শান্তিরক্ষীদের কথা ভাবলে অনেকের মনে হয়তো পুরুষের ভাবমূর্তি ভেসে ওঠে। তবে শান্তিরক্ষীদের মধ্যে অনেক নারীও রয়েছেন। তাই জেং ছিন তাদের একজন।

তাই জেং ছিন পূর্ব চীনের চিয়াং সু প্রদেশের সু চৌ শহরের আর্থ-বাণিজ্যিক কারিগরি স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি সেনা-জীবন খুব পছন্দ করেন। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে লেবাননে যাওয়া চীনের ২০তম শান্তিরক্ষী বাহিনীর একজন নারী শান্তিরক্ষী হিসেবে তাকে লেবাননে এক বছর মেয়াদে মাইন অপসারণ মিশনে পাঠানো হয়।

মাইন অপসারণ মিশন অনেক ঝুঁকিপূর্ণ এবং সব সময় অনিরাপদ। লেবানন ও ইসরাইল সংলগ্ন সীমান্ত অঞ্চলে বেশ কয়েকবার সশস্ত্র সংঘর্ষ ঘটেছিল। স্থানীয় পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। পাশাপাশি, স্থানীয় ভৌগলিক অবস্থা খুব জটিল। সেখানে অনেক মাইন ছড়িয়ে আছে। তাই এ স্থানে খনন কাজ সাবধান করতে হয়। অনেক দুর্যোগের মুখেও তাই জেং ছিন ও তার কমরেডরা দায়িত্ব পালন থেকে সরে যাননি।

তাই জেং ছিন বলেন, তার জন্য সবচেয়ে আনন্দের কাজ হলো প্রতিদিন মিশন থেকে আসার পর নোটবুকে অপসারিত মাইনের সংখ্যা লিখে রাখা। অনেকগুলো মাইন অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছেন তাই জেং ছিন। এ কাজের জন্য তিনি খুবই গর্বিত।

এ কাজ থেকে কী লাভ করেছেন তিনি? এ প্রশ্নের উত্তরে তাই জেং ছিন বলেন, মাইন অপসারণের পর স্থানীয়রা স্বাধীনভাবে সেখানে পশুপালন এবং চাষবাস করেন। শান্তিরক্ষী মিশন তাদের জন্য স্থিতিশীলতা বয়ে এনেছে এবং শান্তিপূর্ণ ও সুখী জীবন তৈরি করেছে। এটি তার সবচেয়ে বড় পাওয়া।

এ মিশনের মাধ্যমে শান্তিরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। কাজের ফাঁকে সেনারা স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আদান-প্রদান জোরদারে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যার ফলে স্থানীয় লোকজন চীনের সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। 

তাই জেং ছিন বলেন, তাদের আর্মব্যান্ডে যখন চীনের পতাকা দেখতে পান, তখন স্থানীয় লোকজন বলে উঠেন, ‘আই লাভ চায়না।’ সে সময় তাই জেং ছিন অনেক গৌরব বোধ করেন, এবং তাদের সব প্রচেষ্টাকে মূল্যবান মনে করেন।

শান্তিরক্ষী মিশনে  মাইন অপসারণে চমৎকার অবদানের জন্য তাই জেং ছিনকে শান্তি পদক দিয়েছে জাতিসংঘ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাই জেং ছিন সাফল্যের সঙ্গে এক বছরের মিশন শেষ করে তার পরিচিত ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন।

তিনি বলেন, তিনি অব্যাহতভাবে সৈনিকের দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করবেন এবং অধিকতর মানুষকে শান্তিরক্ষা অভিযানের গল্প শোনাবেন।