শাকসবজি চাষ করে সমৃদ্ধি অর্জন
2023-05-05 21:26:33

 

সম্প্রতি চীনের হুবেই প্রদেশের সিয়াও ছাং জেলার ই জি গ্রামে সাদা রঙের বিশাল গ্রীনহাউস ও বিস্তৃত রাইসরিষা ফুলের সংমিশ্রণে তৈরি হয়েছে অসাধারণ সুন্দর দৃশ্য। দেখতে মনে হয় যেন মাটিতে একটি হলুদ ও সাদা রঙের কার্পেট বিছানো হয়েছে। তাতে চীনের বসন্তের আমেজ বিরাজ করছে।

 


সেখানকার অধিবাসীদের মাতৃ-নদী হুয়ান হ্য ই জি গ্রাম দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এখানে শাকসবজি চাষের জন্য পানি সম্পদের সুবিধা দেখা রয়েছে। এ গ্রাম সিয়াও ছাং জেলার কাছে অবস্থিত। জেলার জনসংখ্যা সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে ই জি গ্রামে ভালো শাকসবজি উৎপাদিত হয়। পানি ও মাটি সম্পদের কারণে ই জি গ্রাম শাকসবজির জন্য বিখ্যাত গ্রামে পরিণত হয়েছে। গ্রামটির রয়েছে শাকসবজি চাষের সুদীর্ঘ ইতিহাস।

 

ই জি গ্রামের সিপিসি সম্পাদক নিং জি ছুং বলেন, গ্রামের কমিটি গ্রামবাসীদের নিয়ে আলোচনায় বসেছে এবং প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে তাদের মতামত সংগ্রহ করেছে। জনসাধারণের ৯০টিরও বেশি অভিমত সংগ্রহ করা হয়েছে। শিল্প উন্নয়ন ও জীবন-যাত্রার সমৃদ্ধি অর্জনের ভিত্তিতে শাকসবজি শিল্পের প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থা সুবিন্যাস করা হয়েছে গ্রামটিতে। গ্রামে এ পর্যন্ত ২.১ কিলোমিটার শিল্প-পথ এবং সরঞ্জাম ব্যবহারের জন্য বিশেষ ২৫৬০ মিটার পথ নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া, সেচ এবং নর্দমাসহ নানা সুবিধা সৃষ্টি করেছে এ গ্রাম, যাতে শাকসবজি উৎপাদনের পরিবেশ উন্নত করা যায়।

 

নিং ই হ্য গ্রামে কয়েক দশক ধরে শাকসবজি চাষ করছেন। শিল্প-পথ নির্মিত হওয়ার পর শাকসবজি তোলা ও পরিবহন আরও সুবিধাজনক হয়েছে। যা বিক্রির জন্য সহায়ক হয়েছে। আগে ক্ষেতে পানি দেওয়া হতো কুপ থেকে পানি এনে। তাতে ঝামেলার পাশাপাশি পানির অপচয় হতো। বর্তমানে সেচ ব্যবস্থা স্থাপনের পর পানি সাশ্রয় করার পাশাপাশি শাকসবজির ব্যাপক উৎপাদনের জন্য অনুকূল হয়েছে।

 

হান হুই মিং আগে নিজে শাকসবজি চাষ করতেন। বর্তমানে তিনি হচ্ছেন সিয়াও ছাং জেলার জি মাও সমবায়ের একজন সদস্য। তিনি বলেন, গ্রামে ব্যাপকভাবে শিল্পের প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। এ নিয়ে তিনি খুব আগ্রহী। তাই আরও ৬ জন গ্রামবাসীর সঙ্গে মিলে এ সমবায় গঠন করেছেন তিনি। দু’তলার ধাতু দিয়ে গ্রীনহাউস গঠনের মাধ্যমে তিনি চাষের আকার বৃদ্ধি করেছেন। যার ফলে আগের চেয়ে তার উপার্জন দ্বিগুণ হয়েছে। তাঁর চাষ করা শাকসবজি জেলায়, এমনকি সিয়াও কান এবং উ হান সহ নানা শহরের বাজারে পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।

 

বর্তমানে ই জি গ্রামের ৭০ শতাংশ চাষি নিজেদের চাষবাস, মাটি ভাড়া দেয়া এবং বিভিন্ন ঘাঁটিতে কাজ করাসহ তিনটি পদ্ধতিতে বাড়ির কাছে কর্মসংস্থানের সুযোগ ভোগ করতে পারছেন। বর্তমানে ই জি গ্রামে রয়েছে ১৩০০টিরও বেশি শাকসবজির গ্রীনহাউস, যার মানে প্রতি পরিবারের জন্য গড়ে চারটি। গ্রামে শাকসবজির বার্ষিক বিক্রির পরিমাণ ১ কোটি ৩০ লাখ ইউয়ানের বেশি।

 

হুয়া ইউয়ান উপজেলার উপপ্রধান উ চিয়ান পিং বলেন, ই জি গ্রাম দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করেছে, যা থেকে আমরা অভিজ্ঞতা গ্রহণ করতে পারি। কিভাবে ছোট একটি বিষয়কে কাজে লাগিয়ে গ্রামের বড় পরিবর্তন ঘটানো যায়? আমাদের উচিত সচেতনতা বাড়িয়ে সঠিক দিকনির্দেশনায় নানা কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দলীয় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন গ্রাম গঠন করা।

 

(রুবি/এনাম/শিশির)