শেনচৌ-১৬ মিশন সম্বন্ধে নভোচারীরা যা বলেছেন
2023-05-30 15:16:22

মে ৩০: চীনের মানববাহী মহাকাশ প্রকল্প কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চীনের শেনচৌ-১৬ মহাকাশযান আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা ৩১ মিনিটে সফলভাবে মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। জিং হাই ভেং, চু ইয়াং সু এবং কুই হাই ছাও—এই তিনজন নভোচারী এবারের মিশনে দায়িত্ব পালন করছেন। গতকাল (সোমবার) সকালে তাঁরা এক সাংবাদিক সম্মেলনে সবার সামনে হাজির হয়েছিলেন।

এবার মিশন হলো, চীনের মহাকাশ স্টেশনের ব্যবহারিক ও উন্নয়ন পর্যায়ে প্রথম মানব মিশন। মিশনের কমান্ডার জিং হাই ভেং বলেন, শেনচৌ-১৬ মিশনের ক্রুদের মধ্যে পাইলট, প্রথম স্পেসফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রথম পেলোড বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তার মানে এবার আরো জটিল, আরো বেশি এবং আরো কঠোরভাবে কাজ করতে হবে মহাকাশে গিয়ে।

জিং হাই ভেং বলেন:

আমরা প্রশিক্ষণের সময় ব্যাপক গবেষণা ও বিনিময়ের মাধ্যম ব্যবহার করি, মহাকাশ বিজ্ঞান পরীক্ষা, নভোচারীর স্পেসওয়াক, মহাকাশ স্টেশন মেরামত করা, দীর্ঘসময় মহাকাশে থাকা, স্বাস্থ্য রক্ষা করা; বিশেষ করে মহাকাশ স্টেশনের আকস্মিক অবস্থা এবং মেরামতসহ বিভিন্ন বিষয় ভালোভাবে প্রস্তুত করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, চীনের মহাকাশ বিজ্ঞানের বসন্তকাল এসেছে। এই কর্তব্য পূরণে আমরা দৃঢ় সংকল্প, আস্থা ও সামর্থ্য আছে। আমরা আমাদের দুই হাত দিয়ে সব বিজ্ঞানীর পরিশ্রম, বুদ্ধি ও স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবো। আমরা আশা করি, তখন আমাদের সব বিজ্ঞানী চা হাতে, গরম চা পান করতে করতে, আরামদায়ক অনুভূতিতে মহাকাশের পরীক্ষাগুলো করতে পারবেন, মহাকাশ ও ভূখণ্ড একসঙ্গে বিজ্ঞানের আনন্দ উপভোগ করতে পারবে, একসাথে সুফল, আনন্দ ও খুশি শেয়ার করতে পারবে।

স্পেসফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার চু ইয়াং চু বলেন, তিনি মহাকাশ স্টেশন কমপ্লেক্স মেইনটেইন এবং মেরামত কাজ করবেন, প্রযুক্তিগত পরীক্ষা করবেন, মহাকাশ স্টেশনের কার্যকারী, স্থিতিশীল, নিরাপদ এবং দীর্ঘস্থায়ী পরিচালনা নিশ্চিত করবেন।

তিনি বলেন, এবার ‘মহাকাশ ভ্রমণ নিয়ে’ আমার খুব আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের অবস্থা সমন্বয় করবো, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মহাকাশের পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াবো। আমি ভালোভাবে প্রতিটি কাজ সম্পন্ন করবো, প্রতিটি মহাকাশ যন্ত্র রক্ষা করবো, সব পরীক্ষা করবো। চীনের বিজ্ঞান খাতের শক্তিশালী দেশ এবং মহাকাশ খাতের শক্তিশালী দেশ গঠনে নিজের অবদান রাখবো। আর কাজের ফাঁকে, আমি সুন্দর পৃথিবী দেখবো এবং পরিবারের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

মহাকাশে প্রবেশ করা চীনের প্রথম পেলোড বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কুই হাই ছাও বলেন, চীনের মহাকাশ স্টেশনের মাধ্যমে মহাকাশ মিশনের নতুন ভূমিকা শুরু হতে পারে, চীনের মহাকাশ বিজ্ঞান খাতে উন্নয়নের নতুন সুযোগ আসতে পারে।

 

তিনি বলেন, দায়িত্বের দিক থেকে, পেলোড বিশেষজ্ঞ হিসেবে, আমি প্রধানত পেলোড পরিচালনা, মেইনটেইন, মেরামত, মহাকাশ বিজ্ঞান পরীক্ষা, ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের কাজ করি। যদিও আমাদের দায়িত্ব ভিন্ন, তবে প্রত্যেক অপারেশন এবং প্রত্যেক কর্তব্য আমরা তিনজন পরস্পরের ব্যাকআপ হিসেবে থাকি, যৌথভাবে কাজগুলো সম্পন্ন করি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা নিশ্চয় সফলভাবে কর্তব্য সম্পন্ন করবো।

এবার মিশনে নভোচারীরা মিশর, মাদাগাস্কার, নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ দশটি আফ্রিকান দেশের যুবকদের শ্রেষ্ঠ আলোকচিত্র প্রদর্শন করবেন। জিং হাই ভেং বলেন, চীনের মহাকাশ স্টেশনে এই প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হবে।

তিনি বলেন, মহাকাশ অনুসন্ধান গোটা মানবজাতির অভিন্ন কর্তব্য। আমাদের অভিন্ন স্বপ্নও বটে। শান্তিপূর্ণভাবে আমরা একসঙ্গে সুন্দর ভবিষ্যত উন্মোচন করতে চাই। এবার আমরা শিশুদের সবচেয়ে সুন্দর যৌবন, মৈত্রী ও স্বপ্নের মহাকাশে নিয়ে যেতে পেরে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি।

(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)