চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সি ছুয়ান প্রদেশে অবস্থিত চীনের জায়ান্ট পান্ডা সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্র। প্রকৃতিতে পান্ডার প্রত্যাবর্তনের দায়িত্ব পালন করে এ কেন্দ্র। এখানে যারা পান্ডাদের যত্ন নেন, তাদের নিজেদেরকে লুকিয়ে রাখতে হয়। তারা পান্ডার কাপড় পরে নিজেরা পান্ডা সেজে থাকেন।
তাদের কাপড়ে পান্ডার মল মাখা থাকে, যাতে মানুষের গন্ধ পাওয়া না যায়। এভাবেই কিছু মানুষ পান্ডার সঙ্গে অভিনয় করে থাকেন। তাদেরই সফল পরিশ্রমের বদৌলতে পান্ডাদের প্রকৃতিতে ফেরানো সম্ভব হয়।
পান্ডা সেজে থাকাটা এবং পান্ডাদের সঙ্গে অভিনয় করা অন্যদের চোখে আরামদায়ক মনে হয়। তবে এটি আসলে সহজ কাজ নয়। কারণ এমনকি তারা ঝুঁকিতেও পড়তে পারেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে চীনের পান্ডা সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী চাং হ্য মিন বলেন, “একবার পান্ডাকে প্রকৃতিতে ফেরানোর প্রশিক্ষণদানের সময় পান্ডা সেজে আমি সংশ্লিষ্ট কাজ পর্যবেক্ষণ করছিলাম, তখন একটি বাচ্চা পান্ডা আমার পায়ে কামড় দেয়। পান্ডার চোখে এ কামড় দেওয়া কেবল খেলা ছিল। তবে মানুষের জন্য তার কামড় মেরু ভল্লুকের কামড়ের মতোই ভয়ঙ্কর। তা সহ্য করতে পারে না মানুষ।”
এ সময় বাচ্চা পান্ডাটির মাথায় আঘাত করতে চাননি বলে চাং হ্য মিন নিজের হাত দিয়ে বাচ্চা পান্ডার মুখ খুলে দেন। পরে তিন মাস ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চাং হ্য মিন।
এ কাজ খুবই কঠিন এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তবে পান্ডা সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের এসব লোকের চোখে পান্ডা আক্রমণাত্মক হলে তারা আনন্দিত হন। কারণ কেবল বন্য চেহারা দেখালেই পান্ডাকে প্রকৃতিতে ফেরানোর প্রশিক্ষণ সফল হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।
এ পর্যন্ত চীনের জায়ান্ট পান্ডা সংরক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের হ্য থাও পিং কেন্দ্রে ১১টি পান্ডার প্রকৃতিতে ফেরানোর প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি পান্ডা সফলভাবে বিলুপ্তির প্রান্ত থেকে বন্য পান্ডাদের সঙ্গে মিশে গেছে। গৃহে লালিত পান্ডাদের বন্য প্রাণী হিসেবে বেঁচে থাকা ও প্রজনন এবং প্রাণীর বৈচিত্র্য রক্ষায় এভাবেই সাহসী অবদান রাখছেন চীনের পান্ডা মানবেরা।
(রুবি/এনম)