কেনিয়াকে সমৃদ্ধ করছে চীন-নির্মিত মোম্বাসা-নাইরোবি রেলওয়ে
2023-06-12 14:47:37

চীন ও কেনিয়ার যৌথভাবে “এক অঞ্চল এক পথ” নির্মাণের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প হিসেবে কেনিয়ার মোম্বাসা-নাইরোবি স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেলওয়ে (এসজিআর) চালু হবার ছয় বছরে আফ্রিকার জনগণের জন্য বাস্তব কল্যাণ বয়ে এনেছে। কেনিয়ার জন্য বিপুল সংখ্যক মেধাশক্তি লালন-পালন করে একটি দল তৈরি করেছে চীন। তারা নির্মাণকাজ এগিয়ে যাবার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলের কাজ স্বাধীনভাবে করবে। চীনা “গুরু” যথাক্রমে কর্তব্য শেষ করে স্বদেশে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু এসজিআর মাস্টার ও শিক্ষানবিশদের মধ্যে মৈত্রী অবিরাম প্রসারিত হয়ে ভবিষ্যতে আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে।

 

চীনা “গুরু” চিয়াং লিপিং হচ্ছেন আফ্রিকা স্টার রেলওয়ে অপারেশন কোম্পানির লোকোমোটিভ বিভাগের ট্রেন চালক। ২০১৮ সালে কেনিয়ায় আসার পর তিনি চালকদের দৈনিক প্রযুক্তিগত পেশাদার প্রশিক্ষণ এবং স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অপারেশন তত্ত্বাবধান ও নির্দেশিকার দায়িত্ব পালন করেন। হোরাস হলেন চিয়াং লিপিংয়ের শিক্ষার্থী। তারা একসাথে সমন্বয় করে এসজিআর লাইনের স্টেশনগুলোতে যাতায়াত করেন। হোরাস বলেন, চীনা গুরুর পেশাদার প্রশিক্ষণের মাধ্যম তার অনেক উপকার হয়েছে। তিনি আশা করেন, গুরু নিয়মিত কেনিয়ায় ফিরে আসবেন। ভবিষ্যতে তিনি এসজিআরের জন্য আরও বেশি নির্ভরশীল চালক লালন-পালন করবেন।

 

পূর্ব আফ্রিকার প্রথম বন্দর মোম্বাসা এবং কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিকে সংযুক্ত করা এসজিআর হলো চীনা স্ট্যান্ডার্ড, চীনা প্রযুক্তি ও চীনা সরঞ্জাম দিয়ে নির্মিত আধুনিক রেলপথ। পাশাপাশি, কেনিয়া স্বাধীন হবার পর বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প।

 

চীনা “গুরু” মাও সিন আফ্রিকা স্টার রেলওয়ে অপারেশন কোম্পানির পরিবহন বিভাগে নাইরোবি স্টেশনের অপারেশন বিভাগের পরিচালক। তিনি তার শিক্ষার্থী পিটার নেজেঙ্গার সঙ্গে সময়সূচি তৈরি করে ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করেন।

 

মাও সিন জানান, তারা অবাধে অভ্যন্তরীণ প্রযুক্তি ও স্ট্যান্ডার্ড কেনিয়ায় নিয়ে এসেছেন। শিক্ষার্থীরা অভ্যন্তরীণ স্টেশনের একই মানে পৌঁছেছেন। কেনিয়া প্রথম আধুনিক রেলপথ নির্মাণে সাহায্য করা তাঁর জীবনের একটি উজ্জ্বল বিষয়। একই সময় পিটার গুরু’র কাছ থেকে অনেক পেশাদার প্রযুক্তি শিখেছেন। ভবিষ্যতে এসব জ্ঞান আরও বেশি মানুষকে শিক্ষা দেবেন।

 

প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হওয়া থেকে চীনা রেলপথ বিশেষজ্ঞদল স্থানীয় মেধাশক্তি লালন-পালন করার ওপর গুরুত্ব দেয়। স্থানীয় প্রযুক্তি স্থানান্তরকে গুরুত্ব দিয়ে চীনা এ শিক্ষক হাতে কলমে স্থানীয় শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষা দিয়ে কেনিয়ার জন্য মেধাশক্তি লালন-পালন করেন। এসজিআর মোট ৪৬ হাজার স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তাতে স্থানীয় কর্মীদের হার ৮০ শতাংশের বেশি। প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার পর্যটক ও ১৮ হাজার টন মালামাল কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছে এ লাইন ধরে।

 

এসজিআর “মহাধমনী”র মতো দেশটির আধুনিকায়নের পদক্ষেপ দ্রুততর করছে। পাশাপাশি, পূর্ব আফ্রিকা অঞ্চলের আন্তঃযোগাযোগ এবং চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ও অভিন্ন জয় ত্বরান্বিত করছে। রাস্তা ও হৃদয়কে সংযুক্ত করে “দেশ-দেশ সংযুক্তি ও সমৃদ্ধি” বাস্তবায়ন করছে এসজিআর।

যৌথভাবে “এক অঞ্চল এক পথ” নির্মাণ চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা ফোরাম ব্যবস্থা অগ্রসরে চীন-কেনিয়া আর্থ-বাণিজ্যিক যোগাযোগ দিন দিন ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। অবকাঠামো সহযোগিতা যথাক্রমে গভীরতর হচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বাস্তব সহযোগিতা অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই আরও বেশি ফলাফল অর্জন করে আরও বেশি জনগণের জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করবে এ রেলপথ। (প্রেমা/এনাম)