জুন ২০: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গতকাল (সোমবার) তাঁর দু’দিনব্যাপী চীন সফর শেষ করেছেন। একই দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমরা এখন সঠিক পথে রয়েছি।’ আর পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, চীন বরাবরই যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থিতিশীল ও উন্নত করার ব্যাপারে আন্তরিকতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে আসছে; এখন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিক হবার সময়।
চীন-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতি করতে হলে প্রথমেই মূল সমস্যা খুঁজে বের করতে হবে। ব্লিঙ্কেনের এবারের সফরকালে চীন আন্তরিকভাবে নিজের মনোভাব প্রকাশ করেছে। চীন-মার্কিন সম্পর্কের অবনতির মূলে রয়েছে চীন সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের ভুল ধারণা ও ভুল নীতি। বিষয়টা যুক্তরাষ্ট্রকে গভীরভাবে ভাবতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত চীন সম্পর্কে নিজের ভুল ধারণা সংশোধন করা এবং গ্রহণযোগ্য চীননীতি অনুসরণ করা।
চীন-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের প্রস্তাবিত, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জয়-জয় সহযোগিতার নীতি অনুসরণ করা। এটা স্পষ্ট যে, চীন পশ্চিমাদের আধিপত্যবাদ অনুসরণ করবে না, তাদের দমনমূলক আচরণকেও মেনে নেবে না।
মনে রাখতে হবে, তাইওয়ান হচ্ছে চীন-মর্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। চীন যুক্তরাষ্ট্রকে তিনটি চীন-মার্কিন যৌথ ঘোষণাপত্রে বর্ণিত ‘এক-চীন নীতি’ মেনে চলতে, চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সম্মান করতে, এবং স্পষ্টভাবে ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতা’-র বিরোধিতা করতে বলেছে। তাইওয়ান ইস্যুতে চীন কোনো আপস করবে না—এই বাস্তবতা যুক্তরাষ্ট্রকে বুঝতে হবে।
এ ছাড়াও, চীন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চীন হুমকি তত্ত্ব’ প্রচার থেকে বিরত থাকতে এবং চীনের বিরুদ্ধে অবৈধ একতরফা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতেও বলেছে। চীনের প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে দমন করার চেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়তে হবে বলে বেইজিং জানিয়ে দিয়েছে।
বস্তুত, চীন-মার্কিন সম্পর্ক উন্নত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আশা করা যায় যে, এবার যুক্তরাষ্ট্র তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে এবং আন্তরিকতা ও কাজের মাধ্যমে চীন-মার্কিন সম্পর্ককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেবে। কারণ, চীন-মার্কিন সম্পর্কের উন্নয়ন মূলত নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাজের ওপর। (ছাই/আলিম)