শ্রমিক দিবসে সাধারণ শ্রমিকের কথা
2023-04-30 16:27:33

আবারও বার্ষিক শ্রম দিবস এসেছে। এমন দিনে মনে সবসময় কৃতজ্ঞ বোধ করি। আমরা এখন যে সুখী ও সুন্দর জীবন কাটাতে পারি, এর পিছনে অসংখ্য শ্রমিকের পরিশ্রম রয়েছে। আবারও আমরা নিজেকেও স্বীকৃতি দিতে পারি, আমরাও সমাজের শ্রমিকের অন্যতম একজন, আমরা নিজের জীবন এবং সমাজের উন্নয়নে নিজের চেষ্টাও রেখেছি।

আসলে চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে, সি চিন পিং সবসময় সাধারণ শ্রমিকের কথা মনে রাখেন। তিনি কখনই শ্রমিকের কথা ভুলে যান নি এবং সবসময় সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে থাকেন।

২০১৯ সালের গ্রীষ্মকালে, চীনের কান সু প্রদেশের বা বু শা বন খামারে একজন বিশেষ অতিথি দেখা যায়। তিনি হলেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। বন খামারের কর্মীদের কাজ করা দেখে তিনিও একটি রেক নিয়ে মরুকরণের কাজে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বালি ক্ষেতে দুই মিটার লম্বা একটি খাদ খনন করেন। তাঁর কাজ দেখে বন খামারের কর্মীরা সবাই বলে, প্রেসিডেন্টের কাজ দেখে বোঝা যায়- তিনি কৃষিকাজ খুব ভালোভাবে জানেন।

প্রেসিডেন্ট সি শ্রমিকদের খুব যত্ন নেন। ২০১৩ সালের বসন্ত উত্সবের আগে, তিনি বেইজিংয়ের মেট্রো লাইন ৮-এর নির্মাণ স্থানে গিয়ে শ্রমিকদের দেখেন। তিনি কর্মী ফান ইয়ুংকে জিজ্ঞেস করেন, বেইজিংয়ে কতদিন আছেন, আয় কেমন, পরিবারের জীবন কেমন। কর্মী ফান ইয়ুং-এর স্ত্রী ও মেয়ে বসন্ত উত্সবে পারিবারিক মিলনের জন্য বেইজিংয়ে এসেছেন এই কথা শুনে প্রেসিডেন্ট সি ফান ইয়ুংকে বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেইজিংয়ে ঘুরে যান। আর বিশেষ করে ফান ইয়ুং-এর ৬ বছর বয়সী মেয়েকে একটি গোলাপি রং-এর স্কুলব্যাগ দিয়েছেন।

স্কুলব্যাগ ছোট হলেও তা প্রকাশ করে সাধারণ শ্রমিকের প্রতি প্রেসিডেন্ট সি’র যত্ন।

চার বছর আগের বসন্ত উত্সবের সময় বেইজিংয়ের ছিয়ান মেন এলাকার ডেলিভারি স্টেশনে ডেলিভারি কর্মীদের খোঁজ খবর নিতে গিয়েছিলেন সি চিন পিং।

তখন সি চিন পিং বলেন, সবাই লোকজনকে সময়মত পার্সেল পৌঁছে দেন। উত্সব হলেও ছুটি নেন না। ডেলিভারি কর্মীর কাজ অনেক কঠিন, অনেক আগে উঠতে হয়, আর গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়। বৃষ্টি, বাতাস, কিছুই থামাতে পারে না। তারা যেন পরিশ্রমী মৌমাছির মত, তারাই সবচেয়ে পরিশ্রমী শ্রমিক। সবার জীবনকে আরো সুবিধাজনক করে তুলেছে।

সংগ্রাম হল যুগের এগিয়ে যাওয়ার শক্তি। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ছাও চৌ শহরের সান হুয়া গ্রুপ কোম্পানি পরিদর্শন করেন। তিনি গবেষণা কর্মীর খোঁজ খবর নেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন ডক্টরেট ডিগ্রি এবং দুইজন বিদেশ থেকে ফিরে এসেছেন, এ অবস্থা জেনে প্রেসিডেন্ট সি খুব খুশি হন। তিনি আরো জিজ্ঞেস করেন যে, প্রতিষ্ঠানে এখন কত প্রকৌশলী আছে? বাজারে পণ্যের হার কেমন? তিনি বলেন, নিজস্ব উদ্ভাবন করা বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, শিল্পের রূপান্তর, অর্থনীতির উচ্চ মানের উন্নয়ন, সবই নিজস্ব উদ্ভাবনের ওপর নির্ভর করতে হয়।

২০২১ সালের এপ্রিল মাসে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং কুয়াং সি চুয়াং স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কুই লি শহরের মাও চু শান গ্রাম পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় আঙুর চাষ শিল্প পরিদর্শন করেন। শিল্পের সমৃদ্ধ উন্নয়নে বিজ্ঞান কর্মী বড় ভূমিকা পালন করেছে, তা জেনে তিনি বলেন, যখন তিনি ফু চিয়ান প্রদেশে কাজ করছিলেন, তখন তিনি বিজ্ঞান কর্মীদের গ্রামে পাঠানোর কাজ করেছিলেন। এখন সারা দেশে এমন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। কৃষিবিজ্ঞান কর্মীর উচিত তৃণমূল পর্যায়ের গ্রামে যাওয়া, কৃষকের জন্য বিস্তারিতভাবে কাজ করা।

গৌরব শ্রমিকের, সুখী জীবনও শ্রমিকের। সাধারণ শ্রমিকরা সাধারণ পদে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন। চীনা শ্রমিকরা বাস্তব কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন- চীনা জনগণের মহান সৃজনশীল চেতনা ও সংগ্রামের চেতনা। শ্রম দিবসে সারা বিশ্বের শ্রমিকের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা।