সিনচিয়াং থেকে তিব্বত: আধুনিক সিনচিয়াং
2023-05-12 16:09:05


 

প্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, এ অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও তিব্বতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর তিব্বত সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিনচিয়াং নিয়ে কথা বলব।

 

আফিম যুদ্ধের পর, তত্কালীন জারবাদী রাশিয়া তার ভৌগোলিক সুবিধার সদ্ব্যবহার করে এবং মধ্য-এশিয়াকে সংযুক্ত করার পর চীনের সিনচিয়াংয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন বাড়িয়ে দেয়। ১৮৫১ সালে ‘চীন-রাশিয়া ইটা বাণিজ্যিক সনদ’ স্বাক্ষরিত হয়, এবং জারবাদী রাশিয়া একতরফাভাবে কনস্যুলেট স্থাপন ও সিনচিয়াংয়ে বাণিজ্য অব্যাহতি দেওয়ার বিশেষাধিকার লাভ করে। ১৮৬৪ সালে ‘চীন-রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের বিভাগ’ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে জারবাদী রাশিয়া চীনের  উত্তর-পশ্চিম সীমান্তের ৪ লাখ ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিজের ভুখণ্ডের সাথে সংযুক্ত করে নেয়। ১৮৭১ সালে জারবাদী রাশিয়া চীনের ইলি অঞ্চল আক্রমণ করে এবং দখল করে। ১৮৭৫ সালে জুও জুং থাংয়ের নেতৃত্বে ছিং রাজবংশের বাহিনী সিনচিয়াং পুনরুদ্ধার করে। এক বছর ৬ মাসের মধ্যে সিনচিয়াংয়ের দক্ষিণাঞ্চলও পুনরুদ্ধার হয়। ১৮৮১ সালে ‘চীন-রাশিয়া ইলি চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়। ১৮৮২ সালে ইলি আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের অধীনে ফিরে আসে। এর ফলে সিনচিয়াং পুনরায় ছিং রাজবংশের ব্যবস্থাপনায় ফিরে আসে।

 

প্রশাসনব্যবস্থা জোরদার করতে, ১৮৮৪ সালে, সিনচিয়াং প্রদেশ প্রতিষ্ঠা করে ছিং রাজবংশের সরকার। এ থেকে মূল ভূভাগের সঙ্গে সিনচিয়াংয়ের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ দিন দিন ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হতে থাকে।

 

১৯১২ সালে রিপাবলিক অফ চায়না প্রতিষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকারের অস্থায়ী সরকার সিনচিয়াংয়ের ‘সুন ফুকে’ ‘তুতু’ নামে পরিবর্তিত করে।

 

১৯৪৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর চীনের কেন্দ্রীয় গণসরকারের অনুমোদনে, সিনচিয়াং গণসরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর, সমতা, ঐক্য ও পারস্পরিক সহায়তার ওপর ভিত্তি করে, একটি নতুন ধরনের জাতিগত সম্পর্ক স্থাপিত হয়। ‘চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের যৌথ ঘোষণা’-র বিধান অনুসারে, সিনচিয়াংয়ে জাতিগত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের ব্যবস্থা চালু হয়। ১৯৫৫ সালের পয়লা অক্টোবর সিনচিয়াং উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে সিনচিয়াং সমৃদ্ধির পথে যাত্রা শুরু করে।

 

ইলি জেনারেল ম্যানশন কম্পাউন্ড

জেনারেল ইলি ছিং রাজবংশ আমলে সিনচিয়াং অঞ্চলের সর্বোচ্চ সরকারী মর্যাদা ভোগ করত। জেনারেল ইলি থেকে সিনচিয়াংয়ের উত্তর ও দক্ষিণ শাসিত হতো (থিয়ানশান পর্বতমালার উত্তরে জুংগার মঙ্গোলিয়ার পূর্বের স্থানটিকে ‘চুন পু’ বলা হয়, এবং থিয়ানশান পর্বতমালার দক্ষিণাঞ্চলে ইয়ে আর ছিয়াং কুওকে ‘হুই পু’ বলা হয়)। এর মধ্যে রয়েছে বলখাশ হ্রদের পূর্ব, দক্ষিণ, ইরটিশ নদীর উপরের অংশ, থিয়ানশান পর্বতমালার উত্তর ও দক্ষিণের রাস্তা, এবং ছু নদী, তালাস নদী এবং পামিরসহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সামরিক ও রাজনৈতিক বিষয়াদি।

 

সুন্দর প্রাচীন পশ্চিম অঞ্চল

এমন একটি জায়গা যেখানে বিশ্ব সংস্কৃতি মিলিত হয়। প্রাচীনকালের ‘সি ইয়ু’ থেকে সিনচিয়াং দেশি-বিদেশি সংস্কৃতির বিনিময়ের স্থান, বিভিন্ন সংস্কৃতি এখানে মিলেমিশে একাকার হয়। এটি প্রাচীন সিল্ক রোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি  অতুলনীয় ও দুর্দান্ত প্রাচীন সিল্ক রোড সভ্যতা তৈরি করেছে। হাজার হাজার বছর ধরে, বিভিন্ন জাতি এখানে বাস করে আসছে। বিভিন্ন ধর্ম এখানে ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন সংস্কৃতি এখানে সমৃদ্ধ হয়েছে।

 

প্রিয় শ্রোতা, আমাদের হাতে আর সময় নেই। আজকে এখানেই শেষ করতে হচ্ছে। আজকের ‘সিনচিয়াং থেকে তিব্বত’ এ পর্যন্তই। তবে, আগামী সপ্তাহে আমরা আবার আপনাদের সামনে হাজির হবো সিনচিয়াং ও তিব্বতের কোনো গল্প বা তথ্যভান্ডার নিয়ে। আপনারা আমাদের লিখুন। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn  আমাদের ওয়েবসাইটেও আপনারা অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আমাদের ওয়েবসাইটের ঠিকানা:  https://bengali.cri.cn/  সবাই ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)