এপ্রিল ২৪: চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের অন্তঃদেশীয় ই-কমার্স অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভবিষ্যতে চীনের বিভিন্ন সংস্থা ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশী বাজারে বিনিয়োগে সহায়তা করবে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গতকাল (রোববার) রাষ্ট্রীয় পরিষদের তথ্য-কার্যলয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব কথা বলেন।
সম্প্রতি প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪.৮ শতাংশ বেশি। তবে বিদেশী বাজারে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু সীমাবদ্ধতা ও অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। এ সম্পর্কে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আলোচনা প্রতিনিধি ও উপ-বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং শৌ ওয়েন বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পিপলস ব্যাংক ও শুল্ক সাধারণ প্রশাসনের সঙ্গে বিভিন্ন ধারাবাহিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বৈদেশিক বাণিজ্য উন্নয়ন বেগবান করতে উদ্যোগ নেবে। তিনি আরও বলেন,
“চীনে বিভিন্ন অফলাইন মেলা পুনরুদ্ধার, এপিইসি বাণিজ্যিক ভ্রমণ কার্ড প্রক্রিয়াকরণের দক্ষতা উন্নয়ন, ও আন্তর্জাতিক রুটে যাত্রীবাহী বিমানের স্বাভাবিক চলাচল পুনরুদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়া, আমরা বিভিন্ন দেশে চীনা দূতাবাসগুলোকে বিদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সমর্থন জোরদার করার অনুরোধ জানাই। আমরা দেশ-নির্দিষ্ট বাণিজ্য নির্দেশিকাও প্রকাশ করব। অটোমোবাইল কোম্পানিগুলোকে আন্তর্জাতিক বিপণন পরিষেবাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও উন্নত করতে সহায়তা করা হবে। ব্যাংক ও বিমা সংস্থাগুলোকে পলিসি ফাইন্যান্সিং ও ক্রেডিট বর্ধিতকরণে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা হবে।”
চীন টানা ১৪ বছর ধরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকৃত পণ্যের বাজার। ওয়াং শৌ ওয়েন বলেন, চীন অব্যাহতভাবে আমদানি বৃদ্ধি করবে। তিনি আরও বলেন, চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স বাণিজ্যে আমদানির ইতিবাচক ভূমিকাকে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং অভ্যন্তরীণ প্রয়োজনীয় জ্বালানিসম্পদ পণ্য, কৃষিপণ্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি করবে।
বর্তমানে গুরুতর ও জটিল বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তা সত্ত্বেও, আন্তঃসীমান্ত ই-কমার্স বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য একটি বৃদ্ধির পয়েন্ট হয়ে উঠছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের পরিচালক লি সিং ছিয়ান বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন দেশ ব্যাপকভাবে অন্তঃদেশীয় ই-কমার্স উন্নত করছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ‘বি টু সি’ অন্তঃদেশীয় ই-কমার্স ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির ধারা বজায় রাখবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স দ্রুত উন্নয়নের গতি ধরে রেখেছে। পাঁচ বছরের মধ্যে যা বেড়েছে ১০ গুণ। এ সম্পর্কে লি বলেন,
“আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স মেধাস্বত্ব সুরক্ষা নির্দেশিকা প্রবর্তন ত্বরান্বিত করতে হবে। আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যযুক্ত মার্কেটের মেধাস্বত্ব পরিস্থিতি বুঝাতে হবে। আন্তঃদেশীয় ই-কমার্সের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অবশ্যই মেধাস্বত্ব রক্ষায় একটি উদাহরণ স্থাপন করতে হবে এবং নকল পণ্যের অবসান ঘটাতে হবে। চীনের আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও প্রতিষ্ঠানগুলো ‘সত্য, চমৎকার ও সুন্দর’ পণ্যগুলোর ঘাঁটি হয়ে উঠুক। পাশাপাশি, আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও আন্তঃদেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত আরও উন্নত হতে দিতে হবে, যাতে আরও বেশি ভোক্তা, বিশেষ করে তরুণ ভোক্তাদের আকর্ষণ করা এবং বিশ্বব্যাপী ভোক্তাদের বৈধ অধিকার ও স্বার্থ সম্পূর্ণরূপে রক্ষা করা যায়।” (ছাই/আলিম)