যুগের প্রশ্নের জবাব দেয় শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা
2023-07-06 15:30:44


 

৪ জুলাই, ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থায় যোগ দিয়েছে এবং সংস্থার সদস্যসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯টিতে। নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও সহযোগিতার উপর গুরুত্ব দিয়ে সংস্থাটি ইউরেশিয়া ও বিশ্বের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা বয়ে এনেছে।

 

এদিন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশের নেতাদের পরিষদের ২৩তম সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন। শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উন্নয়ন নিয়ে তিনি ৫টি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব, বিশ্ব উন্নয়ন প্রস্তাব ও বিশ্ব সভ্যতা প্রস্তাবও এতে অন্তর্ভুক্ত  হয়েছে। এ প্রস্তাবগুলো সংস্থার টেকসই উন্নয়নের জন্য স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে।

 

প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০ বছর ধরে শাংহাই চেতনার নির্দেশনায় বিশ্বের নানা অঞ্চলের দেশ, নিজের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ও উন্নয়নের পদ্ধতিতে ঐক্যের মাধ্যমে নতুন একটি উন্নয়নের পথ খুঁজে পেয়েছে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা। সেখানে জোটের বদলে অংশীদার, প্রতিদ্বন্দ্বিতার বদলে সংলাপ করা হয়। চীন প্রতিষ্ঠাতা দেশে হিসেবে সংস্থার উন্নয়নে নিজেদের অবদান রাখে। শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠন, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উন্নয়ন, নিরাপত্তা, সভ্যতা, ও বিশ্ব প্রশাসনের ধারণা উত্থাপন করে চীন।

 

বর্তমান বিশ্বে বিশৃঙ্খলার মুখে ঐক্য নাকি বিচ্ছিন্নতা, শান্তি নাকি সংঘর্ষ, সহযোগিতা নাকি প্রতিদ্বন্দ্বিতা? এই প্রশ্ন এসেছে। লোকসংখ্যা ও আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক সংস্থা হিসেবে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থাকে এ প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির গভীর পরিবর্তনে সংস্থার কিছু সদস্য দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন দেখা যায়। বাইরের শক্তি এখানে বিপ্লব প্ররোচিত করছে এবং এতদাঞ্চলের মুখে ঐতিহ্যিক ও অ-ঐতিহ্যিক নিরাপত্তার হুমকি দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি, বিশ্ব অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা ও অনিশ্চয়তা শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশের উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধারকে কঠিন করে তুলেছে।

 

শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্যদের নতুন পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং প্রস্তাব দিয়েছেন। যেমন, সঠিক পথে অবিচল থেকে ঐক্য ও পারস্পরিক আস্থা জোরদার করা, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষা করে অভিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বাস্তব সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার দ্রুততর করা। বিনিময় জোরদার করে মানুষের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ এগিয়ে নেয়া এবং বহুপক্ষবাদ বাস্তবায়ন করে বৈশ্বিক প্রশাসনকে পূর্ণাঙ্গ করে গড়ে তোলা ইত্যাদি।

শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উন্নয়নের ইতিহাস দেখে বোঝা যায়, ঐক্য ও পারস্পরিক আস্থা মূল্যবান একটি সম্পদ এবং সহযোগিতার ভিত্তিও বটে। চীন উল্লেখ করে যে, কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার করে সংলাপের মাধ্যমে মতভেদ দূর করা হবে। এতদাঞ্চলের সামগ্রিক এবং দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থ বিবেচনা করে স্বাধীনভাবে কূটনৈতিক নীতি প্রণয়ন করবে। এ প্রস্তাবগুলো বিভ্রান্তি দূর করা এবং বাইরের হস্তক্ষেপ প্রতিরোধে সহায়ক।

 

এবার শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষসম্মেলনে ইরানকে সদস্য দেশ হিসেবে গ্রহণ করা হয় এবং বেলারুশ এতে যোগদানের স্মারকলিপি স্বাক্ষর করে। জাতিসংঘকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক আইন-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার দৃঢ় সমর্থক শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা এবং এ সংস্থার সম্প্রসারণ বিশ্ব প্রশাসনকে আরও ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

 

বর্তমানে কিছু পশ্চিমা দেশ জোটগত দ্বন্দ্ব লেলিয়ে দিয়েছে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নিজের আধিপত্য রক্ষা করতে চাচ্ছে। সেই তুলনায় শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা সমতা, ঐক্য, সহযোগিতা ও সহনশীল মনোভাবের উদ্যোক্তা। সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ইউরেশিয়া ও বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধি রক্ষায় আরও চালিকাশক্তি যোগাবে এবং যুগের নানা প্রশ্নের জবাবে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা অব্যাহতভাবে উত্তর দিয়ে যাবে।

(শিশির/তৌহিদ)