ছাং চৌ শহর পরিদর্শন করেছেন সি চিন পিং
2023-05-12 13:23:38

দেশের সিয়োং’আন নতুন এলাকা পরিদর্শনের পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং হ্য পেই প্রদেশের ছাং চৌ শহর পরিদর্শন করেছেন।

এদিন প্রেসিডেন্ট সি প্রথমে হুয়াং হুয়া শহরের ‘শুকনো ক্ষার গম’ ক্ষেত (dry alkali wheat) পরিদর্শন করেন।

হুয়াং হুয়া শহরের ‘শুকনো ক্ষার গম’ চাষের দুই সহস্রাধিক বছরের ইতিহাস আছে। যা দেশে অনেক বিখ্যাত এক ধরনের গম। স্থানটি বো সমুদ্রের কাছে অবস্থিত। শীতকাল ও বসন্তকালে খরা বেশি হয়, বৃষ্টি কম হয়। জমিতে লবণের হার বেড়ে যায়। এমন গম সাধারণত আগের বছরের অক্টোবর মাসে চাষ করা হয়, তারপর পরের বছরের জুন মাসে তার ফলন হয়।

এই গম থেকে উত্পাদিত আটায় গমের সুগন্ধ পাওয়া যায়, যা বান, নুডল্সসহ বিভিন্ন খাবার তৈরি করায় খুব উপযোগী। ছাং চৌ শহরে এই গম চাষের আয়তন ৬৬৬ বর্গকিলোমিটার, গত বছর ‘শুকনো ক্ষার গম’ উত্পাদনের মোট পরিমাণ ২.২ লাখ টন।

এবারের পরিদর্শনে সি চিন পিং ‘শুকনো ক্ষার গম’-এর শিল্পায়নের ওপর খুব গুরুত্ব দেন।

হুয়াং হুয়া শহরে এখন আটা তৈরির প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২০টি। প্রতি বছর উত্পাদন হয় প্রায় ৫ লাখ টন। পুরো শহরে কৃষি, মজুদ, আটা উত্পাদন ও খাদ্য উত্পাদনসহ ফুল-চেইন গম শিল্প স্থাপন করা হয়েছে।

খাদ্য নিরাপত্তা হল দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। আর বীজ হল কৃষির শিল্পের ‘চিপ’। সি চিন পিং বার বার জোর দিয়ে বলেছেন যে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বীজকে নিজের হাতে ধরতে হবে।

 

দ্বিতীয় ধাপে সি চিন পিং ছাং চৌ শহরের হুয়াং হুয়া বন্দরের কয়লা বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেন।

হুয়াং হুয়া বন্দরে বহুমুখী এলাকা, কয়লা এলাকা, নদী বন্দর এলাকাসহ কয়েকটি এলাকা আছে। সি চিন পিং যে কয়লা বন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন, তা হল দেশের বৃহত্তম কয়লা বন্দর। এখানে দেশের প্রথম কয়লা সরবরাহের স্বয়ংক্রিয় উত্পাদন লাইন আছে।

হুয়াং হুয়া বন্দরটি বো সমুদ্রের কাছে অবস্থিত। ভৌগোলিক সুবিধার কারণে বন্দরটি চীনের শায়ানসি এবং ইনারমঙ্গোলিয়ার কয়লা বাইরে পাঠানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে কাছের বন্দর হয়েছে। বন্দরটি দেশের পশ্চিমাঞ্চলের কয়লা পূর্বাঞ্চলে পাঠানো এবং উত্তরাঞ্চলের কয়লা দক্ষিণাঞ্চলে পাঠানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর।

গত বছর হুয়াং হুয়া বন্দরে কয়লা এলাকার সরবরাহের পরিমাণ ছিল ২১.২ কোটি টন, যা টানা চার বছর ধরে দেশের বন্দরের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে।

 

সি চিন পিং বলেছিলেন, খাদ্যের বাটি নিজের হাতে ধরতে হয়, এর সঙ্গে তিনি জোর দিয়েও বলেছিলেন: জ্বালানির বাটিও নিজের হাতে রাখতে হবে।

এবার ছাং চৌ শহর পরিদর্শনে সি চিন পিং একদিকে গম ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন, যা খাদ্য নিরাপত্তার ওপর তাঁর গুরুত্বের বহিঃপ্রকাশ। এ ছাড়া তিনি হুয়া হুয়া বন্দরেও গিয়েছেন, এতে বোঝা যায় যে, তিনি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে খুব গুরুত্ব দেন।

সি চিন পিং বলেছিলেন, বন্দর হল মৌলিক অবকাঠামো, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।

২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে সি চিন পিং থিয়ানচিন বন্দর পরিদর্শনের সময় বলেছিলেন, বিশ্বের প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বন্দর ও সবুজ বন্দর নির্মাণ করতে হবে। যাতে যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ নির্মাণে সেবা দেওয়া যায়।

গত মাসে সি চিন পিং কুয়াংতুং প্রদেশের সুই ওয়েন বন্দর পরিদর্শনের সময় বলেছিলেন, সুই ওয়েন বন্দরকে হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরের আধুনিক যানবাহনের কেন্দ্র হিসেবে গঠন করতে হবে।

 

আর হ্য পেই প্রদেশের হুয়াং হুয়া বন্দর, যৌথভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করে।

(শুয়েই/তৌহিদ/আকাশ)