সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর গল্প
2023-06-19 14:46:44

চীনা সভ্যতার ইতিহাস পাঁচ হাজার বছরের। প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন রাজবংশ আমলে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি এখনও চীনের অনেক জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। তবে কালের আবর্তনে, সেসব ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির অনেকগুলোই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই, এগুলো মেরামত করে সংরক্ষণ করা জরুরি।

সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত ও সংরক্ষণের কাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ। চীনে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীদের চাকরি বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চীনের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এমন বিশেষজ্ঞ গড়ে তুলতে নতুন বিভাগ চালু করেছে। তবে, ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত করার কাজটা সহজ নয়। সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির ধরনও অনেক বেশি। আজকের অনুষ্ঠানে আমরা চীনের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীদের কয়েকজনের গল্প তুলে ধরবো।

২০২২ সালে চীনের শানসি প্রদেশের রাজধানী থাইইউয়ান শহরে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতের দক্ষতা প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় ১৪৯টি বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি ব্যবহার করা হয়। চীনের ২৭টি প্রদেশের ২১৯ জন প্রতিযোগী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। তাঁরা ১৪ ঘন্টার প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত করেন এবং তাঁদের মধ্যে ৭৪ জন প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর পুরস্কারও লাভ করেন।

প্রশ্ন হচ্ছে: সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর নতুন পেশা চীনা যুবক-যুবতীদের মধ্যে কতোটা জনপ্রিয়? এ কাজ শিখতে গেলে তাদেরকে কোন কোন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়? বিষয়টি খতিয়ে দেখতে চায়না ইয়ুথ পত্রিকার সংবাদদাতা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলেন।

বস্তুত, সিনিয়র সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীরা এ কাজে যুবক-যুবতীদের অংশগ্রহণের ব্যাপারে আশাবাদী। ২০১৬ সালে একটি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র চীনের সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এ প্রামাণ্যচিত্রের নাম ‘আমি রাজপ্রাসাদে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত করি’। এটি প্রচারিত হবার পর সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীদের পেশা ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। ২০২১ সালে ‘সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীদের  যোগ্যতার জাতীয় মানদন্ড’ প্রকাশিত হয়। তখন থেকে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী একটি নতুন পেশা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়।

বস্তুত, ‘সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী’ নামের পেশাটি স্বীকৃতি পেয়েছে জটিল এক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৯৯ সালে চীনের প্রথম ‘পেশা অভিধান’ প্রকাশিত হয়। তাতে কেবল ‘সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকর্মী’ পদটির উল্লেখ ছিল। তবে, পরে বিশেষজ্ঞ ও পণ্ডিতদের যৌথ প্রয়াসে, নতুন পেশার মানদন্ড প্রণয়নের সময়, ‘সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী ও সংরক্ষণকারী’ পদটি ঠিক করা হয়। এ সম্পর্কে চীনের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি গবেষণাগারের প্রশিক্ষণ একাডেমির গবেষক চাং সিয়াও থং জানান, তিনি চীনের নতুন পেশা মানদন্ড প্রনয়নকারীদের মধ্যে একজন। নতুন পেশার মানদন্ডে মোট ১৩ ধরনের পেশা ৬৫টি শ্রেণী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পেশার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, পেশার মৌলিক চাহিদা, পেশার কাজের বিষয়সহ কয়েকটি ভাগ আছে।

আসলে এ মানদন্ড প্রকাশে সবাই প্রায় ২০ বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। গবেষক চাং সিয়াও থং বলেন, একটি পেশার স্বীকৃতি মানে কেবল নাম ঠিক করা বা সংশোধন করা নয়, বরং প্রত্যেক পেশাদারদের দক্ষতার মানদন্ড স্পষ্টভাবে উল্লেখ করাও বটে। এভাবে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির মেরামতের মান নিশ্চিত করা যায় এবং সংশ্লিষ্ট দক্ষ ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া সম্ভব। যুবক-যুবতীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি সংরক্ষণের ব্যাপারে ব্যাপক আশাবাদও যুক্ত হয়েছে। সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতে আগ্রহী  যুবক-যুবতীরা যথাযথ প্রশিক্ষণ ও লেখাপড়াশেষে এই নতুন পেশায় যোগ দেওয়ার আশা করতে পারেন।

২০১৯ সালের শেষ দিকে হিসেব করা হয় যে, চীনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরযোগ্য নয় এমন সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি বা ধ্বংসাবশেষের সংখ্যা ৭ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি এবং ছোট ও বড় সাইজের সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি যা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরযোগ্য, এমন পুরাকীর্তির সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। চীনের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তিসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১০৫৬২টি। তবে, সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী ও সংরক্ষণকারীর মোট সংখ্যা ১০ হাজারের চেয়ে কম।

চীনের জাতীয় জাদুঘরের গবেষক পান লু বলেন, চীনের নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৯ সালে ‘সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ সংরক্ষণ’ শীর্ষক স্নাতক মেজর চালু করা হয়। ফলে, ১৯৯৩ সালে এ মেজরে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে চীনের প্রথম গ্রুপটি বের হয়। চীনে অসংখ্য সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি বা ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। আর প্রতিবছর নতুন করে আবিষ্কৃত সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির সংখ্যাও লক্ষাধিক। আর এ কারণেই চাহিদার তুলনায় সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারীর সংখ্যা চীনে তুলনামূলকভাবে অনেক কম।

এ প্রেক্ষাপটে চীনে সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামতকারী ও সংরক্ষণকারীদের প্রশিক্ষণের ওপর অনেক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ সম্পর্কে চীনের রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যুরোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা বিভাগের প্রধান লুও চিং বলেন, চীনের ‘প্রত্নতত্ত্ব অনুসন্ধানকারীদের রাষ্ট্রীয় পেশাদার দক্ষতার মানদন্ড’ ২০২২ সালে প্রণয়ন করা হয়। সব কাজ শেষ হলে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।

চীনের রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের চীনা মাটির পুরাকীর্তি  মেরামতকারী ইয়াং ইয়ু চিয়ে বহু বছর ধরে চীনা মাটির সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি মেরামত করে আসছেন। নিজের কাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমাদের কাজ সহজভাবে বোঝা যায়, তবে এটি সঠিক ও চমত্কারভাবে করা কঠিন। যদিও চীনা মাটির পুরাকীর্তির মেরামত ও পুনরুদ্ধারকাজ শেখা আপাতদৃষ্টিতে কঠিন নয়, তবে এ কাজে দক্ষতা বাড়ানো ও সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তির আদি আকৃতি ঠিক রেখে এর মেরামত ও সংরক্ষণকাজ চালিয়ে যেতে ব্যাপক চর্চা ও ধৈর্যের প্রয়োজন।”

সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকাজে বিভিন্ন ধরনের জটিল ও এলোমেলো কাজ করতে হয়, যা কল্পনার চেয়েও বেশি কঠিন। মেরামতকারীদের কাজ সাধারণ মানুষের কাছে বোরিং লাগবে, এটা স্বাভাবিক। যুবকালের কাজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে তিনি বলেন, শুরুর দিকে চীনা মাটির বাটি পরিষ্কার করা তাঁর রুটিন কাজ ছিল। সেই সময় চীনের রাজপ্রাসাদ জাদুঘরের বিভিন্ন ধরনের চীনা মাটির সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হতো। চিয়াংসি প্রদেশের চিংত্য জেলার চীনা মাটি প্রত্নতত্ত্ব একাডেমির সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্ববিদদের অনুসন্ধান করা প্রত্যেকটি চীনা মাটির সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের ওপর মাটি ও ক্যালসিফাইড পদার্থ পাওয়া যায়। তাই, প্রতিদিন তা পরিষ্কার করা জরুরি হয়ে পরে। সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারের কাজে রাসায়নিকের ব্যবহার করতে হয় অতি সাবধানে। এটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। প্রায় দুই মাস তিনি প্রতিদিন চীনা মাটির তৈজসপত্র পরিষ্কারের কাজ করেছেন। তাঁর সেই অভিজ্ঞতা মিস ইয়াংয়ের মনে গভীর দাগ ফেলেছে।

২০১৩ সালে গবেষক চাং সিয়াও থং চীনের সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুমুতুলা গ্রোটোসের মুরাল মেরামতের দায়িত্ব পালন করেন। এ মুরালের মেরামতস্থান সিনচিয়াং কুকা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩০ কিলোমিটার দূরে একটি কর্মস্টেশন। এর অদূরে মরুভূমি থাকার কারণে, নিয়মিত বালিঝড়ের সম্মুখীন হতে হতো। স্থানীয় কর্মপরিবেশ অনেক কঠিন ছিল। প্রতিদিন মুরাল মেরামত ও পরিষ্কারকারী কর্মীদের নিজেদের রান্নাও নিজেদেরই করতে হতো। তখন গবেষক চাংয়ের  মেয়ে উচ্চবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি নিজের প্রবীণ পিতামাতার কাছে কন্যার যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে বিনা দ্বিধায় সিনচিয়াং চলে আসেন। বিভিন্ন ধরনের জটিলতা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে প্রায় ২ বছর পর তাঁর নেতৃত্বে অবশেষে কুমুতুলা গ্রোটোসের মুরালের মেরামতকাজ সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন, যারা কেবল দীর্ঘকালীন একাকী জীবন সহ্য করতে ও দৈনিক বোরিং কাজ করতে পারেন, তারাই ভালো সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারী হতে পারেন।

সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারীদের কাজ সম্পর্কে গবেষক চাং বলেন, তাদের জন্য প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে জটিল কাজ নয়, বরং নির্মাণকৌশলের অভিনবত্ব অতি গুরুত্বপূর্ণ। এভাবে তাঁরা আসলে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের আধ্যাত্মিক দিকটিকে সংরক্ষণ করেন। কাজটা সহজ নয়।

বর্তমানে চীনের অনেক সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতকারীর সংশ্লিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। তাঁদের মধ্যে অনেকে বয়স্ক হয়েছেন। তাদের সময় এই পেশায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার বা উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ ছিল না। তাই তাদেরকে সিনিয়রদের কাজ দেখে শিখতে হয়েছে। তবে, আধুনিক দক্ষ মেরামতকর্মীদের সংশ্লিষ্ট পুরাকীর্তি বা শিল্পকর্মের ইতিহাস ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক তথ্য-উপাত্ত জানতে হয়।

চীনের রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ব্যুরোর পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালে চীনের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষের সাথে জড়িত কর্মীর মোট সংখ্যা ১.৮ লাখেরও বেশি ছিল, যাদের মধ্যে পেশাদার প্রযুক্তিকর্মী মাত্র ৫৫ হাজার এবং সিনিয়র হবার যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীর সংখ্যা ১২ হাজারের চেয়ে কম। এটা একটা সমস্যা বটে।

এ সমস্যা মোকাবিলায় চীনের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ৩১টি কারিগরি স্কুলে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধার মেজর চালু হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগও কিছুটা বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট মেজরের শিক্ষার্থীরা স্নাতক হওয়ার পর জাদুঘরের সংশ্লিষ্ট বিভাগ, প্রত্নতত্ত্ব গবেষণাগার, অকশন কোম্পানিসহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। বর্তমানে সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের সুযোগ সীমিত। তাই সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করাও অতি জরুরি।

জানা গেছে, বর্তমানে চীনে বেসরকারি খাতে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামত কোম্পানির সংখ্যা অনেক বেড়েছে। পর্যাপ্ত অর্থায়ন ও প্রযুক্তির সমর্থনে, সার্বিকভাবে বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামত করতে পারে এসব কোম্পানি। এসব কোম্পানি চীনের সরকারি জাদুঘরের সাথে সহযোগিতা করে আরও বেশি সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামত করতে পারে।

২০০৩ সালে চীনের জাতীয় জাদুঘর নির্মাণে সরকার প্রায় ৫০ কোটি ইউয়ান বরাদ্দ দেয় এবং এর মধ্যে সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণকেন্দ্রের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হয় ৪ কোটি ইউয়ানেরও বেশি। যা ছিল সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের জন্য বেশ উত্সাহব্যঞ্জক ব্যাপার। এ সম্পর্কে মেরামতকারী মিস ইয়াং বলেন, “আমার কাজের তাত্পর্য বোঝার পর থেকে এ কাজ করে যেতে উত্সাহিত হয়েছি।” তিনি মনে করেন, বিভিন্ন ধরনের প্রাচীন সাংস্কৃতিক ধ্বংসাবশেষ মেরামতের মাধ্যমে তিনি প্রাচীনকালের চীনা হস্তকর্মশিল্পীদের চেতনা ও হৃদয় অনুভব করতে পারেন। সময় ও স্থানের বাধা পেড়িয়ে তাদের মধ্যে সংলাপ হয়, কথা হয়। মিস ইয়াংয়ের জন্য এটি বেশ মজার ব্যাপার।

চীনা সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি বা ধ্বংসাবশেষের মেরামতকারী কোনো সাধারণ পেশা নয়। এই কাজে বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। তবে, সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার পর, একটি সুন্দর সাংস্কৃতিক পুরাকীর্তি রক্ষা করা এ পেশার কর্মীদের জন্য বেশ তৃপ্তিদায়ক ব্যাপার। তাই, যারা ভালো করে এ কাজ করতে চান, তারা অবশ্যই এ কাজের মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করতে পারবেন। গবেষক চাং সিয়াও থং বলেন, এ পেশায় মেধাবী, দায়িত্বশীল ও আগ্রহী যুবক-যুবতী প্রয়োজন।

(সুবর্ণা/আলিম/মুক্তা)