কেপটাউনে অনুষ্ঠিত প্রথম অ্যানিমেশন এক্সপো
2023-05-12 14:03:20

গত ২৭ এপ্রিল থেকে চার দিনব্যাপী অ্যানিমেশন এক্সপো দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাতে ২৫ হাজারেরও বেশি অ্যানিমেশন অনুরাগী আকৃষ্ট হয়েছেন।  মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে এবং ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় আফ্রিকান অ্যানিমেশন শিল্পও বিশাল চীনা বাজারের দিকে তাকাতে শুরু করেছে।

 

কেপ টাউন এই প্রথমবারের মতো অ্যানিমেশন প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। ২০২০ সালে এই প্রদর্শনীর আয়োজনের কথা ছিল। মহামারীর নেতিবাচক প্রভাবের কারণে প্রদর্শনীটি এখন স্থগিত করতে হয়েছিল। কেপ টাউন অ্যানিমেশন প্রদর্শনীর স্থায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যারল ওয়েভিং বলেছেন, তিন বছরের মহামারী আয়োজকদের জন্য একটি ভারী আঘাত বয়ে এনেছে।

তিনি বলেন,

 

‘মহামারী স্পষ্টতই একটি বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মহামারীর সময় অনেকেই ইচ্ছা মতো কোথাও যাতায়াত করতে পারতেন না। কিন্তু বাস্তবতা হলো লোকেরা ব্যবসা করতে চান, তারা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চান, অন্যদের সাথে দেখা করতে চান... আমরা অন্য লোকদের সাথে যোগাযোগ করতে চাই। তাই আমি মনে করি, মহামারীর প্রভাব নেতিবাচক।’

 

কিন্তু কিছু অনলাইন পরিষেবা প্রদানকারী অ্যানিমেশন অনুশীলন-কারীদের এটি একটি বিরল বিকাশের সুযোগ ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার একটি মিনিয়েচার স্টুডিওয়ের মালিক রিচার্ড কর্ডেইরো বলেছেন, তারা ব্যবহারকারীদের সৃষ্টির জন্য আবেগ সরবরাহ করেন, যাতে তারা মহামারীর ভয়ানক বিচ্ছিন্নতার সময় কম্পিউটার গেমগুলোতে খুব বেশি আসক্ত না হয়।

 

কর্ডেইরো বলেন,

 ‘যখন কোভিড-১৯ মহামারীর প্রাদুর্ভাব হয়, তখন মানুষ ঘরে থাকতে বাধ্য হন। তারা বাড়িতে ছবি আঁকা বা মডেল তৈরি শুরু করেন। ফলে আমাদের ব্যবসা আগের চেয়ে সহজ ও ভালো হয়। কারণ আরও বেশি লোকেরা অনলাইনে আরও বেশি সময় দিতে পারেন।’

 

অ্যানিমেশন প্রদর্শনীতে চীন থেকে আসা কার্টুন চিত্রগুলোও লোকেদের সমাদর পেয়েছে। আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন সংস্কৃতি একে অপরকে প্রভাবিত করছে এবং একে অপরের সাথে মিলছে।

 

কর্ডেইরো আরও বলেন,

 ‘অনেক অ্যানিমেশন শিল্পকর্ম—যেমন: বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর অনেক চরিত্র বা বিষয় ক্ষুদ্রাকৃতির মডেল আকারে প্রদর্শিত হয়েছে। ড্রাগনকে প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে চীনা সংস্কৃতিতেও তা রয়েছে। পূর্ব এশিয়ায় অ্যানিমেশনের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আমার জন্য সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ বিষয় হল: বিশ্বের পরিবর্তন হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্কৃতি এখন আর বিচ্ছিন্ন নয়, বরং তারা মিশতে শুরু করছে, যা আশ্চর্যজনক।’

 

আয়োজকদের মতে, অ্যানিমেশন প্রদর্শনীর টিকিট ভালো বিক্রির কারণে কয়েক সপ্তাহ আগে ২৫ হাজার টিকেট ইতোমধ্যেই বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। আফ্রিকার বিখ্যাত সাংস্কৃতিক শহর হিসেবে কেপ টাউন চলচ্চিত্র এবং টিভি সিরিজের শুটিং লোকেশন হয়ে উঠছে। প্রতি বছর কেপটাউনে গড়ে ১০ হাজারেরও বেশি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন স্যুট করা হয়। এছাড়া, কেপ টাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫০ শতাংশেরও বেশি গেম ডেভেলপমেন্ট স্টুডিও রয়েছে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে অ্যানিমেশন শিল্প দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কেপ টাউন অ্যানিমেশন প্রদর্শনীর আয়োজনের আদর্শ শহর হয়ে ওঠেছে। স্থানীয় ইন্টারনেট মিডিয়ার উপস্থাপক ডিজে ফ্লেসার বিশ্বাস করেন যে কেপ টাউনের অ্যানিমেশন অনুশীলনকারীরাও চীনা বাজারে একটি শক্তিশালী আগ্রহ দেখিয়েছেন।

 

তিনি বলেন,

 ‘একশ কোটি লোকসংখ্যার বিশাল বাজার চীন। আমি মনে করি, বিশাল ভোক্তা গোষ্ঠীর কারণে যে কোনো অ্যানিমেশন চীনে ভালোভাবে চালানো সম্ভব হবে। চীনে অ্যানিমেশন বই বিক্রি বিশাল একটি বাজার পাবে। আমি চীনের অ্যানিমেশন প্রদর্শনী উপভোগ করতে খুব আগ্রহী।’