মে ২৪: হাংচৌ এশিয়ান গেমস আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চীনের চ্যচিয়াং প্রদেশের হাংচৌ শহরে অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের ৪৫টি দেশ ও অঞ্চলের ১০ হাজার খেলোয়াড় এতে অংশ নেবেন। চীনের ৯ শতাধিক ও বাংলাদেশের ২ শতাধিক ক্রীড়াবিদ এতে অংশগ্রহণ করবেন। এবারের হাংচৌ এশিয়ান গেমস এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে বলে অনেকে মনে করেন।
এবারের হাং চৌ এশিয়ান গেমসের আয়োজক হিসাবে, চীন এশিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েছে। গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজ ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
গত ২৫শ এপ্রিল সকালে, হাংচৌ এশিয়ান গেমসের প্রতিনিধিদলের নেতৃবৃন্দের সভা অনুষ্ঠিত হয়। এশিয়ার ৪৫টি দেশ ও অঞ্চলের অলিম্পিক কমিটির প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা হাংচৌ এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজের উচ্চ প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে হাংচৌতে এশিয়ান গেমস দেখার প্রত্যাশায় রয়েছেন তাঁরা।
এদিকে, চীনা রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলার ছেন ই ছিন গত ১৪ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত চীনের চ্যচিয়াং ও শাংহাইয়ে হাংচৌ এশিয়ান গেমস ও এশিয়ান প্রতিবন্ধী গেমসের প্রস্তুতিমূলক কাজের খোঁজখবর নেন। পরিদর্শনকালে তিনি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ক্রীড়া কর্মকাণ্ডসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার আলোকে বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কাজ ভালোভাবে করা এবং দ্রুততার সাতে ক্রীড়ায় শক্তিশালী দেশ-নির্মাণকাজকে এগিয়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
বিভিন্ন সদস্যদেশও সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে এবং সংশ্লিষ্ট ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেছে। এর উদ্দেশ্য, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বিকাশ ঘটানো। এসব দেশের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশও রয়েছে।
অলিম্পিক কাউন্সিল অফ এশিয়ার স্পনসরকৃত ‘ফান রান’ এশিয়ান গেমসের একটি ঐতিহ্যবাহী ইভেন্ট। স্থানীয় সময় বাংলাদেশের গত ১৭ মে সকাল সাড়ে ৭টায়, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে হাংচৌ এশিয়ান গেমসকে স্বাগত জানিয়ে ‘ফান রান’ আয়োজিত হয়। এতে সহস্রাধিক দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ অলিম্পিক কমিটি এবং বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস ।
‘ফান রান’-এ বাংলাদেশি জনগণের উত্সাহী অংশগ্রহণ এবং সক্রিয় সহযোগিতা থেকে দেখা যায় যে, এই ইভেন্টের প্রতি তাদের ভালোবাসা আছে। বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি নিজেদের প্রতিশ্রুতি ও দৃঢ়তা প্রদর্শন করেছেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ সরকারও বলেছে যে, তারা দুই দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও বিনিময় বৃদ্ধির জন্য এই ধরনের কার্যক্রম ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বন্ধুত্বের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। দু’পক্ষ রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের সহযোগিতাও আগের তুলনায় অনেক বাড়িয়েছে। দু’পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্ব আরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশা করেন।
হাংচৌ এশিয়ান গেমস এশিয়ার বিভিন্ন দেশগুলোর জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে, দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শিক্ষা ও সমর্থনের চেতনা আরও গভীর হবে। বিশ্বায়ন ও বহুমুখীকরণের যুগে, এশিয়ান গেমসের মতো বড় আকারের বহুমুখী ক্রীড়া ইভেন্ট বিভিন্ন দেশের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং মানবসমাজের সুসংগত উন্নয়নের একটি সেতু হয়ে উঠবে বলে আশা করা যায়। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)