বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে সহায়তা অব্যাহত রাখবে চীন: মুখপাত্র
2023-05-26 13:14:03

মে ২৬: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র শু ইয়ু থিং চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষসম্মেলনের আর্থ-বাণিজ্যিক সাফল্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া এবং চীন ও জার্মানির আর্থ-বাণিজ্যসহ নানা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

গত সপ্তাহে চীন-মধ্য এশিয়া শীর্ষসম্মেলন চীনের শায়ানসি প্রদেশের সি’আন শহরে অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, শীর্ষসম্মেলনে ধারাবাহিক গুরুত্বপূর্ণ আর্থ-বাণিজ্যিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে চীন-মধ্য এশিয়া অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রীদের সম্মেলন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে এবং আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা, ডিজিটাল বাণিজ্য, অবকাঠামো ও প্রকল্পের নির্মাণসহ নানা ক্ষেত্রে তিনটি বহুপক্ষীয় সহযোগিতা দলিল স্বাক্ষর করেছে। এতে চীন ও মধ্য এশিয়ার আরও ঘনিষ্ঠ অভিন্ন কল্যাণকর সমাজ প্রতিষ্ঠা করার দৃঢ় সংকল্প প্রতিফলিত হয়েছে।

তিনি বলেন,

 ‘মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সেসব দেশে গুদাম নির্মাণে নানা শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উত্সাহ দেবে এবং চীনের ই-কমার্সের প্লাটফর্মে প্রবেশে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে সমর্থন করবে বেইজিং। আমরা আন্তঃদেশীয় অবকাঠামোর নির্মাণকে এগিয়ে নেবো এবং তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও নতুন জ্বালানিসহ নানা ক্ষেত্রের সহযোগিতাকে জোরালো করবো। সত্যিকারের বহুপক্ষবাদ অনুসরণ করবে চীন।’

সম্প্রতি রুশ প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন চীন সফর করেছেন। সফরকালে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে চীন-রাশিয়া বাণিজ্য ফোরাম শাংহাইয়ে সফলভাবে আয়োজিত হয়। দেশ দুটি ‘পরিষেবা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা গভীর করার সমঝোতা স্মারক’ স্বাক্ষর করেছে। পর্যটন, ক্রীড়া, পরিবহন ও চিকিত্সাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

মুখপাত্র বলেন,

 ‘পরবর্তীতে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ রাশিয়ার সঙ্গে দু’দেশের পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ মতৈক্য বাস্তবায়নের যথাসাধ্য প্রচেষ্টা চালাবে এবং আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা এগিয়ে নিতে সক্রিয় পদক্ষেপ নেবে।’

 

সম্প্রতি চীন নিয়ে জি-৭ গোষ্ঠীর বাণিজ্য-সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট মন্তব্যের জবাবে মুখপাত্র বলেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন না করা সংক্রান্ত জি-৭ গোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়ন করা উচিৎ। মুখে বিচ্ছিন্ন না করার কথা বলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে চীনের উন্নয়ন রোধের চেষ্টা বন্ধ করা উচিৎ তাদের।

তিনি বলেন,

‘চীন বরাবরই দায়িত্বশীল মনোভাব নিয়ে পরিবর্তনশীল ও বিশৃঙ্খল বিশ্বে নিশ্চয়তা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে চালিকাশক্তি প্রদান করে আসছে। বিশ্বের জন্য চীন সহযোগিতা ও সুযোগ বয়ে আনে, বৈরিতা ও ঝুঁকি নয়। বিশ্বব্যাপী শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে চীন অব্যাহতভাবে বিভিন্ন দেশের নির্ভরশীল বাণিজ্যিক অংশীদার ও সকলের জন্য কল্যাণকর সহযোগিতার অংশীদার হতে ইচ্ছুক। উচ্চ মানের বৈদেশিক উন্মুক্ততা সম্প্রসারণ এবং নিজের উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়ন দিয়ে বিশ্বের উপকার করবে চীন।’

সম্প্রতি জার্মানির অর্থনৈতিক গবেষণালয় প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, কঠোর আন্তর্জাতিক পরিবেশ সত্ত্বেও চীনে  জার্মানির অ-আর্থিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ এখনও বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে মুখপাত্র বলেন, চীন ও জার্মানি আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা গভীরতর করবে। তা দু’দেশ এবং দু’দেশের জনগণের মৌলিক স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তা বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে অবদান রাখবে। লিলি/এনাম