বিগত চার বছরে, ছু ওয়েন ওয়েন, সিনচিয়াংয়ের ২৭ বছর বয়সী মেয়ে, প্রকৃতিপ্রেমিক থেকে প্রকৃতিরক্ষাকারীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। গত বছরের ১১ অক্টোবর, ছু ওয়েন ওয়েন চীনা তরুণ সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে, “জীব-বৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশনের” পঞ্চদশ সম্মেলনের (কপ-১৫) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন এবং প্রকৃতি সুরক্ষার প্রতি চীনা তরুণ সমাজের ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করেছেন।
শিনচিয়াং আলতাই প্রকৃতি সংরক্ষণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে, ছু ওয়েন ওয়েন সক্রিয়ভাবে মঙ্গোলিয়া ও শিনচিয়াং-এ বিভার সুরক্ষায় নিযুক্ত আছেন। বন্ধুরা তাকে আদর করে ডাকে "বিভার কুমারী"।
ছু ওয়েন ওয়েন ১৯৯৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বন্যপ্রাণী সংরক্ষক। ছু ওয়েন ওয়েন-এর বাবা শানতুং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের শিনচিয়াং উন্নয়নে সাহায্যকারী স্নাতকোত্তরদের একজন। তিনি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্যপ্রাণী সুরক্ষার ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ছু ওয়েন ওয়েন-এর বয়স যখন দুই বছর, তখন তার বাবা তাকে বনে নিয়ে যান। তিনি যখন সাত বছর বয়সী, তখন তিনি তার বাবার দলের সাথে বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক কাজে অংশ নিতে শুরু করেন। এইভাবে, বন্য প্রাণীদের প্রতি ছু ওয়েন ওয়েনের ভালোবাসা গড়ে ওঠে।
২০১৭ সালে, বেইজিং ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি থেকে বন্যপ্রাণী সুরক্ষা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নেওয়ার পর, ছু ওয়েন ওয়েন শিনচিয়াংয়ে ফিরে যান ও আলতাই আঞ্চলিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। "বিভার ক্যান্টিন", "মেংশিন বিভার গার্ডিয়ান" এবং বন্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রের মতো জনকল্যাণমূলক প্রকল্পও চালু করেন তিনি। ছু ওয়েন ওয়েন-এর প্রচেষ্টায়, মেংশিন বিভারের সংখ্যা ১৬২ থেকে ১৯০-তে উন্নীত হয়েছে, যা জাতীয় প্রথম-শ্রেণীর সুরক্ষিত প্রাণীর সংখ্যার ২০ শতাংশ বৃদ্ধির একটি রেকর্ড।
ছু ওয়েন ওয়েন বলেন, তাদের অর্জন দলীয় প্রচেষ্টার ফল। সবার ভালোবাসা ও ত্যাগের কারণে তাঁরা এতোদূর এগিয়ে যেতে পেরেছেন। ছু ওয়েন ওয়েন বলেন, তাঁর দলটি আলতাই অঞ্চলের প্রকৃতি সংরক্ষণ সমিতির ১০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত। তাদের গড় বয়স ৩০ বছরের কম এবং তারা সারা দেশ থেকে এসেছেন। তাদের মধ্যে পেশাদার গবেষক ও সাধারণ প্রকৃতিপ্রেমী রয়েছেন। প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার কারণে তারা ছু ওয়েন ওয়েন-এর চারপাশে জড়ো হন এবং একে একে বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেন। তাদের প্রচেষ্টা সারা দেশের নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
বিগত ৪ বছরে, ১০ লক্ষাধিক নেটিজেন ছু ওয়েন ওয়েন-এ দলের আয়োজিত বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে একত্রিত হন এবং ৪.১ লাখ উইলোর চারা রোপণ করেন। তাঁরা সবাই মিলে একটি পেশাদার বন্যপ্রাণী উদ্ধারকেন্দ্রও তৈরি করেন।
ছু ওয়েন ওয়েন-এর দলটি ক্রমাগত উন্নতি করছে। এ কারণে দলের সদস্যদের ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী ছু। আজ, ছু ওয়েন ওয়ে-এর নেতৃত্বে আলতাই প্রকৃতি সংরক্ষণ সমিতির লক্ষ্য আরও পরিষ্কার। দলটির কাজ প্রকৃতি সংরক্ষণমূলক কাজে অংশগ্রহণকে সহজতর করা। এ লক্ষ্যে দলটি একটি পাঁচ বছরের উন্নয়ন-পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। এতে আরও বেশি মানুষ টাকা দিয়ে, সময় দিয়ে, বা পরিশ্রম দিয়ে প্রকৃতি সুরক্ষাকাজে যোগ দিতে পারবে। চীনে প্রকৃতি সুরক্ষা খাতে তাদের সংস্থাটি ইতোমধ্যেই যথেষ্ট প্রভাবশালী প্রমাণিত হয়েছে। (ইয়াং/আলিম/ছাই)