মে ১৩: সম্প্রতি জাপানের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, সেদেশে অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে চীনের প্রতি ‘আন্তর্জাতিক নিয়ম’ মানার আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করেছে। আসলে তারা কোন ধরনের আন্তর্জাতিক নিয়মের কথা বলছে? যুক্তরাষ্ট্র এবং কয়েকটি পশ্চিমা দেশের চীনের সমালোচনা করার কী যোগ্যতা আছে? চায়না মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি) এক সম্পাদকীয়তে এসব প্রশ্ন করা হয়।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়, যখন আন্তর্জাতিক নিয়মের কথা বলা হয়, তখন বুঝতে হবে যে বিশ্বে মাত্র একটি নিয়ম আছে: জাতিসংঘ সনদের উদ্দেশ্য ও নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মৌলিক নিয়ম। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে অল্প সংখ্যক পশ্চিমা দেশের মুখে ‘জাতিসংঘ সনদ’র কথা খুব কমই শোনা যায়। তাদের বক্তৃতায় একটি শব্দ সব সময় শোনা যায়: ‘নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা’। এটি একটি অস্পষ্ট বিবৃতি, যা জাতিসংঘ সনদ, জাতিসংঘে বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দের গৃহীত ঘোষণা বা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
চীনের প্রতিনিধি একবার নিরাপত্তা পরিষদে প্রকাশ্যে প্রশ্ন করেছিলেন যে তথাকথিত ‘নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা’ কী ধরনের নিয়মের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত? ওই নিয়ম কে তৈরি করেছে? তার সাথে আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার সম্পর্কই বা কী? এখন পর্যন্ত এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা। তারা কি উত্তর দিতে ভয় পায়? নাকি তাদের কাছে উত্তর নেই?
কিছু বিশ্লেষকের মতে, তাদের এই ধারণাটিকে খুব অস্পষ্ট রাখার কারণ হল: তারা ইচ্ছামত একে ব্যবহার করতে চায়। এই ধারণাটি যৌক্তিক শোনালেও এটি আসলে জি-৭ গোষ্ঠীর পক্ষে অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। এবং তা বিশ্বব্যাপী অশান্তি এবং উপদলীয় সংঘর্ষ তৈরি করছে। এই ধরনের নিয়ম আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাধারণ স্বার্থের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রের মতো কয়েকটি দেশের স্বার্থ রক্ষা করছে।
বিশ্ববাসী দেখতে পাচ্ছেন যে তথাকথিত ‘নিয়ম-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার’ পতাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ইচ্ছামত আন্তর্জাতিক নিয়মের লঙ্ঘন এবং ভঙ্গ করছে।
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। সেখানে তারা তেল এবং খাদ্য চুরি করছে। জাপান জোর করে সমুদ্রে পারমাণবিক দূষিত জল নিঃসরণের পরিকল্পনা করছে। ইতিহাস এবং বাস্তবতা উভয়ই দেখায় যে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান এবং অন্যান্য দেশ আন্তর্জাতিক নিয়মের সবচেয়ে বড় বিঘ্নকারী।
বিশ্বব্যাপী এ নিয়ে সকলের আলোচনা করা উচিত এবং কয়েকটি পশ্চিমা দেশের এ নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই। কারা আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গ করছে? তা জানতে উপদলীয় সংঘর্ষে উস্কানিদাতা যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানকে আয়নায় নিজের চেহারা দেখা উচিত।
লিলি/এনাম/রুবি