মরুকরণ প্রতিরোধে চীন অব্যাহতভাবে সবুজ বিস্ময় সৃষ্টি করছে
2023-06-19 16:02:37

    

জুন ১৯:সাম্প্রতিক বছরলোতে, চীন ‘বাস্তুসংস্থান সুরক্ষা ও সবুজ উন্নয়নের’ বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। যা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। সবুজায়ন ইতোমধ্যে নতুন যুগে চীনের একটি বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। ব্যাপক আন্তর্জাতিক ব্যক্তি ও গণমাধ্যম তা লক্ষ্য করেছে যে, জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থাপনার নির্মাণ থেকে, জীব-বৈচিত্র্য সুরক্ষা ও মরুকরণ প্রতিরোধ এগিয়ে নেওয়া পর্যন্ত, চীন সবসময় বৈশ্বিক পরিবেশগত সভ্যতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী ও অবদানকারী। এখাতে চীন অব্যাহতভাবে নিজের শক্তি ও মেধা প্রদান করছে। 


 “অসাধারণ! কারণ আমি জানি আগে এখানে মরুভূমি ছিল। তবে এখন এ অঞ্চলে কোনো মরুভূমি নেই, চারদিকে সবুজ রয়েছে।”


জর্জিয়া থেকে তামো নামে একজন ভ্লগার খুপুছি মরুভূমি সফর করার পর এ মন্তব্য করেছেন। খুপুছি মরুভূমি চীনের ওরদোস অঞ্চলে অবস্থিত। যা বেইজিং থেকে সরাসরি মাত্র আটশ’ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। অব্যাহত প্রচেষ্টার পর ওই ১৮.৬ হাজার বর্গ-কিলোমিটার আয়তনের বড় মরুভূমি ইতোমধ্যে সবুজে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে।


শুধু খুপুছি মরুভূমি নয়, মাও উ সু সান সি প্রদেশের ইউ লিনতে অবস্থিত, সেখানেও ‘মরুভূমি থেকে সবুজে পরিণত হওয়ার’ বিস্ময়কর ঘটনা ঘটেছে। 

মুভি ‘আমি ও আমার জন্মস্থানের’ পরিচালক ইউ পাই মেই-এর দৃশ্য ধারণ করার সময় তাঁর কিছু অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মুভিতে কিছু ‘হলুদ বালিতে আকাশ ভরে যাওয়ার’ দৃশ্য রয়েছে। যা সব আমরা তৈরি করেছি। আমরা সান সি প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের সব সাটটি কাউন্টিতে ঘুরেছি, তবে, হলুদ বালির দৃশ্য খুঁজে পাই নি। সব জায়গায় সবুজ দেখা যায়।’


মরুকরণ হচ্ছে বৈশ্বিক গুরুতর পরিবেশগত সংকট, যা সবচেয়ে জরুরি পরিবেশগত সমস্যা। অনেক দেশ ও অঞ্চল এবং জনগণের জীবনে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি তৈরি হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে গুরুতর মরুকরণ সমস্যার মুখে পড়া অন্যতম দেশ চীন। এই সমস্যা প্রতিরোধ করার প্রক্রিয়ায় চীনারা অনেক মনোমুগ্ধকর ঘটনা তৈরি করেছেন এবং অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন। 


সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি- চীনের "তিন উত্তর" বনভূমি প্রকল্পটিকে বৈশ্বিক বনভূমির ‘পরিবেশগত অর্থনীতি প্রদর্শনের এলাকা’ হিসেবে নির্দিষ্ট করেছে। গত জানুয়ারি মাসে ‘নতুন যুগে চীনের সবুজ উন্নয়ন’ শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়। শ্বেতপত্র অনুযায়ী চীনের বনাঞ্চলের এলাকা ও বনভূমি মজুদ—এই দুটি খাতের হার একটানা ৩০ বছরেও বেশি সময় ধরে উন্নত হচ্ছে। চীন হচ্ছে বিশ্বের বনজ সম্পদের বৃহত্তম বৃদ্ধির এলাকা এবং কৃত্রিম বৃহত্তম বনায়নের দেশ। পাশাপাশি, বিশ্বব্যাপী চীন প্রথম ভূমিক্ষয়ের ‘শূন্য বৃদ্ধি’ বাস্তবায়ন করেছে। ২০০০ সাল থেকে, চীন বরাবরই বিশ্বের ‘সবুজ বৃদ্ধির’ প্রধান অবদানকারী। বিশ্বের নতুন সবুজ আয়তন বৃদ্ধির প্রায় চার ভাগের এক ভাগই চীনে হয়েছে। এ সম্পর্কে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ইংগার এন্ডারসন জানান, ‘২০ বছর আগে চীনের অনেক অঞ্চলে ভূমিক্ষয় ও নানা ক্ষতি হয়েছিল। তবে, এখন এ সব অঞ্চলে সবুজ পুনরুদ্ধার হচ্ছে।’


এ খাতে চীনের অবদানের প্রতি জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির সাবেক নির্বাহী পরিচালক এরিক সোলহেইম উচ্চ মূল্যায়ন করেছেন। তিনি বলেন, ‘চীন পরিবেশ সুরক্ষা খাতে দারুণ অর্জন করেছে। এখন চীনের প্রায় সব সবুজ প্রযুক্তি বিশ্বের শীর্ষস্থানে রয়েছে। আপনাদের অবদান আমেরিকা মহাদেশ, ইউরোপ ও এশিয়ার অন্য দেশগুলোকে উৎসাহিত করেছে। আপনারা দয়া করে চীনে আরো বেশি সবুজায়ন করুন এবং অব্যাহতভাবে গোটা বিশ্বকে উৎসাহিত করুন।”


(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)