জুন ২৬: চীনের চতুর্দশ জাতীয় কংগ্রেস (এনপিসি)-র স্থায়ী কমিটির তৃতীয় অধিবেশন আজ (সোমবার) বেইজিংয়ে শুরু হয়েছে। এনপিসি’র স্থায়ী কমিটির আইনি কর্মকমিশনের মুখপাত্র চাং থিয়ে ওয়েই সম্প্রতি জানান, এবারের অধিবেশনে বাধামুক্ত পরিবেশ নির্মাণ আইনের খসড়া, বৈদেশিক সম্পর্ক আইনের খসড়া, এবং দেশপ্রেমিক শিক্ষা আইনের খসড়াসহ বেশকিছু বিল যাচাই করা হবে।
‘বাধা-মুক্ত পরিবেশ নির্মাণ’ আইনটি প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের অধিকার ও স্বার্থের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত এবং এটি চীনা সমাজে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল থেকে ২৫ মে পর্যন্ত আইনটির দ্বিতীয় খসড়া এনপিসি জনসাধারণের মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে জনসাধারণের সাধারণ পরামর্শ হচ্ছে: বিদ্যমান বাসস্থানগুলোতে লিফটের মতো বাধা-মুক্ত সুবিধাদি স্থাপনসংশ্লিষ্ট বিধান উন্নত করতে হবে; সরকারি পরিষেবাসংশ্লিষ্ট স্থানে বাধা-মুক্ত সুবিধা, সরঞ্জাম ও পরিষেবার বিধানসংশ্লিষ্ট বিধি উন্নত করতে হবে; এবং বিভিন্ন পণ্যের লেবেলে প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখের নিয়ম উন্নত করতে হবে। এ সম্পর্কে চাং থিয়ে ওয়েই বলেন, আইনটির তৃতীয় খসড়ায় এসব পরামর্শের প্রতিফলন ঘটবে। তিনি বলেন,
(রে ১)
“তৃতীয় খসড়ায় নিম্নলিখিত সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে: প্রথমত, বাধা-মুক্ত পরিবেশ নির্মাণকে বার্ধক্য-বান্ধব সংস্কারকার্যক্রমের সাথে সমন্বয় করা উচিত; দ্বিতীয়ত, জেলা স্তরে বা তার উপরের স্তরের জনগণের সরকারকে লক্ষ্যযুক্ত বাধা-মুক্ত সুবিধাব্যবস্থা সংস্কার পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে ও তা বাস্তবায়ন করতে হবে; তৃতীয়ত, বিদ্যমান বাসস্থানগুলোতে লিফট ও অন্যান্য বাধা-মুক্ত সুবিধা ইনস্টলেশনের বিধান উন্নত করতে হবে; চতুর্থত, ব্রেইল ও লো ভিশন শিক্ষণসংশ্লিষ্ট বই লেখা ও প্রকাশকে উৎসাহিত করার জন্য নতুন বিধান প্রণয়ন করতে হবে; পঞ্চমত, জাদুঘর, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘর এবং অন্যান্য স্থানে বাধা-মুক্ত সুবিধা, সরঞ্জাম ও পরিষেবার সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে; ষষ্ঠত, পণ্যের লেবেলে বিভিন্ন তথ্য ও নির্দেশাবলীসংশ্লিষ্ট বিধান আপডেট করতে হবে।”
এ ছাড়া, বৈদেশিক সম্পর্ক আইনের খসড়া যাচাই করা এবারের অধিবেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যবিষয় এবং মানুষ এ সম্পর্কে জানতেও আগ্রহী। ২০২২ সালের অক্টোবরে আইনটি স্থায়ী কমিটি যাচাই করার পর, আইনি কর্মকমিশন বিভিন্ন স্থানের সরকার, কেন্দ্রীয় কমিটির সংশ্লিষ্ট বিভাগ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও আইনি গবেষণা সংস্থার কাছে পাঠায় তাদের মন্তব্য ও পরামর্শ সংগ্রহের জন্য। ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এনডিসি’র ওয়েবসাইটে জনসাধারণের মতামত সংগ্রহের জন্যও আইনটির খসড়া প্রকাশ করা হয়। সংবিধান ও আইন কমিটি এবং আইনী কর্মকমিশন দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিতদের মতামত শোনার জন্য, সভারও আয়োজন করে এবং গবেষণার জন্য স্থানীয় এলাকায় যায়।
ভূমি-ভিত্তিক দূষণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সামুদ্রিক পরিবেশ সুরক্ষা আইনের সংশোধিত খসড়ার দ্বিতীয় আলোচনায় সংশ্লিষ্ট আইনের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব রাখা হয়েছে। চাং থিয়ে ওয়েবই বলেন,
(রে ২)
“সামুদ্রিক পরিবেশকে প্রভাবিত করে এমন কার্যকলাপে নিয়োজিত যেকোনো সংস্থা বা ব্যক্তিকে সামুদ্রিক পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশগত ক্ষতি প্রতিরোধ ও হ্রাস করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন স্তরের জনগণের সরকার ও তাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে স্থল ও সমুদ্র সমন্বয় নীতি অনুসরণ করতে হবে। স্যুয়ারেজ আউটলেটের দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানকে সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসারে পর্যবেক্ষণ ও স্বয়ংক্রিয় পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। নিকটবর্তী জলাশয়, সমুদ্রে নিকাশীর আউটলেট, পয়ঃনিষ্কাশন পাইপলাইন এবং দূষণের উত্সগুলোর গোটা চেইনব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।”
জানা গেছে, দেশপ্রেমিক শিক্ষা আইনের খসড়া এবং খাদ্য নিরাপত্তা আইনের খসড়াও প্রাথমিক আলোচনার জন্য এই অধিবেশনে পেশ করা হবে। (ছাই/আলিম)