মে ১৬: ১৫ মে বিকেলে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মহাগণভবনে সফররত ইরিত্রিয়ার প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস আফওয়ারকির সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে সি চিন পিং বলেন, চীন ইরিত্রিয়ার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য কাজ করতে ইচ্ছুক, যাতে দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া যায়।
সি চিন পিং বলেন, "প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস আফ্রিকার একজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং চীনা জনগণের একজন পুরানো বন্ধু। এই সফরে আমি আপনাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। চীন ও ইরিত্রিয়ার মধ্যে গভীর ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব রয়েছে। ইরিত্রিয়ার স্বাধীনতার বার্ষিকীতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। এ বছরের ২৪ মে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩০তম বার্ষিকী উদযাপন করব। এটিকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আরও উন্নয়নের একটি সুযোগ হিসাবে নিতে হবে।"
সি চিন পিং উল্লেখ করেন যে, বিগত ৩০ বছরে চীন ও ইরিত্রিয়া সবসময় একে অপরকে বিশ্বাস ও সমর্থন করে আসছে। চীন একটি কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দেখে এবং এর উন্নয়নের চেষ্টা করে। চীন হল ইরিত্রিয়ার একটি নির্ভরযোগ্য বন্ধু।
তিনি বলেন, "অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তায় ভরা বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির মুখে, চীন-ইরিত্রিয়ার সম্পর্কের উন্নয়ন কেবল দুই দেশের সাধারণ ও দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, আঞ্চলিক শান্তি ও আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা বজায় রাখার জন্যও এটি অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ।"
সি চিন পিং উল্লেখ করেন যে, পরিস্থিতি যেভাবেই গড়ে উঠুক না কেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বোঝাপড়া, সমর্থন ও সহায়তা সব সময় চীন-আফ্রিকা বন্ধুত্বের পটভূমি ও প্রধান লাইন। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আফ্রিকার উজ্জ্বল ভবিষ্যত ও সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন পরিস্থিতিতে চীন ও আফ্রিকার উচিত একসাথে অসুবিধাগুলো কাটিয়ে উঠা, সংহতি ও সহযোগিতা জোরদার করা। চীন ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, কৌশলগত পারস্পরিক বিশ্বাসকে সুসংহত করতে, আফ্রিকাকে চীনের উচ্চ-মানের উন্নয়ন এবং চীনা-শৈলীর আধুনিকীকরণের সাথে নতুন সুযোগ প্রদান করতে, গভীরতা ও দৃঢ়তায় চীন-আফ্রিকা ব্যবহারিক সহযোগিতা বাড়াতে এবং আরও নতুন ফলাফল অর্জন করতে ইচ্ছুক।
প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চীনের সাথে তার বিশেষ সম্পর্কের কথা আন্তরিকতার সাথে স্মরণ করেন এবং বলেন, ইরিত্রিয়ার জনগণ তাদের স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য চীনা জনগণের প্রদত্ত মূল্যবান আধ্যাত্মিক ও বস্তুগত সমর্থনকে কখনই ভুলবে না।
প্রেসিডেন্ট ইসাইয়াস উল্লেখ করেন যে, চীন একটি মহান দেশ। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর থেকে, একটি দরিদ্র দেশ থেকে একটি বিশ্বশক্তিতে উন্নীত হয়েছে এবং মানবজাতির শান্তি ও উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে। চীন সব সময় উচ্চ নৈতিক অবস্থান থেকে বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য চীনা সমাধানের প্রস্তাব দিয়ে আসছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার বজায় রেখেছে এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অনুপ্রাণিত করেছে। চীনের উন্নয়নকে আটকে রাখার এবং দমন করার যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার বর্তমান বিবর্তন একটি জটিল পর্যায়ে রয়েছে এবং আফ্রিকান দেশগুলো এখনও আধিপত্যবাদ এবং বিভিন্ন অন্যায় আচরণের সম্মুখীন হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশা ও বিশ্বাস করে, চীন মানব উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারে আরও বেশি অবদান রাখবে। ইরিত্রিয়া চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করতে ইচ্ছুক। ইরিত্রিয়া বিশ্বাস করে যে, দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক ইরিত্রিয়ার জাতীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন অর্জনে সহায়তা করবে।(ইয়াং/শিহাব/হাইমান)