জুলাই ৩: হংকং মাতৃভূমির অধীনে ফিরে আসার ২৬তম বছরে পদার্পণ করেছে। উক্ত সময়ের মধ্যে হংকং আর্থ-বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে যে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে, তা অনস্বীকার্য। ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ কাঠামোর অধীনে ও কেন্দ্রীয় সরকারের দৃঢ় শক্তিশালী নেতৃত্ব, হংকংয়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়ে ইতোমধ্যেই।
প্রথমত, একটি আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র হিসাবে, হংকংয়ের একটি ভালো আর্থিক ব্যবস্থা ও একটি উন্মুক্ত বাজার-পরিবেশ রয়েছে, যা অনেক আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ও করছে।
“হংকংয়ের আর্থিক শিল্প বেশ উন্নত; সিকিউরিটিজ, বীমা ও সম্পদব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক শক্তি প্রবল; এটি বিশ্বকে দক্ষ ও কার্যকর, নিরাপদ ও স্থিতিশীল আর্থিক পরিষেবা দিয়ে আসছে। এটি শুধুমাত্র হংকংয়ের উন্নয়নের জন্যই কল্যাণকর নয়, বরং চীনের মূল ভূখণ্ড এবং অন্যান্য দেশগুলোর জন্যও সুবিধাজনক।”
দ্বিতীয়ত, বিশ্বের অন্যতম অবাধ অর্থনৈতিক সত্ত্বা হিসাবে, হংকং এর কম করের হার এবং সহজ ব্যবসায়িক পরিবেশের ওপর নির্ভর করে বিপুল বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে আকৃষ্ট করেছে। বহু আন্তর্জাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান হংকংয়ে নিজেদের সদর দফতর বা আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।
“এই উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক নীতি হংকংকে বৈশ্বিক বাণিজ্য ও সরবরাহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করেছে। হংকং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য একটি কার্যকর ও সুবিধাজনক চ্যানেল প্রদান করেছে। একই সঙ্গে, হংকং সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক অবাধ বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির একীকরণ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত ২৬ বছরে, হংকং মূল ভূখণ্ডের সাথে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা চালিয়ে আসছে। অনেক দেশ ও অঞ্চলের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে হংকং। ভবিষ্যতে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের আওতায়, হংকং একটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
উপরন্তু, চীনের মূল ভূখণ্ড এবং বিশ্বের মধ্যে একটি সেতু হিসাবে, হংকং কেবল যে মূল ভূভাগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার, তা নয়, বরং বিদেশী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর চীনা বাজারে প্রবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারও বটে।
“একটি ‘সুপার সংযোগকারী’ হিসাবে হংকং চীনের মূল ভূভাগের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সাথে সংযোগের জন্য একটি ভাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এটি শিল্পকাঠামোর আপগ্রেডেশান ও নব্যতাপ্রবর্তনে দক্ষতা বাড়ানোর কাজকে এগিয়ে নিয়েছে। পাশাপাশি, হংকংয়ের আইনি পরিবেশ এবং মেধাসম্পত্তি সুরক্ষাও চীনা বাজারে আন্তর্জাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা বাড়িয়েছে।”
সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে, হংকং মাতৃভূমিতে ফিরে আসার পর বিগত ২৬ বছরে, ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ আওতায় ও কেন্দ্রীয় সরকারের শক্তিশালী নেতৃত্বে, অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
“ভবিষ্যতে হংকং কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চল এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে অংশগ্রহণ করবে। উচ্চমানের উন্নয়ন প্রচার করা, একটি আধুনিক ও শক্তিশালী দেশ গঠন করা, এবং চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানে আরও বেশি অবদান রাখার ক্ষেত্রে আরও বড় ভূমিকা রাখবে হংকং’। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)