জুন ১৫: গতকাল (বুধবার) ১৬তম চায়না বুক স্পেশাল কন্ট্রিবিউশন অ্যাওয়ার্ড বিতরণ অনুষ্ঠান বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশজন বিদেশি অনুবাদক, প্রকাশক এবং লেখক এ পদক লাভ করেছেন।
চায়না বুক স্পেশাল কন্ট্রিবিউশন অ্যাওয়ার্ড চীনের প্রকাশনা শিল্পের বিদেশিদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মাননা। সমসাময়িক চীনকে তুলে ধরা এবং চীনা প্রকাশনা ও সংশ্লিষ্ট সাংস্কৃতিক পণ্য সম্প্রচার এবং চীন-বিদেশি সভ্যতা বিনিময়সহ নানা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী বিদেশি ও প্রবাসী চীনা অনুবাদক, প্রকাশক ও লেখকদেরকে দেওয়া হয় এ অ্যাওয়ার্ড।
এবার ১৬টি দেশের ২০ জন অ্যাওয়ার্ড জয়ীদের মধ্যে রয়েছেন ছয়জন অনুবাদক, ছয়জন প্রকাশক এবং আটজন লেখক। তাঁরা দীর্ঘকাল ধরে চীনের উন্নয়নের ওপর নজর রাখেন এবং গভীরভাবে চীনা জাতির সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করেন। ব্যাপক পরিমাণে চীনা বই অনুবাদ, প্রকাশনা এবং লেখালিখি করেছেন তাঁরা। তাদের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক সমাজের চীন সম্পর্কে ধারণা লাভ ও বুঝাপড়া তৈরি এবং সভ্যতার আদান-প্রদান জোরদারে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে।
ফরাসি অনুবাদক এবং প্যারিসের পূর্ব ভাষা ও সংস্কৃতি ইনস্টটিউটের অধ্যাপক হ্য বি ইয়ু (চীনা নাম) বলেন,
(রে-১)
‘যখন আমরা বিদেশি বই অনুবাদ করি, তখন আমরা নিজেদেরকে কেবল সাংস্কৃতিক দূত নয়, বরং মানব জাতির মননশীলতাকে লালনকারী বলে মনে করি। দেশি-বিদেশি প্রতিটি বই পাঠকের মনোমুগ্ধকর চাহিদা এবং বিশ্বের আশা পূরণ করতে পারে। গত ৪০ বছরে চীনের সাহিত্যে ভাইরাল হয়েছে। যার মধ্যে অনেক বই বিদেশে জনপ্রিয় হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও সুন্দর বই অনুবাদ করতে পারবো বলে আমি আশা করি।’
আলজেরিয়ার লেখক এবং চীন-আলজেরিয়ার মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান ইসমাইলি ডিবুশ দীর্ঘকাল ধরে আলজেরিয়া-চীন সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। তিনি ‘চীনের কূটনৈতিক নীতিতে পারস্পরিক উপকারিতা’সহ বেশ কয়েকটি নিবন্ধ এবং ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মধ্যে চীনের ভূমিকা ও চীন-আফ্রিকা সম্পর্ক (১৯৪৯-১৯৮৯)’সহ নানা বই প্রকাশ করেছেন। তা চীন-আলজেরিয়া ও চীন-আফ্রিকা ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী জোরদারে অবদান রেখেছে।
অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পর তিনি বলেন,
(রে-২)
‘আমি চীনে কাজ করছি, চীন একটি মহান দেশ। দেশটি সারা বিশ্বে সমতা, শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। এ অ্যাওয়ার্ড লাভ করে আমি ও আমার দেশের জনগণ গর্বিত। কারণ এর ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে।’
বৃটেনের বিখ্যাত চীন-বিষয়ক পণ্ডিত, ইতিহাসবিদ এবং লেখক উ ফাং সি (চীনা নাম) চায়না বুক স্পেশাল কন্ট্রিবিউশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তিনি বলেন,
(রে-৩)
‘চীনের সংস্কৃতি ও ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ। এ সম্পর্কে জানা এবং গবেষণা করার অনেক কিছু রয়েছে। আমি জানি যে সবাই চীনের সকল সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক বিষয়ে আগ্রহী। বিদেশি ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। কারণ বিদেশের অবস্থা সম্পর্কে জেনে আমাদের মনোজগতকে সমৃদ্ধ করতে এবং বিদেশি জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াতে হবে।’
চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী হু হ্য পিং অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে বলেন, অ্যাওয়ার্ড লাভকারীরা সাহিত্যের মাধ্যমে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছেন। বইয়ের মাধ্যমে যোগাযোগের বন্ধন জোরদার করেছেন এবং বিভিন্ন দেশের জনগণের কাছে চীনকে তুলে ধরেছেন। তাদের প্রচেষ্টা চীন ও বিভিন্ন দেশের জনগণের মধ্যে মৈত্রী গভীর করেছে।
তিনি বলেন,
(রে-৪)
‘চীন সরকার বিভিন্ন দেশের প্রকাশনা জগতের সঙ্গে সহযোগিতা ও মৈত্রী জোরদার এবং প্রকাশনা শিল্পের গুণগত মানসম্পন্ন উন্নয়নের সুযোগ শেয়ার করবে। আরও বেশি বিদেশি অনুবাদক, প্রকাশক এবং লেখক চীনে আসবেন, চীনকে জানবেন এবং চীন নিয়ে গবেষণা করবেন বলে আমরা আশা করি। তাতে মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠন আরও এগিয়ে যাবে।’ (রুবি/এনাম)