সম্প্রতি ষষ্ঠ ডিজিটাল চায়না সামিতের ডিজিটাল সিল্করোড শাখা ফোরাম চীনের ফুচিয়ান প্রদেশের ফুচৌ শহরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি, ডিজিটাল সিল্করোড আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রক্রিয়ায় বিদেশী পক্ষের কাউন্টারপার্ট সরকারী বিভাগ, চীনে নিযুক্ত বিদেশী দূতাবাস ও কনসুলেট, আন্তর্জাতিক সংস্থা, থিঙ্কট্যাঙ্ক, আর্থিক সংস্থা এবং দেশি-বিদেশি ডিজিটাল অর্থনীতির বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নিয়ে “ডিজিটাল সিল্করোড”-এর নতুন সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্ব ডিজিটাল প্রযুক্তি ও শিল্প উন্নয়ন গভীরভাবে সমন্বিত হয়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উচ্চমানের উন্মুক্তকরণ ত্বরান্বিত করার গুরুত্বপূর্ণ পথে পরিণত হয়েছে। ফোরামে বেশ কয়েকজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত “ডিজিটাল সিল্করোড”-এর নতুন সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বিশ্ব আদান-প্রদান ও সহযোগিতা ত্বরান্বিত করার প্রত্যাশা করেন।
“ডিজিটাল সিল্করোড”-এ হাংগেরি ও চীনের সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয়েছে। কুয়াংচৌতে দেশটির কনসল জেনারেল বলেন, দেশটির ভালো সহযোগিতার ভিত্তি ও উন্নয়ন সুপ্তশক্তি আছে। চীনের সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রত্যাশা আছে। তিনি মনে করেন, ডিজিটাল শিল্প পরিকল্পনায় দু’দেশের শক্তিশালী সামঞ্জস্যতা আছে। একটি প্রভাবশালী তথ্য প্রযুক্তি শিল্প চেইন প্রতিষ্ঠা করে “ডিজিটাল সিল্করোড” অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতার নতুন ইঞ্জিন ও শক্তিশালী চালিকাশক্তি হবার প্রত্যাশা করেন তিনি।
চীনে নিযুক্ত সার্বিয়া দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর বলেন, “ডিজিটাল সিল্করোড” হচ্ছে “এক অঞ্চল এক পথ” উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই কাঠামোয় সার্বিয়া ও চীন স্মার্টসিটি, অনলাইন শিক্ষাদান, বিগ ডাটা, ইন্টারনেট অব থিংস, ক্লাউড অবকাঠামো ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্ল্যাটফর্মসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক সহযোগিতা চালাচ্ছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সার্বিয়ার ডিজিটাল রূপান্তর দ্রুত হয়ে পশ্চিম বলকান অঞ্চল এমনকি বিশ্ব মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারীতে পরিণত হয়েছে। তিনি আশা করেন, দেশটির আইটি শিল্পের প্রতি চীনা প্রতিষ্ঠানের উপলব্ধি আরও বাড়িয়ে সহযোগিতামূলক সুযোগ খুঁজে বের করে অব্যাহতভাবে ডিজিটাইজেশনের ক্ষেত্রে দু’দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও সমৃদ্ধ হবে।
অনলাইনে ভাষণ দেয়ার সময় চীনে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক মিনিস্টার বলেন, উন্মুক্ত, শেয়ারিং ও উদ্ভাবন হলো ডিজিটাইজেশন উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার চালিকাশক্তি। বিভিন্ন দেশের উচিত উন্মুক্ত ও সৃজনশীল পরিবেশগত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে উন্মুক্ত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিল্প সহযোগিতা করে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা।
তিনি জানান, দক্ষিণ কোরিয়া সব সময় ডিজিটাল রূপান্তরে পিছিয়ে পড়ে অঞ্চলের ওপর গুরুত্ব দেয়। একই সময় চীন বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলির ডিজিটাল রূপান্তরকে সমর্থন করে। দু’দেশের উচিত উন্মুক্ত সৃজনশীল পরিবেশগত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে অভিন্ন চেষ্টা চালিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগণকে ডিজিটাল রূপান্তর থেকে লাভবান হতে সাহায্য করা।
চলতি বছর “এক অঞ্চল এক পথ” উদ্যোগ উত্থাপনের দশম বার্ষিকী। পাশাপাশি, “ডিজিটাল সিল্করোড” উদ্যোগ উত্থাপনের ষষ্ঠ বার্ষিকী। “ডিজিটাল সিল্করোড” নির্মাণে স্পষ্ট ফলাফল অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে চীন ১৬টি দেশের সঙ্গে “ডিজিটাল সিল্করোড” নির্মাণ সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক সমঝোতা স্মারক সই করেছে এবং ৭টি দেশের সঙ্গে “এক অঞ্চল এক পথ” ডিজিটাল অর্থনীতি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। নীতিগত যোগাযোগ ধারাবাহিকভাবে গভীরতর হবার সঙ্গে সঙ্গে উন্নয়ন অব্যাহতভাবে ঐকমত্য গড়ে তোলা হয়।
চীনের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিটির উদ্ভাবন ও উচ্চ প্রযুক্তি উন্নয়ন বিভাগের দায়িত্বশীল ব্যক্তি সুন ওয়ে বলেন, চীন আরও ইতিবাচক, উন্মুক্ত ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা নিয়ে ডিজিটাল অর্থনীতির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ত্বরান্বিত করবে, “ডিজিটাল সিল্করোড” নির্মাণ আরও গভীর ও ত্বরান্বিত করবে। যাতে আরও বেশি দেশ ও জনগণ ডিজিটাল লভ্যাংশ ভাগ করে নিতে পারে। (প্রেমা/এনাম)