এপ্রিল ২৬: বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরগতির পুনরুদ্ধার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মন্থর বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে, ২২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ক্রেতারা ১৩৩তম কুয়াংতুং মেলায় অংশ নেন। প্রথম পর্বশেষে, মেলায় আসা দর্শনার্থীর সংখ্যা ১.২৬১ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে, যা ইতিহাসের একটি নতুন রেকর্ড। এ সময় ১২.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানিচুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের ‘ওয়েদার ভেনু’ ও ‘ব্যারোমিটার’ হিসাবে চীনের প্রথম মেলা ‘কুয়াংতুং মেলা’ হলো চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের কাঠামো বোঝার একটি জানালা। বর্তমানে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য স্থিতিশীল আছে এবং চীনের উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া থেকে বিশ্ব উপকৃত হচ্ছে ও হবে।
সম্প্রতি কুয়াংতুং মেলার মুখপাত্র স্যু পিন বলেন, এবারের কুয়াংতুং মেলা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক বাজার অন্বেষণ করতে সহায়তা করেনি, বরং বিদেশী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশীয় বাজার বিকাশে সহায়তা করেছে।
এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো একটি আমদানি প্রদর্শনী এলাকা স্থাপন করা হয়। প্রদর্শনী এলাকার আয়তন মোট ৩০ হাজার বর্গমিটার। ৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের ৫০৮টি প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেয়।
উন্নত শিল্পভিত্তি ও শিল্পশৃঙ্খল আধুনিকীকরণ, উচ্চমানের শিল্প উন্নয়নের অনিবার্য প্রবণতা এবং চীনের চতুর্দশ পাঁচসালা পরিকল্পনার আওতায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। এবারের মেলায় অনেক নেতৃস্থানীয় প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। একটি স্বাধীন, নিয়ন্ত্রণযোগ্য, নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং প্রতিযোগিতামূলক আধুনিক শিল্পব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য এই মেলার ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এবারের কুয়াংতুং মেলায় নতুনভাবে শিল্প অটোমেশন ও বুদ্ধিমান উত্পাদন, নতুন শক্তি ও বুদ্ধিমান নেটওয়ার্কযুক্ত যানবাহন এবং স্মার্ট জীবনসংশ্লিষ্ট ৭৬২টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এসব প্রতিষ্ঠান বিপুলসংখ্যক ক্রেতাকে আকর্ষণ করে। চীনের শুল্ক সাধারণ প্রসাশনের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিদ্যুতচালিত যাত্রীবাহী যান, লিথিয়াম ব্যাটারি এবং সৌর ব্যাটারি—এই ‘তিনটি নতুন’ পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির হার ছিল ৬৬.৯ শতাংশ।
বিভিন্ন মেলা আয়োজনের মাধ্যমে চীন বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে আরও বেশি উন্নয়নের সুযোগ ভাগ করে নিতে চাচ্ছে। উচ্চ মানদন্ড ও কম দামের পণ্যগুলো চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের ‘স্থিতিশীলতার’ সবচেয়ে বড় নিশ্চয়তা। জটিল বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি, বাহ্যিক চাহিদার ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা, উন্নত দেশগুলোতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্থরগতি, এবং প্রতিবেশী দেশগুলির বৈদেশিক বাণিজ্যে তুলনামূলকভাবে বড় হ্রাসের প্রেক্ষাপটে, চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যে আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ ছিল গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.৮ শতাংশ বেশি। কুয়াংতুং মেলার প্রথম পর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে বোঝা যায়, প্রদর্শক ও বিদেশী ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের বাজার সম্পর্কে আশাবাদী।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনা প্রতিনিধি ও উপমন্ত্রী ওয়াং শৌ ওয়েন সম্প্রতি বলেছেন, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিভিন্ন ধরণের ১৮৬টি প্রদর্শনীর প্রস্তাব দাখিল বা অনুমোদিত হয়েছে। বাণিজ্য মন্তণালয় ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো অব্যাহতভাবে বিভিন্ন মেলার মাধ্যমে বৈদেশিক বাণিজ্যের সুবিধা সরবরাহ করে যাবে। (ছাই/আলিম)