 

 

 

 

 

এটি মূলত চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি বাংলার বাংলাদেশ ব্যুরোর কৃষি বিষয়ক সাপ্তাহিক রেডিও অনুষ্ঠান। যা সঞ্চালনা করছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট এইচ আর এস অভি।

এ অনুষ্ঠানটি আপনারা শুনতে পাবেন বাংলাদেশের রেডিও স্টেশন রেডিও টুডেতে।

শুনতে থাকুন শেকড়ের গল্পের নিত্য নতুন পর্ব । যেখানে খুঁজে পাবেন সফলতা আর সম্ভাবনার নানা দিক। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হোক আপনার দিন বদলের গল্প।

 

পরিকল্পনা ও প্রযোজনা: এইচআরএস অভি

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল 

সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী