ইউরোপীয় বন্দরগুলোতে সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে চীনা কোম্পানি
2023-07-03 10:40:31

“আমরা ইউরোপের বহু বন্দরের সঙ্গে দীর্ঘদিন গভীর সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছি। অনেক ক্লায়েন্ট আমাদেরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতামূলক অংশীদার হিসেবে দেখে। “সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসের রটারডামে অনুষ্ঠিত টিওসি ইউরোপে চীনের বন্দর সরঞ্জাম উত্পাদনের নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান—শাংহাই জেনহুয়া পোর্ট মেশিনারি কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট লিউ ছেংইয়ুন এসব কথা বলেছেন।

টিওসি ইউরোপ হলো ইউরোপের বন্দর খাতে বার্ষিক বৃহদাকার মেলা। চলতি বছরের মেলায় জেনহুয়া, নানহুয়া ইলেকট্রনিক্স কোং, লিমিটেড, শাংহাই ওয়েস্টওয়েল এবং বেইজিং ক্যাথে নেবুলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কোং, লিমিটেড (ক্যাথে নেবুলা)সহ চীনা প্রতিষ্ঠান ইউরোপের প্রতিপক্ষ ও অংশীদারদের জন্য বন্দরের সরঞ্জাম উত্পাদন খাতে চীনা প্রতিষ্ঠানের বাস্তব শক্তি ও সর্বাধুনিক পণ্য প্রদর্শন করেছে।

 

নৌপরিবহন খাতের বৃহত্তম কোম্পানি ডেনমার্ক মারস্ক (MAERSK) দূর-প্রাচ্য জোটের সমন্বয়ক নিলস লুড মেলায় জানান, বন্দর সরঞ্জাম উত্পাদনের ক্ষেত্রে চীনা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের প্রযুক্তিগত মান আছে। বিদ্যুতায়ন ও নতুন জ্বালানিচালিত ব্যাটারি খাতের আরো অগ্রগতি হয়েছে।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আর্থিক অস্থিরতা, কোভিড মহামারী, সরঞ্জাম ও মানবশক্তিসহ বিভিন্ন জটিল উপাদান ইউরোপের বিভিন্ন বন্দরদের জটিল করে তুলেছে এবং সরবরাহ চেইনকে অস্থির করেছে। “এক অঞ্চল, এক পথ” কাঠামোতে আরো বেশি চীনা প্রতিষ্ঠান ইউরোপের বন্দরের সঙ্গে গভীর সহযোগিতা করেছে এবং সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়তা দিয়েছে।

 

জানা গেছে, ইউরোপে জেনহুয়া ২৪ বছর ধরে কাজ করছে। জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ব্রিটেন, স্পেন ও ফ্রান্সসহ ১৯টি ইউরোপীয় দেশের প্রায় এক হাজার বন্দরে সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে এবং এসব ইউরোপীয় বন্দরের দীর্ঘমেয়াদী সরঞ্জাম সরবরাহকারী দেশ চীন।

 

তা ছাড়া জেনহুয়া রটারডাম, ইতালির ভাদো, গ্রিসের পিরায়েউস বন্দর এবং ব্রিটিশ লিভারপুলসহ বিভিন্ন বন্দরের স্বয়ংক্রিয় কন্টেইরার টার্মিনাল নির্মাণে অংশ নিয়েছে। লিউ ছেংইয়ুন বলেন, বর্তমানে আমাদের উত্পাদিত বন্দরের যন্ত্র, তীরের সেতু ও মাঠের সেতু ইত্যাদি সরঞ্জাম ইউরোপের বিভিন্ন বন্দর ও জাহাজঘাটে ব্যবহার করা হচ্ছে।

কোভিড মহামারী চলাকালে জেনহুয়া’র দল বিভিন্ন রকম চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করেছে, সুষ্ঠুভাবে হামবুর্গ, রটারডাম ও ডানকার্কসহ ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ও জাহাজঘাটের তীরে সেতু হস্তান্তর কাজ সম্পন্ন করেছে।

 

লুড আরো জানান, মারস্ক চীনা বাজারের ওপর গুরুত্ব দেয়। জেনহুয়া’র সঙ্গে কার্যক্রমের সহযোগিতার ইতিহাস ২০ বছরের বেশি। মহামারী চলাকালে জেনহুয়া’র মতো চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক কঠিন পরিস্থিতি অতিক্রম করেছে। ফলে গুণমান ও পরিমাণে ক্লায়েন্টদের সময়োচিত পণ্য সরবরাহ করেছে এবং সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

 

লিউ ছেংইয়ুন বলেন, আমরা সময়মতো বন্দরের যন্ত্রপাতি হস্তান্তর করেছি। তাদের জাহাজঘাটের স্বাভাবিক কাজ চালু এবং বিশ্বের সরবরাহ চেইনে ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছি।

 

মেলায় জেনহুয়া’র বৈদ্যুতিক স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, কার্ড সংগ্রহের স্বয়ংক্রিয় লাইব্রেরি এবং খালি কন্টেইনার আলাদা করা-সহ বিভিন্ন নতুন বিষয় সবার মনোযোগ আকর্ষণ করে। লিউ ছেংইয়ুন আরো বলেন, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন বন্দর অপারেটর পরপর ডিকার্বনাইজেশন এবং নির্গমন হ্রাস পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। ভবিষ্যতে সরঞ্জাম উত্পাদন এবং অপারেটিং প্রক্রিয়ায় কার্বন হ্রাস চাহিদা আরো বেশি হবে। তিনি মনে করেন, নতুন জ্বালানি খাতে চীনা প্রতিষ্ঠানের সুবিধা আছে এবং ইউরোপের বন্দর নিম্ন-কার্বন পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি রূপান্তরের মতো লক্ষ্যবস্তু বাস্তবায়নে সাহায্য করতে পারবে।

 

তিনি আরও বলেন, “বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠানের উচিত সহযোগিতা জোরদার করে, সুযোগ-সুবিধাগুলো ভাগাভাগি করা এবং বিশ্বে আরো বলিষ্ঠ সরবরাহ চেইন প্রতিষ্ঠার কাজ বেগবান করা।

(প্রেমা/তৌহিদ)