চীনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক-শিক্ষার্থীর গ্রামাঞ্চলে কাজ করার গল্প
2023-06-26 16:14:29

সম্প্রতি চীনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের শিক্ষার্থীদের চিঠির জবাব দেন চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। জবাবি চিঠিতে তিনি লিখেছেন, সবার যৌথ প্রয়াসে হ্যপেই প্রদেশের ছুচৌ এলাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ স্থাপিত হয়েছে, যা গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভুমিকা রাখছে। এটা আনন্দদায়ক খবর। তোমাদের চিঠিতে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে নিজেদের দক্ষতা ব্যবহারের আগ্রহের কথা ফুটে উঠেছে, যা প্রশংসনীয়। নতুন যুগে চীনা যুবকদের এমন চেতনা থাকা খুবই প্রয়োজন।

চীনের প্রকৌশল একাডেমির শিক্ষাবিদ চাং ফু সুও এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের প্রতিষ্ঠাতা। কৃষি বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থীদের কৃষি-উত্পাদনস্থলে পাঠিয়ে তত্ত্ব ও বাস্তব অনুশীলনের সংমিশ্রণ ঘটানো তাঁর মূল উদ্দেশ্য। তিনি আশা করেন, এতে গ্রামাঞ্চলে কৃষি-উন্নয়নের পথে বিদ্যমান সমস্যাগুলো মোকাবিলা করা যাবে।

বস্তুত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে পার্থক্য, বিভিন্ন মেজরের মধ্যে পার্থক্য, এবং শিক্ষাদান ও বিজ্ঞান-গবেষণার পথে বাধা নির্মূলের কাজ চলছে।

শিক্ষাবিদ চাং বলেন, প্রতিবছরের কৃষি-মৌসুমে শিক্ষার্থীরা কৃষকদের সাথে কৃষিক্ষেতে ফসল সংগ্রহের কাজ করে থাকে। গম, ভূট্টাসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা এবং মাটির গঠন পরীক্ষা করাসহ বিভিন্ন কাজ করতে হয় তাদের। এ প্রাঙ্গনে বিগত ১৪ বছর ধরে এমন ধারা কাজ হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের জীবনযাপন ও লেখাপড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ। কেউ কেউ মনে করেন, তাদের মাস্টার্সের জীবন প্রায় পুরোটাই গ্রামীণ পরিবেশে কেটেছে কেউ কেউ মনে করেন, এখানকার পড়াশোনা ও জীবন তাদের মনে গভীর দাগ কেটেছে।

যখন প্রথমবারের মতো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা হয়, তখন স্থানীয় গ্রামবাসীরা অনেক অবাহ হয়েছিলেন। কারণ, তাঁরা কখনও বড় শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চাষাবাদ করতে দেখেননি। চীনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও পরিবেশ একাডেমির ২০১৯ সালের মাস্টার্স শিক্ষার্থী চু কাও সুয়ান ছুচৌ’র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ সম্পর্কে বলেন, “আমাদের গবেষণা পুরোপুরি ছিল মুরগীর বিষ্টা নিয়ে।” এ গ্রামে আসার আগে তিনি কখনও ভাবেননি যে, তাঁর দৈনিক গবেষণাকাজের সাথে মুরগীর বিষ্টা জড়িত থাকবে।

মুরগি লালনপালন ছুচৌ জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি শিল্প। তবে, এর ফলে সৃষ্ট দূষিত পানি ও বিষ্টা আশেপাশের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। স্থানীয় মাটি ও ভূগর্ভস্থ পানির উৎস দূষিত হওয়ার ঝুঁকিও আছে। তাই মুরগি লালনপালনে সর্বপ্রথমে বিষ্টা-দূষণ সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। শিক্ষার্থী চু কাও সুয়ানের মেজর স্থানীয় কৃষির আবর্জনা পুনঃব্যবহার করা এবং মুরগির বিষ্টা থেকে সৃষ্ট দূষণ হ্রাস করা। এভাবে পরিবেশ সংরক্ষণের সাথে সাথে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়নও নিশ্চিত করা যায়।

শুরুর দিকে শিক্ষার্থী চু বইয়ের জ্ঞান অনুসারে, বিভিন্ন ধরনের নির্ভুল সরঞ্জাম ব্যবহার করে গবেষণাকাজ করতে থাকেন। তবে, একসময় তিনি খেয়াল করেন যে, বইয়ের সফল পরীক্ষার নমুনা মুরগি লালনপালনকারী কৃষকদের জন্য উপযোগী নয়। তাঁরা কোনো হাইটেক নির্ভুল সরঞ্জাম কিনতে পারেন না। ছুচৌ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের গবেষণাকাজের জন্য একটি ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

পরে শিক্ষার্থী চু আশেপাশের আনচাই জেলার বৃহত্তম সার শোধনাগারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট গবেষণাকাজ করেন। মুরগির বিষ্টায় সালফাইডের পরিমাণ বেশি। তাই, বিভিন্ন ধরনের জৈব সারের মধ্যে এর দুর্গন্ধ সবচেয়ে বেশি। এ অভিজ্ঞতা স্মরণ করে চু বলেন, “আমার আশেপাশে অ্যামোনিয়া গ্যাসের তীব্র গন্ধ। মুরগির বিষ্টা থেকে তৈরি সারের মধ্য দিয়ে হাঁটাহাটির সময় আমার নাক, চোখ আর শ্বাসনালী দুর্গন্ধ দ্বারা আক্রান্ত হয়। সেসময় আমার শরীরে সবসময় দুর্গন্ধ অনুভব করতাম।” তবে তিনি এ কথাও জানালেন যে, এভাবে কাজ না-করলে তাঁর পক্ষে বাস্তব পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব হতো না। আর পরিসংখ্যান বা তথ্য-উপাত্ত ছাড়া সংশ্লিষ্ট সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণার পর তিনি কার্যকরভাবে মুরগির বিষ্টা থেকে তৈরি সারের দূষণ কমিয়ে আনার পদ্ধতি খুঁজে পান। তাঁর গবেষণার ফল চীনের জাতীয় পেটেন্ট পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

শিক্ষাবিদ চাং ফু সুও বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণে আসা ৭০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীর সবাই মনোযোগ দিয়ে নিজেদের গবেষণা-কাজ করে থাকে। কেউ আপস করেন না এবং কাজ মাঝপথে ছেড়ে দেয় না। এটা তাঁর জন্য বেশ আনন্দের ব্যাপার। শিক্ষার্থীরা আদর্শ ও দায়িত্ব নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণে তাঁদের প্রিয় গবেষণার কাজ করে। এ কাজ তাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা শিক্ষাবিদ চাংকে বলেন, গ্রামাঞ্চলের অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা অনেক দুর্বল, এখানে কোনো পরিস্কার টয়লেট বা স্নান কক্ষ পাওয়া যাবে না। এটা বড় শহর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, ধীরে ধীরে শিক্ষার্থীরা গ্রামীণ জীবনের সাথে নিজেদের মানিয়ে নেয়। তাদের মধ্যে অনেকে স্নাতক হওয়ার পর গ্রামে চাকরি নিয়েছেন।

শিক্ষাবিদ চাং যুবশিক্ষার্থীদের গ্রামাঞ্চলের কাজের কথা খাতায় লিখে রাখেন। তাঁর সে খাতা ক্রমশ স্ফীত হয়। এতে শিক্ষার্থীদের গ্রামাঞ্চলের গবেষণা ও জীবনযাপনের বিভিন্ন দিক লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। চাংয়ের দৃষ্টিতে এমন কাজ অনেক তাত্পর্যপূর্ণ। কৃষিক্ষেতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য, গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া এবং কৃষকদের উত্পাদনকাজে সহায়তা করা। কেবল শিক্ষার্থীদের কৃষিকাজ করতে পাঠানো এবং তাঁদের ফিল্ড জরিপে গিয়ে দক্ষতা অর্জন করতে দেওয়া এ প্রক্রিয়ার একমাত্র লক্ষ্য নয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৃজনশীলতা, সামাজিক পরিষেবা ও দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা। এভাবে কৃষকরা নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করার, নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে নিজেদের আয় বাড়ানোর সুযোগ পান এবং শিক্ষার্থীরাও গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

এ পর্যন্ত চীনের ৩০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৩০০টিরও বেশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ স্থাপন করা হয়েছে। তারা এ পদ্ধতিতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কৃষিকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে কৃষিকাজের উপযোগী করে রূপান্তর করছে। এটা চীনের আধুনিক কৃষির একটি অংশে পরিণত হয়েছে।

ছুচৌ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী পেং ক্য সিন বলেন, “গবেষণার প্রক্রিয়ায় আমরা বাস্তব পদ্ধতি ও মূল ধারণা বুঝতে পেরেছি। কিভাবে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কাজ করার মাধ্যমে, ভিন্ন পরিবেশে জীবনযাপন ও পড়াশোনা সমন্বয় করা যায়, তা আমরা শিখেছি।” শিক্ষার্থী পেং প্রায় ৪০০ দিন ছুচৌ গ্রামে কাটিয়েছেন। তিনি স্বভাবে অন্তর্মুখী ও শান্ত। তবে, গ্রামবাসীদের সাথে পরিচিত হওয়ার পর এখন অনেকের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব হয়েছে। তিনি স্থানীয় কৃষকদের সামনে সবুজ প্রযুক্তির চেতনা প্রচার করেন। এটি পেংয়ের জন্য বড় অর্জন।

চীনের ইয়ুননান প্রদেশের তালি জেলার কুশেং গ্রামে আরেকটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ আছে। সেখানে মাস্টার্স শিক্ষার্থী থাং পো ওয়েন সম্পদের ব্যবহার ও উদ্ভিদ সংরক্ষণ মেজরে পড়াশোনা করেন। বৃষ্টির দিনে তিনি বিভিন্ন ধরনের বৃষ্টির নমুনা সংগ্রহ করেন। প্রবল বৃষ্টিতেও তিনি বাইরে বেরিয়ে যান নমুনা সংগ্রহ করতে।

কেন তাকে বৃষ্টির দিনে বাইরে যেতে হয়? এরহাই নদীর অববাহিকায় কিছু দূষণের উত্স জানার চেষ্টা ছিল এর কারণ। বৃষ্টির সময় এই এলাকার দূষিত পানি গ্রাম ও কৃষিক্ষেতের চ্যানেলের মাধ্যমে এরহাই নদীতে পড়ছিল। তাই এ সমস্যা মোকাবিলায় ২০২২ সালে শিক্ষাবিদ চাং ফু সুও’র নেতৃত্বে কুশেং গ্রামের এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণ আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়।

শিক্ষার্থী থাং বলেন, “কেবল বৃষ্টির সময় আমরা যত বেশি ধরনের সম্ভব পানির নমুনা সংগ্রহ করে থাকি।” সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে থাং বলেন, বৃষ্টির শব্দ শুনলেই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে বাইরে যেতে প্রস্তুত। একবার ভোরবেলায় বৃষ্টি পড়ছিল। তখন মাত্র ৫টা বাজে। তিনি মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে শুয়েছিলেন। কিন্তু বৃষ্টি শব্দ শুনে তিনি বিছানা ছাড়েন এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাইরে যান। বাইরে গিয়ে দেখেন প্রাঙ্গণের বাইরে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আগেই সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন।

কুশেং গ্রামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণে মাস্টার্স শিক্ষার্থী লিউ শাং ই স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের ইংরেজি পড়ান। ক্লাসশেষে ছাত্রছাত্রীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করে, “শিক্ষক, আপনি কি আবার আমাদের স্কুলে আসবেন?” তিনি চট করে উত্তর দেন, ‘হ্যাঁ’। এ সম্পর্কে শিক্ষার্থী লিউ বলেন, শহর থেকে আসা অনেকে গ্রামাঞ্চলের জীবনকে ভয় পায়। তবে, কৃষিকাজ ও গবেষণার সাথে যুক্ত শিক্ষার্থীদের সে ভয় শীঘ্রই কেটে যায়।

ইয়ুননান প্রদেশের কুশেং গ্রামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের মূল কাজ এরহাই নদীর পরিবেশ সংরক্ষণ করা এবং স্থানীয় গ্রামবাসীদের কৃষিকাজকে আরও পরিচ্ছন্ন করা। ফিল্ড জরিপের সময় লিউ লক্ষ্য করেন, কুশেং গ্রামের উন্নয়নে পথে অনেক বাস্তব বাঁধা রয়েছে। যেমন, গ্রামে ব্যাপক বয়স্ক লোক ও বাচ্চার সংখ্যা বেশি; স্থানীয় ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা অব্যাহতভাবে হ্রাস পাচ্ছে; ভালো শিক্ষকের অভাব, ইত্যাদি।

শিক্ষার্থী লিউ মনে করেন, স্থানীয় গ্রামের বাচ্চাদের চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি তাদের আশা-আকাঙ্খার কথা বুঝতে পারেন। সে আশা পূরণে ভূমিকা রাখা তাঁর জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ও তাত্পর্যপূর্ণ ব্যাপার। এর মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চমত্কার থিসিস লেখার চেয়ে অনেক ভালো। গ্রামবাসীদেরকে জ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা এবং মর্যাদাসম্পন্ন আধুনিক কৃষকে পরিণত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

২০০৯ সালে শিক্ষক চাং হং ইয়ান বেইজিং থেকে ছুচৌতে আসেন। তিনি টানা ১৪ বছর ধরে ছুচৌ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণে কাজ করেছেন। তাঁর সামনেই এ প্রাঙ্গণের অনেক উন্নতি হয়েছে। অনেকে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, শিক্ষার্থীরা বেইজিংয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করেছেন, কেন তারা এ গ্রামে থাকতে আগ্রহী? এ সম্পর্কে শিক্ষক চাং বলেন, ১৪ বছর আগে যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের প্রথম দলের মাস্টার্স শিক্ষার্থীরা গ্রামের কৃষিক্ষেতে আসে, তখন তারা একটি ছবি তোলে। সে ছবিতে দেখা যায়, স্থানীয় কৃষকরা জিহ্বা দিয়ে সারের স্বাদ অনুভব করছেন। এভাবে তারা সারের ভালোমন্দ বুঝতে পারেন। তবে সার জিহ্বার জন্য ক্ষতিকর। এ দৃশ্য দেখে শিক্ষার্থীদের অনেকে অবাক হয়। তখন থেকে তারা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের সহায়তা করার ব্রত গ্রহণ করে। নতুন যুগের যুবকরা গ্রামের উন্নয়নে নিজেদের অবদান রাখতে চায়।

গ্রামের ছেলে চু কাও সুয়েন অনার্স ডিগ্রি পাওয়ার পর একটি ভালো চাকরি পেতে চান। তিনি যত বেশি টাকা সম্ভব অর্জন করে সুখী জীবন কাটাতে চান। তবে, গ্রামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রাঙ্গণের কর্মঅভিজ্ঞতা পেয়ে তিনি নতুন সিদ্ধান্ত নেন। তিনি এখন মনে করেন, চাকরি করে মাসিক বেতন বেশ ভালো পাওয়া যাবে, তবে গ্রামের উন্নয়নে অবদান রাখা এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর কাজ চীনের গ্রামাঞ্চলের মানুষের, বিশেষ করে যুবসমাজের জীবন পাল্টে দিতে পারে, যা তাঁর কাছে একটা ভালো চাকরির চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

(সুবর্ণা/আলিম/মুক্তা)