‘কৃষিকে আকর্ষণীয় পেশা বানাতে চাই’
2023-05-19 18:53:41


“আমি কৃষিকাজ পছন্দ করি। কারণ মাটিতে যত ঘাম ঝরাবেন, তার উত্তম প্রতিদান ফেরত পাবেন,” বলেছেন ওয়াং ইয়ান পিন। ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি গ্রামের বাড়ি ইন চৌ’তে ফিরে যান এবং চিয়াং শান উপজেলার ছেন চিয়ে ছিয়াও গ্রামে ৬০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন। তিনি কুই বেন খামার প্রতিষ্ঠা করে নতুন কৃষকে পরিণত হন।

 

জমি চাষ ও বীজ রোপণ করাসহ নানা কাজ শুরু করেন ওয়াং ইয়ান পিন। ধান চাষের প্রথম বছর টাইফুনের কারণে এবং অভিজ্ঞতার অভাবে তিনি ব্যর্থ হন। তবে ওয়াং ইয়ান পিন হাল ছেড়ে দেননি। তিনি জাতীয় শ্রম মডেল লু ফাং সিংকে মাস্টার হিসেবে গ্রহণ করেন এবং বিশেষজ্ঞ ও পেশাদারদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দীর্ঘকাল ধরে তিনি মাটি নিয়ে গবেষণা করেন এবং নোটবুকে তথ্য লিখে রাখেন। এতে তার চাষের প্রযুক্তিগত ধারণা অনেক উন্নত হয়।

প্রতি-হেক্টর জমিতে উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেন ওয়াং। ফলে তার খামার অনেক বড় হয়। তিনি নিজের চালের ব্র্যান্ড নিবন্ধন করেন এবং বিশেষ সহযোগিতার মাধ্যমে সমন্বয় করেন। ২০১৯ সালে চ্য চিয়াং প্রদেশের কৃষি-মেলায় তার ‘কুই বেন’ ব্র্যান্ডের চাল ‘গোল্ড মেডেল’ লাভ করে।

 

নতুন কৃষকদের মধ্যে নেতৃত্বস্থায়ী ব্যক্তি হিসেবে ওয়াং ইয়ান পিন মনে করেন, কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিহার্য। কুই বেন খামারে রয়েছে সারি সারি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, হারভেস্টার, শস্য শুকানোর মেশিন, উদ্ভিদ সুরক্ষা বিমানসহ নানা কৃষি সরঞ্জাম। চাষ থেকে ফসল তোলা পর্যন্ত সব প্রক্রিয়ায় যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়েছে, যা কৃষি উৎপাদনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। বর্তমানে তার খামারের কৃষি যন্ত্রের পরিমাণ ৬০টিরও বেশি। চাষের আয়তন শুরুর দিকের তুলনায় ব্যাপক বেড়েছে। খামারের উপার্জন অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে, আগে যে পরিমাণ কর্মী লাগত, বর্তমানে তার অর্ধেক হলেই চলে।

 

ভালো হার্ডওয়ারের পাশাপাশি রয়েছে স্মার্ট সফটওয়ার। কুই বেন খামারের একটি স্মার্ট প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে খামারের উপগ্রহ ম্যাপ, সরঞ্জামের অবস্থা, দৃষ্টান্তমূলক ক্ষেত এবং ধান বড় হওয়াসহ নানা তথ্য পাওয়া যায়। বর্তমানে কুই বেন খামারে খাদ্য উৎপাদনের পরিমাণ তিন হাজার টন ছাড়িয়েছে। উত্পাদন ক্ষমতা পার্শ্ববর্তী ক্ষেতের তুলনায় ১০ শতাংশ বেড়েছে। বার্ষিক উত্পাদন মূল্য ৯০ লাখ ইউয়ান।

 

উত্পাদন বৃদ্ধির ভিত্তিতে ওয়াং ইয়ান পিন অব্যাহতভাবে উদ্ভাবন করছেন। তিনি শিল্প চেইন গঠন করার দিকে দৃষ্টি রাখছেন। ধান ও চিংড়ি মাছ একত্রে চাষ করা, রঙিন রেপসিড ফুল বাগানকে ইন্টারনেট সেলেব্রিটি চেক-ইনের জায়গায় পরিণত করা, লাইভস্ট্রিমের মাধ্যমে আরও বেশি কৃষিপণ্য বিক্রি করা এবং মাধ্যমিক ও প্রাথমিক স্কুলের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে আরও বেশি শিশুদের গ্রামে যাওয়া ও কৃষিকাজে অংশ নিতে উত্সাহ দেওয়াসহ নানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ওয়াং ইয়ান পিন। তার তরুণ ধারণায় স্থানীয় কৃষি শিল্পে নতুন প্রাণশক্তি দেখা যাচ্ছে।


(রুবি/এনাম)