প্রযুক্তির ছোঁয়া উৎপাদন বাড়িয়েছে কয়েকগুণ | শেকড়ের গল্প | পর্ব ১৮
2023-05-17 18:45:09

                   

                           

প্রযুক্তির ছোঁয়া উৎপাদন বাড়িয়েছে কয়েকগুণ | শেকড়ের গল্প | পর্ব ১৮

 

এবারের পর্ব সাজানো হয়েছে

১. আধুনিক প্রযুক্তি উৎপাদন বাড়িয়েছে কয়েকগুণ

২. সিঙ্গাপুরে জমজমাট চীনা স্ট্রবেরির বাজার

৩. নতুন জাত বাড়িয়েছে চাষাবাদের সময়সীমা

 

বিশ্ববাসীকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে একটু একটু করে ভূমিকা রাখছে চীনের অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি। পেছনে পড়ে থাকা ছোট ছোট গ্রামগুলো মুক্তি পাচ্ছে দারিদ্রের শেকল থেকে। দিনশেষে স্বল্প পরিসরের উদ্যোগগুলো দেখছে সফলতার মুখ, হয়ে উঠছে সামগ্রিক অর্থনীতির অন্যতম অনুসঙ্গ।

কিন্তু কম সময়ে এত বড় সফলতার গল্প কীভাবে সম্ভব করলো চীন দেশের কৃষকরা? সে গল্পই আপনারা জানতে পারবেন “শেকড়ের গল্প” অনুষ্ঠানে।

 

 

 

 

১.  আধুনিক প্রযুক্তি উৎপাদন বাড়িয়েছে কয়েকগুণ

এক মাঠ থেকে আগের চেয়ে কয়েকগুণ ফসল উৎপাদনের জন্য প্রায় সময় আলোচনায় থাকে চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছেন কৃষকরা। চারা রোপন থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে এই প্রযুক্তি।

 

 

এই প্রযুক্তি বিশেষ করে ব্যবহার করা হচ্ছে চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ছংচৌ সিটিতে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে ফাইভ জি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে ফসলের গুণগত মান পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা নিতে পারছেন কৃষকরা।  

স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে, এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে ছংচৌতে এবার প্রায় সাত হাজার হেক্টর জুড়ে গমের আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে।

 আশা করা হচ্ছে, ২০২৩ সালে প্রায় ৩৩ হাজার টন গম উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

সামর্থের সবটুকু দিয়ে চাষাবাদ কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা। আশা করা হচ্ছে, এবারের গ্রীষ্মকালীন সময়ে ব্যাপক ফলন হবে গমের।

এদিকে পূর্ব চীনের চিয়াংসি প্রদেশে নাংছাং সিটিতে রেপসিড তৈলবীজের ভালো ফলন হয়েছে। প্রায় ৫৭ হাজার হেক্টর জুড়ে দারুণভাবে চাষ করা হয়েছে রেপসিড।

এখানকার স্থানীয় কৃষকরাও জমিতে ব্যবহার করছেন বড় আকারের হার্ভেস্টার মেশিন। তারা আশা করছেন, এ বছর বেশ ভালো উপার্জন হবে তাদের।

সিঅং চংগাই নামের একজন কৃষক বলেন, “গেল বছর আমরা একদম সঠিক সময়ে রেপসিড রোপণ করেছিলাম। খুব সতর্কতার সঙ্গে যত্ন নিয়েছি। সব মিলিয়ে এ বছর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। প্রত্যাশা করছি, মার্কেটে গেলে ভালো দাম পাব এবার"

কৃষিখাতকে সমৃদ্ধ রাখতে বহু আগে থেকেই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে চীন, যার সুফল পাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।

প্রতিবেদন: এইচআরএস অভি

সম্পাদনা: শিহাবুর রহমান

 

২. সিঙ্গাপুরে জমজমাট চীনা স্ট্রবেরির বাজার

বিশ্বে নানা কারণে জনপ্রিয় স্ট্রবেরি। ফলের রস, জ্যাম, আইস ক্রীম, মিল্ক শেকসহ ভিন্ন ধরনের খাদ্য তৈরিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় আকর্ষণীয় এই ফল। পাশাপাশি শিল্পায়িত খাদ্য তৈরিতেও ব্যবহার হয়ে আসছে স্ট্রবেরির সুগন্ধি। তাইতো সিঙ্গাপুরের বাজারে ব্যাপকভাবে বিক্রি হচ্ছে চীনে উৎপাদিত সুস্বাদু এই ফল। মুহুর্তেই চীনা স্ট্রবেরি বিক্রি হওয়ায় ভীষণ খুশি বিক্রেতারা।

পূর্ব চীনের চেচিয়াং প্রদেশের স্ট্রবেরি এখন রপ্তানি করা হচ্ছে সিঙ্গাপুরে। চাহিদা বেশি থাকায় ভালো দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

আর যারা স্ট্রবেরি খেতে ভালোবাসেন তাদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে চীনা স্ট্রবেরি।

এদিকে চাষীরা বলছে, সবশেষে স্ট্রবেরির যে জাতটা বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সেই স্ট্রবেরিগুলোতে মাংস বেশি এবং স্বাদেও খুব মিষ্টি। এজন্য ক্রেতাদের কাছে এটি জনপ্রিয় ফলের একটি।

মাঠ থেকে স্ট্রবেরি সংগ্রহ ও বাছাই করার দিনেই রপ্তানির জন্য বিমানবন্দরে পাঠানো হয়ে থাকে। সতেজ ফল ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে গ্রিন চ্যানেল ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে পণ্যের শুল্ক ছাড়পত্র নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।

 

চীনের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে, এই বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের তাজা স্ট্রবেরির রপ্তানির পরিমাণ  প্রায় ৩ দশমিক ৫ টন, যা থেকে আয় হয়েছে  আয় ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

 

প্রতিবেদন : আফরিন মিম

সম্পাদনা  : এইচআরএস অভি

 

৩. নতুন জাত বাড়িয়েছে চাষাবাদের সময়সীমা

চীনের গবেষকরা সবজির এমন কিছু জাত উদ্ভাবন করেছেন  যার মাধ্যমে সময়সীমা বেড়েছে ফসল উৎপাদনের। এতে করে আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আয় উপার্জন করতে পারছেন কৃষকরা।

মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের লিন’উ কাউন্টির কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন পুষ্টিকর ফসল কচু তোলায়।

সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসেই এতদিন কচু মাঠ থেকে তুলে ফেলতেন তারা। তবে প্রযুক্তির কল্যাণে এখন সেপ্টেম্বর থেকে পরবর্তী ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত কচু তুলতে পারেন তারা। অর্থ্যাৎ আগের চেয়ে অনেকবার জমি থেকে নতুন জাতের ফসল সংগ্রহ করার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে এই কাউন্টিতে।

এজন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কৃষকরা। ভালো ফলন পাওয়ায় কচু উৎপাদনের জন্য লিন’উ কাউন্টিতে চাষের জমি ৬ হাজার হেক্টর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। 

 সব মিলিয়ে এই কাউন্টির স্থানীয় কৃষি উন্নয়নে বড় অবদান রাখছে কচু চাষ।

শুধু কচু নয়, এক সময় উৎপাদিত হওয়া গাজর অন্য সময় ফলাতে পারছেন কৃষকরা। আশা করা হচ্ছে এবছর প্রদেশের সিয়ানআন জেলায় ২৩০০ হেক্টর জমি জুড়ে চাষ করা হবে গাজর।

কৃষি প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, চাষাবাদের জমিতে প্রয়োজন মতো সামূদ্রিক বালু মেশানো হচ্ছে। এতে করে মাটিতে এসিডের ভারসাম্য বজায় রাখা যায়। সব মিলিয়ে এ ধরনের উদ্যোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে গাজরের উৎপাদন।

এছাড়া বছরজুড়ে সুন্দর আবহাওয়া ও পর্যাপ্ত বৃষিপাত থাকায় এ অঞ্চলে ভালো মানের গাজর উৎপাদন করা যায়।

গাজর চাষ করে সব মিলিয়ে গড়ে কৃষকদের আয় হচ্ছে ৩০০০ ইউয়ান। এজন্য দিন দিন এই ধরনের ফসল চাষাবাদে ঝুঁকছেন স্থানীয় মানুষজন।

 

প্রতিবেদন: এইচ আর এস অভি

সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

 

 

 

এটি মূলত চায়না মিডিয়া গ্রুপ-সিএমজি বাংলার বাংলাদেশ ব্যুরোর কৃষি বিষয়ক সাপ্তাহিক রেডিও অনুষ্ঠান। যা সঞ্চালনা করছেন ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট এইচ আর এস অভি।

এ অনুষ্ঠানটি আপনারা শুনতে পাবেন বাংলাদেশের রেডিও স্টেশন রেডিও টুডেতে।

শুনতে থাকুন শেকড়ের গল্পের নিত্য নতুন পর্ব । যেখানে খুঁজে পাবেন সফলতা আর সম্ভাবনার নানা দিক। আর এভাবেই চীনা কৃষির সঙ্গে শুরু হোক আপনার দিন বদলের গল্প।

 

পরিকল্পনা ও প্রযোজনা: এইচআরএস অভি

অডিও সম্পাদনা: রফিক বিপুল 

সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী