চীনের সবচেয়ে ছোট সংখ্যালঘু জাতি হে জে জাতি'র ঐতিহ্য
2023-05-26 21:11:01


হে জে জাতির লোকজন প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে চীনের সীমান্ত অঞ্চলের বিখ্যাত তিনটি নদীর অববাহিকায় বাস করে আসছে। তাদের জনসংখ্যা কেবল ৫৩৭৩ তিয়াত্তর জন। সংখ্যার দিক দিয়ে এটি চীনের সবচেয়ে ছোট জাতি। দীর্ঘদিন ধরে মাছ ও বন্যপ্রাণী শিকারের জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার কারণে হে জে জাতির লোকেরা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। হে জে জাতির ভাষার কোনো লিখিত রূপ নেই। “ইমাখেন” হে জে জাতির ঐতিহাসিক পরিবর্তন এবং লোকগীতি ধারণ করার একমাত্র পদ্ধতি। এখন আপনরা যে গান শুনছেন, সেটি ইমাখেন পদ্ধতিতে গাওয়া। এর প্রধান পরিবেশক উ কুই ফেং হে জে জাতির মানুষ। তিনি আবার ইমাখেন’র উত্তরাধিকারী।

 

(ভয়েস) ইমাখেন এক ধরণের বলা ও গাওয়া শিল্প। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের হে জে জাতির ইতিহাস ও বীরদের প্রশংসা করি। এ পদ্ধতিতে এক অধ্যায় বলার পর আরেক অধ্যায় গাওয়া হয়ে থাকে।

 

২০১৪ সালে হে জে জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি রক্ষা করতে পা ছা গ্রামে হে জে জাতির ইমাখেন ধারণ ও শিক্ষা কেন্দ্র চালু হয়েছে। এটি গ্রামবাসীদের ইমাখেন ও হে জে জাতির গান ও সংগীত চর্চার স্থান।

 

২০১৬ সালের ২৪ মে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পা ছা গ্রামে হে জে জাতির ইমাখেন উপভোগ করেন এবং এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রেসিডেন্ট সি’র কথা উ কুই ফেংসহ হে জে জাতির লোকদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখা ও প্রচারে উত্সাহিত করেছে।

(ভয়েস) এখন ইমাখেন ধারণ ও শিক্ষা কেন্দ্রে ইমাখেন শিখতে অনেক বেশি তরুণ-তরুণী আসেন। তা অনলাইন ও অফলাইনে শেখা যায়। অনেকে হে জে জাতির সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনেছেন এবং এটির বিলুপ্তি রোধ করতে সচেতন হয়েছে। কারণ হে জে জাতির সংস্কৃতিতে লিখিত কোনো শব্দ নেই। এটি মুখ থেকে কানের মাধ্যমে ধরে রাখা হয়। আমি খুব আনন্দিত যে মাঝেমধ্যে তরুণতরুণীরা এমনকি শিশুরা আমার বাড়িতে আসে। তারা আমাকে বলে, নানী, আমি ইমাখেন শিখতে চাই, তাদের কথা শুনে আমি সত্যি খুশি হই। সবাই নিজস্ব জাতীয় সংস্কৃতির ওপর গুরুত্বারোপ করছে।

 

এখন পা ছা গ্রামের ইমাখেন ধারণ ও শিক্ষা কেন্দ্রে মাঝেমধ্যেই সুন্দর গান শোনা যায়। শিশু ও প্রবীণ নির্বিশেষে সবাই ইমাখেন শিখতে চায়। এখানে জাতিগত সংস্কৃতি সম্প্রসারণের পরিবেশ অভূতপূর্ব ভাবে শক্তিশালী হয়েছে।

 

যখন আমাদের সাংবাদিক শিক্ষক উ কুই ফেং’র কাছ থেকে হে জে’র বিখ্যাত গান ‘উ সু লি মাং মু’র অংশ শুনতে ও শিখতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তখন তিনি আনন্দের সঙ্গে তা শিখানো শুরু করেন।

 

(ভয়েস)

 

২০১১ সালে যখন ইমাখেনকে অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকাভুক্ত করে ইউনেস্কো, তখন কেবল ৫ জন ইমাখেন পরিবেশন করতে পারতেন। প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ইমাখেন এখন সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত হয়েছে। হে জের সাংস্কৃতিক ভাণ্ডার "প্রায় বিলুপ্তি" থেকে এখন "প্রবল অস্তিত্বে" পরিণত হয়েছে।