‘তারুণ্যের অগ্রযাত্রা’ পর্ব ২৪
2023-06-28 19:05:55

     

‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী।  দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার প্রধান হাতিয়ার তারুণ্য। তরুণরা চাইলেই পারে সমাজকে বদলে দিতে। এজন্য দরকার তাদের চিন্তা ও মেধার সমন্বয়। চীন ও বাংলাদেশের তরুণদের অফুরান সম্ভাবনার কথা তুলে ধরবো এই অনুষ্ঠানে। তরুণদের সৃজনশীলতার গল্পগাঁথা নিয়েই সাজানো হয়েছে আমাদের তারুণ্যের অগ্রযাত্রা।     

১.

তারুণ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট সাহস। সাহস নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিলে সেটা ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল দেয় বলে মন্তব্য করেছেন চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি কর্নফুলী টানেল প্রকল্পের চুক্তি বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক লি চুনফেং। সম্প্রতি চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

 

 

লি চুনফেং, বাংলাদেশে আছেন ৬ বছর ধরে। চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি কর্নফুলী টানেল প্রকল্পের চুক্তি বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৭ সালে এই তরুণ প্রথম বাংলাদেশে আসেন।

‘হুনান প্রদেশে আমার জন্ম। আমার বাবা ও দাদা কৃষক ছিলেন। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর দেশের বাইরে কোথাও কাজ করার ইচ্ছে ছিলো আমার।’

 

 

এরই মধ্যে বাংলাদেশিদের সঙ্গে তার গড়ে উঠেছে বেশ সখ্যতা।  

 

‘আমি যখন প্রথম বাংলাদেশে আসি, পরিবেশ, প্রকৃতি, মানুষ কেমন হবে এ সব নিয়ে আমি একটু চিন্তিত ছিলাম। কিন্তু কাজ শুরুর পর বুঝতে পারলাম, তারা খুব বন্ধুত্বসুলভ ও অতিথিপরায়ণ। বাংলাদেশ খুব বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ। আমি যেখানেই গিয়েছি বাংলাদেশিরা বিদেশিদের প্রতি খুব আন্তরিক। বিশেষ করে আমার মনে হয় চীনাদের তারা খুব পছন্দ করেন। আমি যেহেতু ৬ বছর ধরে এ দেশে আছি, আমার চোখের সামনে এই কয়েক বছরে দেশটির অনেক উন্নয়ন দেখেছি।’

বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্কে জানতে চাইলে লি চুনফেং বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক খুব গভীর। উভয় দেশই অর্থনৈতিক কার্যকলাপ ও সাংস্কৃতিক বিনিময় আরো বাড়াতে কাজ করছে বলে জানান তিনি।   

 

জীবনে তারুণ্যের সময়টা যে কোনো সাহসী উদ্যোগ নেয়ার জন্য উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন এই তরুণ। সাহস নিয়ে যে কোনো পদক্ষেপ নিলে সেটা ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল দেয় বলেও মনে করেন তিনি।

 

 

একজন তরুণ কর্মকর্তা হিসেবে দু’দেশের তরুণ প্রজন্ম নিয়ে জানতে চাইলে তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুই দেশের সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।

 

‘অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীন যাচ্ছে পড়াশোনা করতে, আবার চীনা শিক্ষার্থীরাও বাংলাদেশে আসছে কাজ করছে। বাংলাদেশে চীনা ভাষা শেখানোর বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আছে। চীনা ভাষা শেখার মাধ্যমে অনেক তরুণ চীনা প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। আবার বাংলাদেশে কোনো চীনা প্রকল্প কাজ শুরু করলে দুই দেশের তরুণ চাকরি প্রার্থীদের বেশি সুযোগ দেয়া হয়। ২ থেকে ৩ বছর কাজ করার পর তারা বেশ সুদক্ষ হয়ে উঠে- যা তাদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠনে খুব সহায়ক হয়। এটা উভয় দেশের তরুণদের জন্যই খুব ইতিবাচক দিক।’

 

কঠোর পরিশ্রম ও সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় এই উদ্যমী তরুণ লি চুনফেংয়ের।

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

সম্পাদকঃ মাহমুদ হাশিম

 

২.  চীনের কমিউনিস্ট যুব লীগের ১৯তম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

 

সম্প্রতি বেইজিংয়ের মহাগণভবনে অনুষ্ঠিত হয় চীনের কমিউনিস্ট যুব লীগ-সিওয়াইএলসি’র ১৯তম জাতীয় কংগ্রেস। কংগ্রেসে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানাতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং, চাও লেচি, ওয়াং হুনিং, তিং সুয়েশিয়াং এবং লি শিসহ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি) ও রাষ্ট্রীয় নেতারা। সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কংগ্রেসে বক্তব্য রাখেন ছাই ছি।

 

অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে তুমুল করতালিতে স্বাগত জানানো হয় সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট সি এবং অন্য নেতাদের। ৭ কোটি ৩০ লাখের বেশি সিওয়াইএলসি সদস্যের পক্ষ থেকে সারা দেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার প্রতিনিধি কংগ্রেসে যোগ দেন।

ছাই তার বক্তব্যে বলেন, সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির শক্তিশালী নেতৃত্বে সিওয়াইএলসি তার ১৮তম জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে নতুন যুগের জন্য চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্র বিষয়ে সি চিনপিংয়ের চিন্তাধারাকে তাদের দিকনির্দেশনা হিসাবে গ্রহণ করেছে। সিওয়াইএলসি তার রাজনৈতিক চেতনা, অগ্রসরমান প্রকৃতি এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতাকে শক্তিশালী করেছে এবং এর নেতৃত্ব, সংগঠন ও সেবাগুলোকে উন্নত করেছে।

 

তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে একটি মহান আধুনিক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে চীন দ্বিতীয় শতবর্ষের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, তাকে উপলব্ধি করা এবং আধুনিকীকরণের চীনা পথের মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রে চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণকে এগিয়ে নেওয়া সিপিসির মূল কর্তব্য এবং চীনের যুব সমাজের আন্দোলনের মূল প্রতিপাদ্য।

 

আদর্শ, দায়িত্ববোধ, দৃঢ়তা ও নিষ্ঠার সঙ্গে নতুন যুগের মহান তরুণ প্রজন্ম হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে যুবকদের প্রতি আহ্বান জানান ছাই। তিনি বলেন, সময় ও ইতিহাসের যোগ্য এবং জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন ফলাফল অর্জনের জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টা চালাতে হবে তরুণ প্রজন্মকে।

 

দেশের তরুণদের আরও একত্রিত করতে, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে জন্য এবং নতুন যুগে আরও বেশি অবদান রাখতে সিওয়াইএলসি’র প্রতি আহ্বান জানান ছাই।

 

অল-চায়না ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নের (এসিএফটিইউ) নেতৃস্থানীয় সদস্যগোষ্ঠীর সেক্রেটারি সু লিউপিং এসিএফটিইউ, অল-চায়না উইমেনস ফেডারেশন, চায়না ফেডারেশন অব লিটারারি অ্যান্ড আর্ট সার্কেল এবং অন্যান্য গণসংগঠনের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানান।

ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখতে এবং নতুন যুগে গণসংগঠনগুলোতে দলীয় কাজের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় রচনার জন্য তাদের শক্তিকে সম্পূর্ণরূপে কাজে লাগানোর জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

 

সিওয়াইএলসি’র ১৮তম কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কংগ্রেসের প্রেসিডিয়ামের স্থায়ী কমিটির সদস্য এ তুং তরুণদের সম্পর্কিত কাজ, তরুণদের জন্য তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক দিকনির্দেশনাকে শক্তিশালী করা এবং তরুণদের গতিশীল করার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পেশ করেন কংগ্রেসে।

 

সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির সচিবালয়ের সদস্য এবং জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটি, রাষ্ট্রীয় পরিষদ, গণরাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটি এবং কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের কর্মকর্তারা এ কংগ্রেসে যোগ দেন।

 

প্রতিবেদকঃশিহাবুর রহমান

সম্পাদকঃরওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

৩. চিয়াংসুর ক্যাম্পিং মিউজিক ফেস্টিভ্যাল তরুণদের পদচারণায় মুখোর

 

পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের একটি সুন্দর উপকূলীয় শহরে দুই দিনের ক্যাম্পিং মিউজিক ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ড্রাগন বোট ফেস্টিভ্যালের ছুটি শেষ হতে না হতেই অনুষ্ঠিত এই উৎসব লক্ষাধিক সঙ্গীতপ্রেমীকে ভীষণ আকৃষ্ট করে।  লিয়ানইয়ুনকাং শহরে আয়োজিত এই উৎসবে সবচেয়ে বেশি উপভোগ করতে দেখা যায় তরুণ সঙ্গীতপ্রেমিদের।

 

উৎসবে ছিলো বিভিন্ন রকম মুখরোচক খাবার, যা তরুণ পর্যটকদের স্বাদ পূরণের পাশাপাশি আনন্দ উপভোগের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।

"এই ধরনের প্রাণবন্ত এবং সৃজনশীল ইভেন্ট তরুণদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয় বলে জানান এখানে ঘুরতে আসা চেং ওয়েনাও নামে এক পর্যটক। 

 

প্রতিবারেই চীনে খোলা প্রাঙ্গনে কোনো লাইভ গানের কনসার্ট বা উৎসবে তরুণদের আনাগোনা বেশি দেখা যায়। 

 

ফেস্টিভ্যাল চলাকালীন প্রতিদিন জনপ্রিয় ব্যান্ডের অর্ধশতাধিক গান মঞ্চস্থ হয়, যা আনুমানিক ৪০ হাজার দর্শককে আকর্ষণ করে। এটি স্থানীয় ব্যবসা এবং পর্যটন কর্তৃপক্ষের জন্যও একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। 

 

প্রতিবেদকঃ রওজায়ে জাবিদা ঐশী

কণ্ঠঃ নাজমুল হক রাইয়ান

আমাদের ‘তারুণ্যের অগযাত্রা’ আজ এই পর্যন্তই । পরবর্তী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি রওজায়ে জাবিদা ঐশী। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভকামনা সবার জন্য।

 

পরিকল্পনা ,পরিচালনা ও সঞ্চালনা : রওজায়ে জাবিদা ঐশী

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল ও রওজায়ে জাবিদা ঐশী  

সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী